বাগেরহাট প্রতিনিধি : বাগেরহাটের পূর্ব সুন্দরবনের করমজল বন্যপ্রাণীপ্রজনন কেন্দ্রের কুমির জুলিয়েট এবার ৪৩টি ডিম দিয়েছে। মঙ্গলবার সকালে প্রজনন কেন্দ্রের পুকুর পাড় থেকে ডিমগুলো সংগ্রহ করে তা ইনকিউবেটরে (নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্র) রাখা হয়েছে।
করমজল বন্য প্রাণী প্রজনন কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো: আজাদ কবির সাংবাদিকদের এ তথ্য নিশ্চিত করে জানান, কেন্দ্রের পুকুর পাড়ে মঙ্গলবার সকালে ৪৩টি ডিম দেয় জুলিয়েট। পরে ডিমগুলো পুকুর পাড় থেকে তুলে কেন্দ্রের প্রজনন কাজে ব্যবহৃত ইনকিউবেটরে রাখা হয়েছে। ইনকিউবেটরে নির্দিষ্ট আলো, বাতাস ও তাপমাত্রায় রাখা ডিমগুলো ৮৮ থেকে ৯০ দিনের মধ্যে বাচ্চা ফুটে বের হবে। এ নিয়ে জুলিয়েট করমজলে ১১ বার ডিম দিয়েছে। এর আগে জুলিয়েট গত বছরের ১৪ আগস্ট ৫১টি ডিম দেয়। যার মধ্যে ৩৬টি ডিম থেকে কুমিরের বাচ্চা ফোটে।
বাগেরহাট পূর্ব সুন্দরবন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) মো. সাইদুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, বাংলাদেশে তিনপ্রজাতির কুমিরের অস্তিত্ব ছিল। লবণ পানির কুমির, মিঠা পানির কুমির ও গঙ্গোত্রীয় কুমির বা ঘড়িয়াল। এর মধ্যে মিঠা পানির কুমির ও ঘড়িয়ালের বিলুপ্তি ঘটেছে। এখন শুধু লবণ পানির কুমিরের অস্তিত্বই আছে। এরা সাধারণত ৬০-৬৫ বছর পর্যনত ডিম দিতে পারে। আর ৮০-১০০ বছর পর্যন্ত বেঁচে থাকে।
উল্লেখ্য, বিলুপ্ত প্রায় প্রজাতির নোনা পানির কুমিরের প্রজনন বৃদ্ধি ও তা সংরক্ষণে জন্য ২০০২ সালে পূর্ব সুন্দরবনের করমজল পর্যটনকেন্দ্র বন বিভাগের উদ্যোগে গড়ে তোলা হয় দেশের একমাত্র সরকারি এ কুমির প্রজনন কেন্দ্রটি। বায়োডাইভারসিটি কনজারভেশনপ্রকল্পের আওতায় ৩২ লাখ টাকা ব্যয়ে ৮ একর জায়গার উপর গড়ে তোলা হয় কেন্দ্রটি।
শুরুতেই জেলেদের জালে ধরা পড়া ছোট-বড় পাঁচটি কুমির দিয়ে কেন্দ্রের কার্যক্রম শুরু হয়। বর্তমানে কেন্দ্রটিতে নোনা পানির দুটি নারী কুমির জুলিয়েট-পিলপিল ও একটি পুরুষ কুমির রোমিওসহ বিভিন্ন বয়সী ২১১টি কুমির রয়েছে। এখান থেকে কুমির গুলো ডুলাহাজারা সাফারি পার্ক, বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্ক, পটুয়াখালী বন বিভাগ ও সুন্দরবনের বিভিন্ন নদী-খালে অবমুক্ত করা হয়।