অগ্রসর রিপোর্ট :সিলেটের কুমারগাঁওয়ে বাংলাদেশ পাওয়ার গ্রিড কোম্পানির নিয়ন্ত্রণাধীন গ্রিড লাইনে আগুনের কারণে বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়া এলাকাগুলোতে বিদ্যুৎ সরবরাহ শুরু হয়েছে। ঘটনার ৩১ ঘণ্টা পর আজ বুধবার সন্ধ্যা ৬টার দিকে কিছু এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ শুরু হয়।
সিলেট পল্লী বিদ্যুৎ উন্নয়ন ও বিতরণ বিভাগের প্রধান প্রকৌশলী মোকাম্মেল হোসেন এই তথ্য জানিয়েছেন।
মোকাম্মেল হোসেন বলেন, সব এলাকায় এখনই বিদ্যুৎ সরবরাহ সম্ভব হচ্ছে না। একটি ট্রান্সফরমার দিয়ে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হচ্ছে। ফলে ধারাবাহিকভাবে কিছু এলাকা বন্ধ করে অন্য এলাকায় সরবরাহ করা হচ্ছে। দুটি ট্রান্সফরমার সক্রিয় হলে বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক হবে।
মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে সিলেট নগরীর পার্শ্ববর্তী কুমারগাঁও ১২০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রে আগুন লাগে। এতে জাতীয় গ্রিড লঅইনের দুটি ট্রান্সমিটার পুড়ে যায়। এরপর থেকে পুরো সিলেট বিদ্যুৎহীন। আগুন লাগার পর ফায়ার সার্ভিসের পাঁচটি ইউনিট প্রায় দুই ঘণ্টা চেষ্টা চালিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।
৩০ ঘণ্টার বেশি সময় ধরে বিদ্যুৎ না থাকায় চরম দুর্ভোগে পড়ে সিলেটবাসী। বিদ্যুতের জন্য দিনজুড়ে চারদিকে হাহাকার পড়ে। আলো, বাতাস ও পানির অভাবে বিপাকে পড়ে এলাকার মানুষ। ব্যাহত হয় স্বাভাবিক জীবনযাত্রা। দেখা দেয় পানির সংকট। অনেকে পুকুরের পানি ব্যবহারে বাধ্য হয়।
এই রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত (সন্ধ্যা ৭টা) পুরো সিলেটে একযোগে বিদ্যুৎ সরবরাহ চালু হয়নি। কিছু এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ হয়েলেও অনেক এলাকায় বিদ্যুৎ ছিল না।
মঙ্গলবার আগুনের কারণে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ থাকার বিষয়টি নগরবাসীকে জানাতে সেদিন দুপুর ২টা থেকে নগরীতে মাইকিং করা হয়।
এর আগে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসার পর সিলেট পল্লী বিদ্যুৎ উন্নয়ন ও বিতরণ বিভাগের প্রধান প্রকৌশলী মোকাম্মেল হোসেন বলেন, বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক করতে অনেক সময় লাগবে। আগুনে গ্রিড লাইন ও ট্রান্সমিটার অনেক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বেশ কিছু যন্ত্রপাতি পুড়ে গেছে। পিডিবি ও পিজিসিবি একসাথে এগুলো সংস্কারে কাজ করছে। ক্ষতিগ্রস্ত যন্ত্রপাতি সংস্কার ও পরিবর্তন করতে হবে।
পাওয়ার গ্রিড ১৩২/৩৩ কেভি বিদ্যুৎ সরবরাহ উপকেন্দ্রে আগুনের কারণ নিরূপণে চার সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। সিলেট পল্লী বিদ্যুৎ উন্নয়ন ও বিতরণ বিভাগ-২ এর নির্বাহী প্রকৌশলীকে আহ্বায়ক করে গঠিত তদন্ত কমিটিকে তিন দিনের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিল করতে বলা হয়েছে।
আগুন লাগার পরপর সিলেট বিভাগের সিলেট, সুনামগঞ্জ ও মৌরভীবাজার জেলার বিদ্যুৎ চলে যায়। তবে সুনামগঞ্জ ও মৌলভীবাজারে বিকল্প উপায়ে বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক করা হয়েছে।