বরিশাল প্রতিনিধি- টানা বৃষ্টি ও অস্বাভাবিক জোয়ারে দক্ষিণাঞ্চলে বিশেষ করে বরিশাল জেলায় আমন ধানসহ বিভিন্ন শাকসবজির ক্ষেত ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এর প্রভাব পড়েছে সবজি বাজারে। বর্তমানে জেলার বিভিন্ন হাটবাজারে চড়া দামে শাকসবজি বিক্রি হচ্ছে। প্রকার ভেদে কোনো কোনো সবজির দাম কেজি প্রতি ১০-১৫ টাকা বেড়েছে। এতে সীমিত আয়ের ক্রেতারা বিপাকে পড়েছেন। পরিবারের দৈনন্দিন চাহিদা মেটাতে তাদের হিমশিম খেতে হচ্ছে। বরিশাল জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের তথ্য অনুযায়ী, টানা বৃষ্টি ও ঘূর্ণিঝড় কোমেনের প্রভাবে জেলার বিভিন্ন নদ-নদীর পানি ৪-৬ ফুট পর্যন্ত বৃদ্ধি পায়। এ সময় জেলার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়। এতে ৫ হাজার ১০৫ হেক্টর জমির শাকসবজি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ক্ষতির পরিমাণ ৮ কোটি ২৫ লাখ ১০ হাজার টাকা। সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে কাঁকরোল, পটোল, চিচিঙ্গা, শসা, কুমড়া, পেঁপে ও বেগুন ক্ষেত।
সূত্র জানায়, দেড় মাসের টানা বৃষ্টিতে জেলার ৩০ হাজার কৃষক প্রত্যক্ষভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। তাদের আট হাজার টন সবজি ক্ষেত পচে গেছে। ক্ষতিগ্রস্ত সবজিচাষীর মধ্যে ১০ হাজার প্রান্তিক, ১২ হাজার ক্ষুদ্র ও আট হাজার মাঝারি ও সচ্ছল। বরিশাল সদর উপজেলার চরআইচা গ্রামের সবজিচাষী মো. মাহাবুব আলম জানান, অতি বৃষ্টি ও জলোচ্ছ্বাসের কারণে তার চার শতাধিক পেঁপে গাছ গোড়ায় পানি জমায় মরে গেছে। অথচ গাছগুলো ফলন্ত ছিল। এছাড়া ঝিঙে, করলা, চিচিঙ্গা এবং শসা ক্ষেত নষ্ট হয়ে গেছে। তিনি জানান, সোনালী ব্যাংক থেকে ১ লাখ টাকা ঋণ নিয়ে সবজি চাষ করেছিলাম। এখন ঋণ কীভাবে পরিশোধ করব, তা নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছি। একই অবস্থা এলাকার বেশির ভাগ সবজিচাষীর। তাদের চাষ করা সবজি পানিতে নষ্ট হয়ে গেছে।
বরিশাল সিটি মার্কেটের সবজি আড়তদার মো. হারুন মিয়া জানান, প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের কারণে উৎপাদন ব্যাহত হয়েছে। এর বিরূপ প্রভাব পড়েছে বাজারে। তিনি জানান, পাইকারিতে করলা ৪০ টাকা, বেগুন ৪৫, মিষ্টি কুমড়া ২০, জালি কুমড়া ৫০, ঢেঁড়স ৩৫, কচুরমুখি ২৫, পেঁপে ২০ ও কাঁচামরিচ ১২০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। আর খুচরা বাজরে এর সঙ্গে আরো ১০ টাকা বেশি দিয়ে ক্রেতারা কিনছেন। এ বিষয়ে বরিশাল কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপপরিচালক তুষার কান্তি সমদ্দার বলেন, এ বছর টানা দেড় মাস বৃষ্টি হয়েছে। এতে ক্ষেতে পানি জমে শাকসবজি নষ্ট হয়েছে। এ কারণে সবজির দাম গড়ে ১০-১৫ টাকা বেড়েছে।