অগ্রসর রিপোর্ট : যুক্তরাষ্ট্রের টেলিকম প্রতিষ্ঠান ভেরিজন এবার ইয়াহুকে কিনে নিচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্রের এই দুটি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে আলোচনা চলছিল।
প্রাথমিকভাবে ইয়াহুকে কিনতে ৪৮৩ কোটি মার্কিন ডলার দিতে চেয়েছিল টেলিকম কোম্পানিটি। সম্প্রতি ইয়াহু ও ভেরিজনের মধ্যে চুক্তির সময় ইয়াহুর দাম কমিয়ে ৩৫০ কোটি মার্কিন ডলার ধরা হয়েছে।
ইয়াহুর দাম কমার কারণ কী? দুইবার ইয়াহু হ্যাকিংয়ের শিকার হয়েছে। এ ঘটনায় ব্র্যান্ড হিসেবে ইয়াহুর সুনাম ক্ষুণ্ন হয়েছে। এ সুযোগে ইয়াহুর দাম কমিয়ে দিয়েছে ভেরিজন।
গত বছরের সেপ্টেম্বরে ৫০ কোটি ইয়াহু অ্যাকাউন্টের তথ্য হ্যাক হয়েছে বলে প্রকাশ পায়। এরপর আবার ডিসেম্বরে পৃথক আরেকটি হ্যাকের ঘটনায় ইয়াহুর ১০০ কোটি অ্যাকাউন্টের তথ্য বেহাত হওয়ার ঘটনা প্রকাশ পায়।
এ ছাড়া ব্যবহারকারীদের ই-মেইলে নজরদারি করতে সরকারের গোয়েন্দাদের সাহায্যের জন্য সফটওয়্যার তৈরির অভিযোগে ইয়াহুকে সমালোচনাও সইতে হচ্ছে। এসব ঘটনার জের ধরে ইয়াহু ও ভেরিজনের মধ্যকার ৪৮৩ কোটি মার্কিন ডলারের চুক্তিটি ঝুলে ছিল। তবে ভেরিজন ইয়াহুর ১০০ কোটি ব্যবহারকারীর ওপর আস্থা হারায়নি।
ইয়াহুকে কেনা প্রসঙ্গে ভেরিজনের নির্বাহী ভাইস প্রেসিডেন্ট মারনি ওয়াডেন বলেন, আমরা সব সময় ভেবেছি, এই অধিগ্রহণের পরিকল্পনাগত অর্থ রয়েছে। আমরা সানন্দে সামনের দিকে এগিয়ে যেতে চাই, যাতে ইয়াহুর চমৎকার প্রতিভা ও সম্পদ দিয়ে আমাদের পোর্টফলিও সমৃদ্ধ করতে এবং ডিজিটাল বিজ্ঞাপনের ক্ষেত্র বাড়াতে পারি।
অবশ্য, ২০১৩ ও ২০১৪ সালের ওই হ্যাকিংয়ের ঘটনা প্রকাশ পাওয়ায় চুক্তির অর্থ কমাতে হয়েছে ইয়াহুকে। এ ছাড়া আইনি ও নিয়ন্ত্রক ঝামেলা ভাগাভাগি করতে সম্মত হয়েছে দুই প্রতিষ্ঠান। বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রের সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন ইয়াহু হ্যাকের ঘটনা দেরিতে জানানোর বিষয়টি তদন্ত করে দেখছে।
চুক্তি অনুযায়ী, ভেরিজনের অধিগ্রহণ করার পর কোনো আইনি ঝামেলা হলে তার দায় ইয়াহুর।
কেন ইয়াহুকে কিনল ভেরিজন? বর্তমান বিশ্ব ডিজিটাল বিজ্ঞাপনের। এ ক্ষেত্রে গুগল ও ফেসবুক তাড়াতাড়ি করে এগিয়ে যাচ্ছে। এ দুটি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে প্রতিযোগিতা করতে ইয়াহুর মতো একটি প্রতিষ্ঠানের প্রয়োজন ছিল ভেরিজনের। ডিজিটাল বিজ্ঞাপনে গুগল ও ফেসবুকের সঙ্গে প্রতিযোগিতা করতে ইয়াহুর দিকে হাত বাড়িয়েছে মার্কিন টেলিকম প্রতিষ্ঠানটি।
ইয়াহুর জনপ্রিয় সম্পদ বলতে এই ফ্যান্টাসি স্পোর্টস ও ইয়াহু মেইল। এ দুটি সেবা থেকে এখনো অর্থ আসছে। ২০১৫ সালে এওএলকে ৪৪০ কোটি মার্কিন ডলারে অধিগ্রহণ করে প্রতিষ্ঠানটি। হ্যাকিংয়ের ঘটনা প্রকাশ হওয়ার পর ইয়াহুর পরিচালন ব্যবসাকে অধিগ্রহণ প্রক্রিয়াটিতে কিছুটা দেরি করে ভেরিজন।