নিজস্ব সংবাদদাতা- বাংলাদেশের অভ্যন্তরে সদ্য বিলুপ্ত ভারতীয় ছিটমহলের ৩৭ নাগরিক ভারত যেতে অনিচ্ছা প্রকাশ করেছেন। তাদের বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণে গতকাল মঙ্গলবার থেকে শুনানি শুরু হয়েছে। শুনানি চলবে আজ বুধবার পর্যন্ত। শুনানিতে অংশ নিতে দুই সদস্যের ভারতীয় প্রতিনিধি দল গতকাল সকালে লালমনিরহাটের বুড়িমারী স্থলবন্দরের জিরো পয়েন্ট দিয়ে বাংলাদেশে এসেছেন। তাদের স্বাগত জানান পাটগ্রাম উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট টিএমএ মোমিন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন কুড়িগ্রাম জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট দীপংকর রায় ও পঞ্চগড় জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট অনিমেষ রায়। ভারতীয় প্রতিনিধি দলের দুই সদস্য হলেন— পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের কোচবিহার জেলা শাসক (ডিএম) কার্যালয়ের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট রবীন্দ্রনাথ বোস ও নূর আলম।
ডিসি-ডিএম দ্বিপক্ষীয় সম্মেলনের সমন্বয়কারী লালমনিরহাট জেলা প্রশাসক হাবিবুর রহমান বলেন, দুই দিনব্যাপী এ শুনানি অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এ সময় ভারত যেতে অনিচ্ছুক ৩৭ ছিটমহলবাসীর বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। পাটগ্রাম উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট টিএমএ মোমিন বলেন, ‘সাবেক ছিটমহলের হালনাগাদ কার্যক্রমে ভারতে যাওয়ার ইচ্ছা পোষণ করেছেন ৯৭৯ জন। পক্ষান্তরে অনিচ্ছুক ছিলেন ৫৫ জন। এর মধ্যে ২০১১ ও ২০১৫ সালে নিবন্ধনই হয়নি এমন ১৮ জন রয়েছেন। বাকি ৩৭ জন নিবন্ধিত (কুড়িগ্রাম ৬ জন ও পঞ্চগড় ৩১ জন)। এদের না যাওয়ার কারণ এবং তাদের নাম-পরিচয় ২০১১ সালের জনগণনায় ও ২০১৫ সালের হালনাগাদ তালিকায় আছে কিনা, তা খতিয়ে দেখবেন ভারতীয় প্রতিনিধিরা। এ সময় বাংলাদেশের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটরা উপস্থিত থাকবেন।
কুড়িগ্রাম জেলা প্রশাসক খাঁন মোহাম্মদ নূরুল আমিন বলেন, ‘সাবেক ছিটমহলগুলোর মধ্যে কুড়িগ্রাম থেকে ছয়জন ভারতে না যাওয়ার ইচ্ছা পোষণ করে ভারতীয় কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন করার পরিপ্রেক্ষিতে এসব আবেদনকারীর শুনানির জন্য ভারতীয় দুই সদস্যের প্রতিনিধি দল এসেছে। ভারত ও বাংলাদেশী নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের সমন্বয়ে আবেদনকারীদের সরাসরি শুনানি গ্রহণ করা হবে।’ পঞ্চগড় জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সালাহ উদ্দিন ৩১ ব্যক্তির শুনানি করা হবে নিশ্চিত করে বলেন, ৩৭ ছিটবাসী ভারতে না যাওয়ার ইচ্ছাপোষণ করছেন। এ কারণে ভারতীয় ও বাংলাদেশী প্রতিনিধিদের সমন্বয়ে শুনানির উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।
লালমনিরহাট জেলা প্রশাসক হাবিবুর রহমান বলেন, লালমনিরহাটের ১৮ জন ভুয়া আবেদনকারীর আবেদন খতিয়ে দেখা হবে না বলে ডিসি-ডিএম বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়েছিল। নীলফামারীতে অবস্থিত সাবেক ছিটমহলে কোনো সমস্যা না থাকায় সেখানে অনুসন্ধান টিম যাচ্ছে না। এছাড়া পঞ্চগড়ের ৩১ জন ও কুড়িগ্রামের ছয়জনের ব্যাপারে উভয় দেশের সদস্যদের উপস্থিতিতে আবেদনকারীদের সশরীরে শুনানি করা হবে। এর পর তাদের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। তিনি আরো জানান, ভারতীয় প্রতিনিধি দল ২০ আগস্ট ভারতে ফিরে যাবে।