ডেস্ক রিপোর্ট : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সুস্থ রাজনীতিতে ফিরে আসার জন্য বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেছেন, হত্যা, লুটপাট ও দুর্নীতির রাজনীতি বাদ দিয়ে আগামী নির্বাচনে অংশ নিন।
তিনি বলেন, ‘আমরা চাই গণতন্ত্রের ধারা অব্যাহত থাকুক। আমরা চাই তারা (বিএনপি) পুনরায় নির্বাচন থেকে সরে যাওয়ার মতো ভুল না করুক। বরং আমরা চাই তারা নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে এবং জনগণ বিচার করবে কারা ক্ষমতায় আসবে।’
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় নগরীর সিটি কনফারেন্স সেন্টারে প্রবাসী বাংলাদেশীদের দেয়া এক নাগরিক সংবর্ধনায় প্রধানমন্ত্রী একথা বলেন। খবর : বার্তা সংস্থা বাসসের।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ এইচ মাহমুদ আলী অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন।
শেখ হাসিনা বলেন, খালেদা জিয়া দেশের কোন উন্নয়নে স্বস্তিবোধ করেন না এবং তিনি সর্বদা দেশের ধ্বংস দেখতে চান, উন্নয়ন নয়।
বাংলাদেশ খারাপ পরিস্থিতির দিকে যাচ্ছে খালেদা জিয়ার এই মন্তব্য তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশ খারাপ পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে যাচ্ছে না বরং যারা এতিমের অর্থ আত্মসাৎ করেছে, ও যারা মামলার মুখোমুখী হতে ভয় পায় এবং দেড়শ’বার রিট দাখিল সত্ত্বেও উচ্চ আদালতে মামলায় হেরেছে তাদেরই দুর্দিন যাচ্ছে।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘দেশের মানুষ যখন ভালো থাকেন বিএনপি নেতা তখন স্বস্তি অনুভব করেন না। তারা স্বনির্ভর অনুভব করেন যখন তারা লোকদের হত্যা করেন এবং দেশের সম্পদ ধ্বংস করেন।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, যখন বিএনপি ক্ষমতায় ছিল তখন হাওয়া ভবন খুলে জনসাধারণের অর্থ লুট করেছে এবং অবাধে দুর্নীতি করেছে। খালেদা জিয়া শুধু লুট ও কমিশন নেয়া জানে এবং তারা কেবলমাত্র জানে কিভাবে সম্পদ ধ্বংস করতে হয়।
১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের মর্মান্তিক হত্যাকান্ডের সঙ্গে পুনরায় জিয়াউর রহমানের সম্পৃক্ততার অভিযোগ তুলে আওয়ামী লীগ প্রধান বলেন, বিএনপি নেতারা ২১ আগস্টের গ্রেনেড হামলা এবং ১০ ট্রাক অস্ত্রের চালানের সঙ্গে যুক্ত। ‘তারা আমার জীবন নাশের কয়েকবার চেষ্টা করেছে, কিন্তু আমি রাজনীতি, দেশ এবং জনগণের স্বার্থে এই ঘটনাগুলো ভুলে যাওয়ার চেষ্টা করেছি।
প্রধানমন্ত্রী ২০১৩, ২০১৪ এবং ২০১৫ সালে বিএনপি-জামায়াতের হত্যা ও ধ্বংসযজ্ঞের কথা উল্লেখ করে বলেন, ‘বিএনপি হত্যা ছাড়া অন্য কিছুই বুঝে না এবং ধ্বংসের বাইরে কোন কিছুই জানে না। দেশবাসীর ওপর বিএনপি যে নির্যাতন চালিয়েছে, জনগণ তা ভুলবে না।’
শেখ হাসিনা দেশের উন্নয়নের পাশাপাশি জনগণের সামনে বিএনপি’র সন্ত্রাসী কার্যক্রম তুলে ধরার জন্য প্রবাসী বাংলাদেশীদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, ‘জনগণকে অবহিত করতে হবে যে বিএনপি একটি জঙ্গি ও সন্ত্রাসী সংগঠন এবং তারা মানুষকে পুড়িয়ে হত্যা করেছে। জনগণের সামনে তাদের চরিত্রকে উন্মোচিত করতে হবে।’
জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসবাদের বিরোধী সরকারের প্রচার কার্যক্রমের কথা তুলে ধরে শেখ হাসিনা পুনর্ব্যক্ত করেন যে, সন্ত্রাসী ও জঙ্গিবাদীরা দেশের কোথাও স্থান পাবে না।
তিনি বলেন, ইসলাম শান্তির ধর্ম এবং এই ধর্ম কখনো নিরীহ মানুষ হত্যার সমর্থন দেয় না। সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ দমনে আমরা ব্যাপক কার্যক্রম গ্রহণ করেছি।
তিনি বলেন, ‘বিএনটি-জামায়াত শাসনকালে বিদ্যুৎ উৎপাদন ছিল কম। তারা জনগণকে বিদ্যুতের খাম্বা দিয়েছে। বিদ্যূত দিতে পারেনি’।
শেখ হাসিনা বলেন, বিএনপি-জামায়াত সাহায্য তহবিল লুট করেছে, তারা জনগণকে দরিদ্র রাখতে চেয়েছে এবং তারা দেশকে দুর্দশাগ্রস্ত ও মানুষের মৃতদেহ দেখিয়ে আরো বিদেশী সাহায্য নিয়ে আসতে চেয়েছে।
তিনি বলেন, অপরদিকে আওয়ামী লীগের নীতি হলো দেশকে নিজের পায়ে দাঁড় করানো, অন্যের কাছ থেকে ভিক্ষা গ্রহণ নয়।
তিনি বলেন, ‘আমরা মর্যাদার সঙ্গে বাস করবো।’ প্রধানমন্ত্রী দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের পাশাপাশি বিভিন্ন আন্দোলনে প্রবাসী বাংলাদেশীদের অবদানের কথা তুলে ধরেন।
এসময় তিনি সুইডিশ রাজা ও প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা সফল হয়েছে বলে উল্লেখ করেন।