অগ্রসর রিপোর্ট : গত ২৪ ঘন্টায় দেশে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ৭৯০ জন। বর্তমানে এ ভাইরাসে মোট আক্রান্ত ১১ হাজার ৭১৯ জন। এপর্যন্ত করোনামুক্ত হয়েছেন ১ হাজার ৪০৩ জন। গত ২৪ ঘন্টায় করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে ৩ জন মারা গেছেন। এনিয়ে ১৮৬ জন মারা গেছেন ।
আজ দুপুরে স্বাস্থ্য অধিদফতরের করোনাভাইরাস সংক্রান্ত নিয়মিত অনলাইন হেলথ বুলেটিনে অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা এসব তথ্য জানান। গতকালের চেয়ে আজ আক্রান্ত ৪ জন বেশি। গতকাল আক্রান্ত হয়েছিলেন ৭৮৬ জন।
ডা.নাসিমা সুলতানা জানান, ‘করোনাভাইরাস শনাক্তে গত ২৪ ঘণ্টায় নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে ৬ হাজার ৭৭১টি। আগের দিন নমুনা সংগ্রহ হয়েছিল ৬ হাজার ১৮২টি। নমুনা সংগ্রহ আগের দিনের তুলনায় ৫৮৯টি বেশি। গত ২৪ ঘন্টায় দেশের ৩৩টি পরীক্ষাগারে নমুনা পরীক্ষা হয়েছে ৬ হাজার ২৪১টি। আগের দিন পরীক্ষা হয়েছিল ৫ হাজার ৭১১টি।গতকালের চেয়ে নমুনা পরীক্ষা ৫৩৯টি অর্থ্যাৎ ৯ দশমিক ২৮ শতাংশ বেশি। এ পর্যন্ত নমুনা পরীক্ষা হয়েছে ৯৯ হাজার ৬৪৬টি।
মৃত ৩ জনের মধ্যে ১ জন পুরুষ এবং ২ জন নারী। তাদের মধ্যে ২ জনের বয়স ৬০ বছরের বেশি এবং ১ জনের ৪১ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে। ২ জন ঢাকার ভেতরে এবং ১ জন ঢাকার বাইরে মারা গেছেন।
অধ্যাপক নাসিমা সুলতানা বলেন, ‘গত ২৪ ঘণ্টায় আইসোলেশনে রাখা হয়েছে ১৮৪ জনকে। এখন পর্যন্ত মোট আইসোলেশনের সংখ্যা ১ হাজার ৭৯৪। ২৪ ঘণ্টায় আইসোলেশন থেকে ছাড়পত্র পেয়েছেন ৮৪ জন। এখন পর্যন্ত আইসোলেশন থেকে ছাড়পত্র পেয়েছেন ১ হাজার ৩২৭ জন।
সারাদেশে আইসোলেশন শয্যা রয়েছে ৯ হাজার ৭৩৮টি। ঢাকার ভেতরে রয়েছে ৩ হাজার ৯৪৪টি। ঢাকা সিটির বাহিরে শয্যা রয়েছে ৫ হাজার ৬৯৪টি। আর দেশে আইসিইউ সংখ্যা রয়েছে ৩৪৯টি, ডায়ালাসিস ইউনিট রয়েছে ১০২টি রয়েছে বলে তিনি জানান।
তিনি জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় প্রাতিষ্ঠানিক ও হোম কোয়ারেন্টিন করা হয়েছে ৩ হাজার ৮৮৯ জনকে। এখন পর্যন্ত ২ লাখ ১ হাজার ৭শ’ জনকে কোয়ারেন্টিন করা হয়েছে। কোয়ারেন্টিন থেকে গত ২৪ ঘণ্টায় ছাড়পত্র পেয়েছেন ৩ হাজার ৮৭২ জন এবং এখন পর্যন্ত ছাড় পেয়েছেন ১ লাখ ৬০ হাজার ৫৬১ জন। বর্তমানে মোট কোয়ারেন্টিনে আছেন ৪১ হাজার ১৯৩ জন।’
