বাগেরহাট জেলা প্রতিনিধি : বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জে ৫ম শ্রেণির ছাত্রের সাথে বিয়ে পড়ানোর মাত্র একদিন পরেই সন্তান প্রসব করেছেন কথিত স্ত্রী সোনিয়া আক্তার। শুক্রবার দিবাগত রাত ২টার দিকে একটি কন্যা সন্তান প্রসব করেন তিনি।
বৃহস্পতিবার রাতে নিশানবাড়িয়া ইউপি চেয়ারম্যানের বাসভবনে ডেকে ৯ মাসের অন্ত:সত্ত্বা সোনিয়াকে বিয়ে দেওয়া হয়েছিলো হাসিব মাল নামের ১২ বছরের ৫ম শ্রেণির ওই স্কুল ছাত্রের সাথে। তবে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র দিতে না পারায় বিয়ের কাবিন নামা বাতিল করা হয়েছে বলে দাবি করেছেন কাজী আলতাফ হোসেন।
এদিকে, বিয়ের একদিনের মাথায় সন্তান প্রসবের খবর ছড়িয়ে গেলে শনিবার সকাল থেকেই এলাকার লোকজন ভীড় করছেন এই নবজাতককে এক নজর দেখার জন্য। এ বিষয়ে কাজী আলতাফ হোসেন বলেন, আমার দপ্তরের ২৬ নম্বর রেজিষ্ট্রারের ৯৬ নম্বর পৃষ্ঠায় সোনিয়া ও হাসিবের বিয়ের তথ্যাদি লিপিবদ্ধ করা হয়েছিলো। প্রয়োজনীয় কাগজপত্র দিতে না পারায় ওই কাবিন নামা বাতিল করা হয়েছে।
অন্যদিকে, কথিত বর উমাজুড়ি গ্রামের আব্দুল হাকিম মালের ছেলে হাসিব এই বিয়ে ও সন্তান কোন অবস্থাতেই মেনে নিতে পারছেন না। হাসিবের দিনমজুর পিতা বলেন, আমি গরীব অসহায়। মামলা চালানোর সামর্থ নেই। তাই স্থানীয় লোকজন ও চেয়ারম্যানের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী এই বিয়ে মেনে নিয়েছি। হাকিম মাল আরো বলেন, ২ মাস পূর্বে একটি সালিশি বৈঠকে আমার কাছে ১৫ হাজার টাকা দাবি করেছিলেন ইউপি সদস্য মো. আলম মৃধা। ওই টাকা দিতে না পারায় সোনিয়াকে আমার শিশু ছেলের সাথে জোর করে বিয়ে দেওয়া হয়েছে।
উল্লেখ্য, গত বৃহস্পতিবার রাতে ৯ মাসের অন্তঃসত্ত্বা তরুণী সোনিয়াকে বিয়ে দেওয়া হয় ৫ম শ্রেণির ছাত্র হাসিবের সাথে। নিশানবাড়িয়া ইউপি চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রহিম বাচ্চুর নির্দেশে কাজী আলতাফ হোসেন বিয়ে পড়ান। একই সাথে ৫০ হাজার টাকা দেনমোহর ধার্যে কাবিন নামায়ও স্বাক্ষর নেওয়া হয় অনেকের। এ ব্যাপারে চেয়ারম্যান আব্দুর রহিম বাচ্চু বলেন, ‘ছেলে এবং মেয়ে উভয়ে খুব গরীব। তারা একে অন্যের সাথে মেলামেশা করে অন্ত:সত্ত্বা হয়ে পড়েছে তাই বিয়ে দিয়ে দেওয়া হয়েছে।
ছাত্র হাসিব মাল অভিযোগ করে বলেন, অন্যায়ভাবে অন্ত:সত্ত্বা কনেকে আমার উপর চাপানো হয়েছে।
সোনিয়ার গর্ভের সন্তানের দায় আমি কেন নেব? আমিতো লেখা পড়া করছি’। অসহায় শিশু ছাত্র হাসিব মাল এখন পালিয়ে বেড়াচ্ছে।