অগ্রসর রিপোর্ট :করোনা মহামারির কারণে বন্ধ হয়েছে স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়। ব্যাহত হচ্ছে স্বাভাবিক শিক্ষা কার্যক্রম। তবে অনলাইন, রেডিও ও সংসদ টিভির মাধ্যমে বিকল্প দূরশিক্ষণ পদ্ধতিতে ক্লাস চললেও তা কতটুকু ফলপ্রসূ তা নিয়ে চলছে গবেষণা। আর এরকমই একটি গবেষণায় দেখা গেছে, ৬৯.৫ শতাংশ শিক্ষার্থী বিকল্প পদ্ধতির শিক্ষা কার্যক্রমে অংশ নেয়নি। অর্থাৎ ৩১.৫ শতাংশ শিক্ষার্থী অনলাইন, রেডিও ও সংসদ টিভিভিত্তিক ক্লাসে অংশ নেয়।
অন্যদিকে দ্রুত সময়ের মধ্যে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেয়ার পক্ষে অধিকাংশ শিক্ষার্থী-অভিভাবক মত প্রকাশ করেছেন। ৭৫ শতাংশ শিক্ষার্থী দ্রুত স্কুল খুলে দেয়ার পক্ষে সম্মতি জানিয়েছে। আর স্বাস্থ্যবিধি মেনে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার পক্ষে মত দিয়েছেন ৭৬ শতাংশ অভিভাবক। এছাড়া ৬২ শতাংশ শিক্ষক চলমান সিলেবাস সংক্ষিপ্ত করে শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করার পরামর্শ দিয়েছেন।
মঙ্গলবার (১৯ জানুয়ারি) এডুকেশন ওয়াচের এক গবেষণা প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।
তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা এবং গণসাক্ষরতা অভিযানের নির্বাহী পরিচালক রাশেদা কে চৌধুরীর সভাপতিত্বে এক ভার্চুয়াল আলোচনা সভায় এ তথ্য তুলে ধরেন এডুকেশন ওয়াচের গবেষক ড. মোস্তাফিজুর রহমান
এ সময় উপস্থিত ছিলেন এডুকেশন ওয়াচের সদস্য মোহাম্মদ মহাসিন, অধ্যক্ষ কাজী ফারুক আহমেদ ও আহ্বায়ক আহমদ মোশতাক রাজা চৌধুরী।
সমীক্ষায় মোট ২ হাজার ৯৯২ জন উত্তরদাতার কাছ থেকে তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে। এর মধ্যে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ১ হাজার ৭০৯ জন শিক্ষার্থী (ছেলে ও মেয়ে সমসংখ্যক), ৫৭৮ জন শিক্ষক, ৫৭৬ জন অভিভাবক রয়েছেন। অন্যরা জেলা ও উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা। প্রাথমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয় নিয়ে এই সমীক্ষা করা হয়েছে।
দেশের আটটি বিভাগের আটটি জেলা ও ঢাকার দুটি সিটি করপোরেশের ২ হাজার ৯৫২ জনের ওপর এ জরিপ চালানো হয়। তার মধ্যে ১ হাজার ৭০৯ জন শিক্ষার্থী, ৫৭৮ জন শিক্ষক ও ৫৭৬ জন অভিভাবক রয়েছেন।
গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সংসদ টিভি, অনলাইন, রেডিওর শিক্ষা কার্যক্রমে অংশ নিতে ৩৭.৮ শতাংশ শিক্ষার্থী পরিবার বা অন্যদের কাছ থেকে সহায়তা পেয়েছে। যেসব শিক্ষার্থী এ প্রক্রিয়ার বাইরে রয়েছে, তাদের মধ্যে ৫৭.৯ শতাংশ ডিভাইসের অভাবে অংশগ্রহণ করতে পারছে না।
গ্রামীণ এলাকায় এ হার ৬৮ দশমিক ৯ শতাংশ। অনলাইন ক্লাস আকষর্ণীয় না হওয়ায় ১৬.৫ শতাংশ শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করে না। ৯৯.৩ শতাংশ বাড়িতে নিজে নিজে পড়ালেখা করেছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, অনলাইনের ক্লাসে মেয়েদের চেয়ে ছেলেদের অংশগ্রহণ বেশি।
গবেষণার ফলাফলের ভিত্তিতে আগামী ফেব্রুয়ারি মাস থেকে ধাপে ধাপে স্কুল খুলে দেয়াসহ ছয় দফা সুপারিশ করা হয়েছে। স্কুল খোলার ক্ষেত্রে শহরের চেয়ে গ্রামের স্কুল খুলে দেয়ার প্রতি জোর দেয়া হয়েছে।
শিক্ষার্থীদের ক্ষতি পুষিয়ে নেয়ার ব্যাপারে বলা হয়েছে, ৬২ শতাংশ শিক্ষক মনে করেন, করোনার প্রার্দুভাব কম রয়েছে এমন এলাকায় আগে স্কুল খুলে দেয়া দরকার। ৬২ শতাংশের অধিক মনে করেন পড়ালেখার ক্ষতি পুষিয়ে নিয়ে সিলেবাস সংক্ষিপ্ত করা প্রয়োজন।