সারাদেশের ৬৪ জেলা এবং সেখানকার উপজেলায় প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইনের জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে ৬০১টি প্রতিষ্ঠান। এর মাধ্যমে তাৎক্ষণিকভাবে ৩০ হাজার ৬৩৫ জনকে কোয়ারেন্টাইন সেবা দেয়া যাবে বলে তিনি জানান।
অতিরিক্ত মহাপরিচালক জানান, গত ২৪ ঘন্টায় ব্যক্তিগত সুরক্ষা সামগ্রী (পিপিই) সংগ্রহ হয়েছে ৮১ হাজার ৬৩০টি। বিতরণ হয়েছে ৪০ হাজার ৯২২টি। এ পর্যন্ত সংগ্রহ ২০ লাখ ১১ হাজার ৮৮৪টি। বিতরণ হয়েছে ১৫ লাখ ৯০ হাজার ৪০৪টি। বর্তমানে ৪ লাখ ২১ হাজার ৪৮০টি পিপিই মজুদ রয়েছে।
তিনি জানান, গত ২৪ ঘন্টায় হটলাইন নম্বরে ৫৮ হাজার ৮৮৫টি এবং এ পর্যন্ত প্রায় ৪১ লাখ ৩ হাজার ৯৪৫টি ফোন কল রিসিভ করে স্বাস্থ্য সেবা ও পরামর্শ দেয়া হয়েছে। এছাড়া মোবাইল ও ওয়েবসাইটে গত ২৪ ঘন্টায় ২৭ হাজার ৬৭৬ জন এবং এ পর্যন্ত ১৭ লাখ ২৩ হাজার ৫০ জনকে স্বাস্থ্য পরামর্শ ও চিকিৎসা সেবা দেয়া হয়েছে।
তিনি জানান, করোনাভাইরাস চিকিৎসা বিষয়ে এ পর্যন্ত ১৫ হাজার ৬৩৮ জন চিকিৎসক অনলাইনে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেছেন। ২৪ ঘন্টায় আরও ১৮ জন চিকিৎসক প্রশিক্ষণ নিয়েছেন। এদের মধ্যে ৪ হাজার ৪০ জন স্বাস্থ্য বাতায়ন ও আইইডিসিয়ার’র হটলাইনগুলোতে স্বেচ্ছাভিত্তিতে সপ্তাহে ৭ দিন ২৪ ঘন্টা জনগণকে চিকিৎসাসেবা ও পরামর্শ দিচ্ছেন।
ডা.নাসিমা সুলতানা জানান, দেশের বিমানবন্দর, স্থল, নৌ ও সমুদ্রবন্দর দিয়ে গত ২৪ ঘন্টায় ৫০১ জনসহ সর্বমোট বাংলাদেশে আগত ৬ লাখ ৮৯ হাজার ৯০১ জনকে স্কিনিং করা হয়েছে।
দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার পরিস্থিতি তুলে ধরে তিনি জানান, ৫ মে পর্যন্ত ২৪ ঘন্টায় দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় করোনা আক্রান্ত হয়েছেন ৫ হাজার ১৫ জন। এ পর্যন্ত আক্রান্ত হয়েছেন ৭২ হাজার ৮৮৮ জন। ২৪ ঘন্টায় মারা গেছেন ২১৯ জন এবং এ পর্যন্ত ২ হাজার ৬৮২ জন।
সারাবিশ্বে ২৪ ঘন্টায় করোনা আক্রান্ত হয়েছেন ৮১ হাজার ৪৫৪ জন। এ পর্যন্ত আক্রান্ত হয়েছেন ৩৫ লাখ ১৭ হাজার ৩৪৫ জন। ২৪ ঘন্টায় মারা গেছেন ৩ হাজার ৭৯৭ জন এবং এ পর্যন্ত ২ লাখ ৪৩ হাজার ৪০১ জন।
করোনাভাইরাসের সংক্রমন ঠেকাতে সকলকে স্বাস্থ্যবিধি যথাযথভাবে মেনে চলতে তিনি সকলের প্রতি আহবান জানান।