অগ্রসর রিপোর্ট : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আশা প্রকাশ করে বলেছেন, বেগম রোকেয়ার কর্মে ও আদর্শে উজ্জীবিত হয়ে নারীরা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে এগিয়ে যাবেন। তিনি বলেন, ‘নারী-পুরুষের সমতাভিত্তিক সমাজ বিনির্মাণে বাংলাদেশ আজ বিশ্বে উন্নয়নের রোল মডেল। আমি আশা করি, বেগম রোকেয়ার কর্মে ও আদর্শে উজ্জীবিত হয়ে আজকের নারীরা জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে এগিয়ে যাবেন।’
আগামীকাল বেগম রোকেয়া দিবস উপলক্ষে আজ রোববার দেয়া এক বাণীতে প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘বর্তমান সরকার নারীকে দক্ষ জনশক্তিতে রূপান্তরের জন্য জাতীয় কৌশল, নীতি ও পরিকল্পনা গ্রহণের পাশাপাশি আন্তর্জাতিক সনদ ও উন্নয়ন এজেন্ডা অনুযায়ী বিভিন্ন কার্যক্রম বাস্তবায়ন করছে।’
তিনি বলেন, ‘আমরা কর্মজীবী নারীদের জন্য হোস্টেল সুবিধা, আয়বর্ধক প্রশিক্ষণ, ডে-কেয়ার সুবিধার পাশাপাশি দুস্থ নারীদের খাদ্যনিরাপত্তা নিশ্চিতকরণে ভিজিডি, মাতৃত্বকালীন ভাতা, ল্যাকটেটিং মা ভাতা চালু করেছি।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘নারী ও শিশু পাচার প্রতিরোধ, আইনি সহায়তা প্রদান, বাল্যবিবাহ প্রতিরোধ এবং কিশোর-কিশোরী ক্লাবের মাধ্যমে নারীর ক্ষমতায়নে ব্যাপক কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়েছে। অর্থনৈতিক মুক্তির জন্য ফ্রিল্যান্সিং এবং নারী উদ্যোক্তা উন্নয়ন কার্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছে।’
নিজেদের মেধা ও কর্মের মাধ্যমে নারী উন্নয়নে অবদান রাখায় যারা ‘রোকেয়া পদক ২০১৯’ লাভ করেছেন তাদের আন্তরিক অভিনন্দন জানিয়ে তিনি বলেন, ‘উন্নয়নের মূল ¯্রােতধারায় নারীর অংশগ্রহণের ফলেই বাংলাদেশ আজ নিম্ন-মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত হয়েছে।’ শেখ হাসিনা বলেন, ‘সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭২ সালে বাংলাদেশের সংবিধানে নারীর সমঅধিকার নিশ্চিত করেন। বাংলাদেশের নারী-পুরুষ আজ দেশের উন্নয়নে একসঙ্গে কাজ করার জন্য অঙ্গীকারাবদ্ধ।’
নারীর ক্ষমতায়নে বাংলাদেশ এশিয়ার দেশগুলির শীর্ষে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘রাজনীতি, অর্থনীতি, পররাষ্ট্রনীতি, আইন প্রণয়ন, নীতি নির্ধারণ, প্রশাসন, আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর উচ্চ পর্যায়, সাংবাদিকতা, তথ্য-প্রযুক্তি, শিল্প-সাহিত্য-সংস্কৃতি এবং খেলাধুলাসহ পেশাভিত্তিক সকল স্তরে আজ নারীদের গর্বিত পদচারণা। এভারেস্ট বিজয় থেকে শুরু করে মানবাধিকার রক্ষা এবং জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা মিশনের কর্মকান্ডে নারীরা বলিষ্ঠ ভূমিকা রাখছেন। আমরা অর্জন করেছি আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি ও সম্মাননা। ’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘সকলের জন্য শিক্ষা’ চিন্তার রূপায়নে কেবল মুসলমান সমাজে নয়, সারা ভারতীয় উপমহাদেশে বেগম রোকেয়া সার্থক সামাজিক আন্দোলনের দিশারি। উনিশ শতকের রক্ষণশীল ও কুসংস্কারাচ্ছন্ন সমাজব্যবস্থায় মুসলিম নারীসমাজে শিক্ষা বিস্তার ও সভ্যতার আলোয় উদ্ভাসিত করার স্বপ্ন দেখেছিলেন নারী জাগরণের পথিকৃত বেগম রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেন।’
বেগম রোকেয়ার আদর্শ, সাহস এবং কর্মময় জীবন নারীসমাজের এক অন্তহীন প্রেরণার উৎস উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘ব্যক্তিগত উদ্যোগে তিনি নারীদের স্বাবলম্বী করে গড়ে তোলার জন্য পরিকাঠামো স্থাপন করেছিলেন। জনসচেতনতা তৈরির জন্য হাতে তুলে নিয়েছিলেন কলম। তাঁর প্রবন্ধ, গল্প ও উপন্যাসের মধ্য দিয়ে নারীশিক্ষার প্রয়োজনীয়তা এবং নারী-পুরুষের সমতাভিত্তিক সমাজ বিনির্মাণের কথা উঠে এসেছে।’
দিবসটি উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী বেগম রোকেয়ার স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা এবং সকল নারীকে শুভেচ্ছা জানান।
বাণীতে প্রধানমন্ত্রী মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে বেগম রোকেয়া দিবস পালন ও বেগম রোকেয়া পদক প্রদান করা হচ্ছে জেনে আনন্দ প্রকাশ এবং দিবস উপলক্ষে গৃহীত সকল কর্মসূচি ও বেগম রোকেয়া পদক প্রদান অনুষ্ঠানের সার্বিক সাফল্য কামনা করেন।