অগ্রসর রিপোর্ট: রংপুরে আগুনে ভস্মীভূত তাজহাট থানা, বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়, সেন্ট্রাল রোড় পুলিশ ফাড়িসহ বিভিন্ন স্পট পরিদর্শন করেছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল।
বৃহস্পতিবার সকালে তিনি রংপুর আসেন। দুপুর সাড়ে ১২টায় তিনি বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে প্রবেশ করে সরাসরি উপাচার্যের বাসভবন পরিদর্শনে যান তিনি। এ সময় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে বিভিন্ন ঘটনার বর্ণনা করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
এছাড়াও তিনি ডিবি অফিস, আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ, শ্রমিকলীগ ও পরিবার পরিকল্পনা অফিস পরিদর্শন করেছেন। পরে তিনি দুপুরে রংপুর শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে আয়োজিত আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন।
এ সময় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান বলেন, ‘নাশকতাকারী যেই হোক, কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না। আমরা হতবাক হয়েছি বাঙালিরা কীভাবে এই ধ্বংসাত্মক কর্মকাণ্ড করতে পারে। এটা আমাদের ধারনাই ছিলো না। এটা ছাত্র আন্দোলন হতে পারে না। এই আন্দোলনে ছাত্রলীগের ৯-১০ জন কর্মী নিহত হয়েছে। আওয়ামী লীগ নেতাদেরও হত্যা করা হয়েছে।’
আওয়ামী লীগ নেতাদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘আপনারা ফেইল করেছেন। নেতারা হাত গুটিয়ে বসে ছিলেন কেন। আওয়ামী লীগ ছাত্রলীগ নেতাদের গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। আমরা ঘুমিয়ে থাকলে ঘরে ডুকে মেরে ফেলবে।’
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘বিএনপি জামায়াত এক হয়েছে। তারা এক হয়ে ধ্বংসাত্মক কর্মকাণ্ড চালিয়েছে। সেনাবাহিনী এগিয়ে এসেছে এদেশের জনগনকে রক্ষা করার জন্য। আমরা কাউকে ছাড় দেবো না। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী অনেককে চিহ্নিত করেছে। আপনারা ২০১৪ সালে বিএনপি জামায়াতের ধ্বংসাত্মক কর্মকাণ্ড দেখেছেন। আপনারা সাহস করে দাঁড়িয়ে যান। উত্তেজিত হবেন না। উত্তেজিত হলে হেরে যাবেন।’
মন্ত্রী আরও বলেন, ‘এই আন্দোলনে সাংবাদিক নিহত হয়েছেন। অনেকে আহত হয়েছেন। একটি উদ্দেশ্য নিয়ে তারা এই কাজ করেছে। আন্দোলনের নামে শিশুদেরকে সামনের দিকে এগিয়ে দেওয়া হয়েছে। এটা আন্দোলন হতে পারে না।’
‘সন্ত্রাসীরা হাজার হাজার মানুষ নিয়ে এসে, থানা, পুলিশ ফাড়ি, বিভিন্ন সরকারী স্থাপনা, বিভিন্ন অফিস ও জেলখানায় হামলা চালিয়ে সেগুলো জালিয়ে দিলো। জঙ্গীদের জেল ভেঙ্গে বের করেছে। ঢাকা-রংপুরসহ বিভিন্ন এলাকায় ধ্বংসাত্মক কর্মকাণ্ড চালানো হলো। এটা কোটা আন্দোলন হতে পারে না’— বলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।
মতবিনিময় সভায় স্থানীয় সংসদ সদস্য টিপু মুনসি বলেন, ‘আওয়ামী লীগ কেন দুর্বল হয়ে গেল। এই অবস্থায় আমাদের ঘুরে দাঁড়াতে হবে। আমরা দিন দিন সুবিধাবাদী হয়ে যাচ্ছি। আইন তার গতিতে চলবে। সংগঠন শক্তিশালী করতে যা যা করা দরকার তাই করা হবে। সাংগঠিকভাবে ঘুরে দাঁড়াই দেখি কার কতো শক্তি আছে।’
এদিকে মতবিনিময় সভার মঞ্চে রংপুর সিটি করপোরেশনের মেয়র ও জাতীয় পার্টির কো-চেয়ারম্যান মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফাকে দেখে আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ ও যুবলীগের নেতাকর্মীরা উত্তেজিত হয়ে পড়েন।
এসময় তারা বলেন, মেয়রের নির্দেশে রংপুরে জাতীয় পার্টি, বিএনপি ও জামায়াত তাণ্ডবলীলা চালিয়েছেন। এসময় তারা মেয়রের বিচার দাবি করেন।
সভায় বাংলাদেশ পুলিশের আইজিপি চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুনসহ প্রশাসনের উর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।