অগ্রসর রিপোর্ট : করোনা ভাইরাসের যে ধরনটি ইতোমধ্যেই চীনে ৪১ জনের প্রাণ কেড়ে নিয়েছে সেটি খুবই পরিচিত ও ভীতিকর বলে চিকিৎসকরা উল্লেখ করছেন।
চিন প্রশাসন হুবেই প্রদেশের উহানসহ আরও মোট ১৩টি শহরের প্রবেশদ্বার কার্যত ‘তালাবন্ধ’ করে দিয়েছে । কারণ একটাই, মারণ ভাইরাসটি শ্বাস-প্রশ্বাসের মাধ্যমে ছড়ায়। ফলে যে কোনও ধরনের জমায়েতেই নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে প্রশাসন। ২৫ জানুয়ারি, শনিবার চিনা নববর্ষের অনুষ্ঠান তাই বন্ধের মুখে। চিনের ভারতীয় দূতাবাসের পক্ষ থেকে আজ জানানো হয়েছে, এ বছর ২৬ জানুয়ারি প্রজাতন্ত্র দিবসের অনুষ্ঠান পালন করা হবে না বেজিংয়ের দূতাবাসে। সোশ্যাল মিডিয়ায় জানানো হয়েছে, ‘‘পরিস্থিতির দিকে নজর রেখে এই সিদ্ধান্ত। চিন সরকার যে কোনও অনুষ্ঠান, জনসমাবেশ বাতিল করার কথা বলছে। তাই এই সিদ্ধান্ত।’’
করোনা ভাইরাস সংক্রমণ রুখতে শুক্রবার মোট ১৩টি শহরের পরিবহণ ব্যবস্থা সম্পূর্ণ বন্ধ করে দিল বেজিং সরকার। ‘শহরবন্দি’ কমপক্ষে ৪ কোটি ১০ লক্ষ বাসিন্দা। প্রতিদিন লাফিয়ে বাড়ছে সংক্রমিতের সংখ্যা। এ পর্যন্ত সাড়ে আটশো জনের আক্রান্ত হওয়ার খবর মিলেছে। মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪১। ফ্রান্স জানিয়েছে, সে দেশে দু’জনের দেহে এই ভাইরাস মিলেছে। অর্থাৎ সংক্রমণ ছড়াল ইউরোপেও।
এত দিন পর্যন্ত হুবেই থেকেই শুধু মৃত্যুর খবর মিলছিল। বৃহস্পতিবার প্রথম হেবেই থেকে মৃত্যুর খবর মেলে। উত্তর-পূর্ব হেলওংজিয়াং প্রদেশেও এক জন মারা গিয়েছেন। সংক্রমিত অঞ্চলগুলো থেকে যাঁরা ফিরছেন, বেজিং, সাংহাই প্রশাসন তাঁদের ১৪ দিন বাড়িতেই ‘ইনকিউবেশন পিরিয়ড’-এ থাকতে বলছেন। রোগ সংক্রমণ আটকাতে এই নির্দেশ।
চিকিৎসা বিজ্ঞানীরা এ ভাইরাসের নাম দিয়েছেন ‘2019-nCoV-Corona (২০১৯-এনসিওভি-করোনা)’। এই ভাইরাসটি প্যাথোজেন পরিবারের। যার কারণে এর আগে সার্স ও মার্স ভাইরাসের সংক্রমণ হয়েছিল।
সার্সে আক্রান্তদের ৯% এবং মার্সে আক্রান্ত ব্যক্তিদের ৩৫% মারা গেছেন।
হঠাৎ এই নতুন ভাইরাসটি কোত্থেকে এলো এবং এটা কতোটা ভয়াবহ?
বিশেষজ্ঞদের ধারণা, যে ধরনের করোনা ভাইরাস থেকে সার্স ও মার্স ভাইরাসের জন্ম হয়েছিল এবং এখন নতুন করে যে ভাইরাসের প্রকোপ দেখা দিয়েছে সেগুলোর কোনটির উৎপত্তি মানুষ থেকে হয়নি। বরং এসবের জন্ম হয়েছে প্রাণী থেকে।
অনেক প্রাণীই তাদের শরীরে বিপদজনক ভাইরাস বহন করে কিন্তু আমাদের সৌভাগ্য যে এসব ভাইরাস এক লাফে মানবদেহে চলে আসতে পারে না।
বিশেষজ্ঞদের মতে, যেহেতু রোগটি সংক্রমিত হয়, তাই সবারই সতর্কতামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা উচিত। বিশেষ করে, হাঁচি-কাশির সময় রুমাল-টিস্যু-গামছা দিয়ে নাক-মুখ ঢেকে নেয়া। হাঁচি-কাশিরত ব্যক্তি থেকে নিরাপদ দূরত্বে অবস্থান করা। প্রয়োজনে মাস্ক ব্যবহার করা। বারবার দুই হাত সাবান-পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলা। সব ধরনের ফলমূল ভালো করে ধুয়ে খাওয়া