সিলেট জেলা প্রতিনিধি : সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে সরকারি রাজস্বের ১৭ কোটি ৩০ লাখ ৪০ হাজার টাকা আত্মসাতের অভিযোগ পাওয়া গেছে। হাসপাতালের দায়িত্বশীলরা ও রাজস্ব আদায়ের সংশ্লিষ্ট শাখার কর্মকর্তাগনের বিরুদ্ধে এ বিপুল পরিমাণ অর্থ আত্মসাতের ব্যাপারে দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) লিখিত অভিযোগ দেয়া হয়েছে।
জানা গেছে, সিরৈট এমএজি ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের তত্ত্বাবধানে ন্যায্যমূল্যের ঔষধের দোকান দিয়ে দুর্নীতর মাধ্যমে সরকারী রাজস্বের ১৭ কোটি ৩০ লাখ ৪০ হাজার টাকা আত্মসাত করা হয়েছে।
দুদকে প্রেরিত অভিযোগ সুত্রে জানা গেছে, সিলেট এম,এ,জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল কম্পাউন্ডে ‘ন্যায্যমূল্যে ঔষধের দোকান’ রয়েছে। দোকানটি ভাড়া নিয়ে ওষুধের ব্যবসা করছেন জনৈক ব্যবসায়ী। কোন প্রকার টেন্ডার বা নিলাম বিজ্ঞপ্তি ছাড়াই দীর্ঘ প্রায় ১৪ বছর থেকে একাধারে দোকানটি শুধুমাত্র একজন ব্যবসায়ীকেই ভাড়া দেয়া হয়েছে। তিনি হচ্ছেন শাহজালাল এ্যাম্বুলেন্স সার্ভিস-এর মালিক ওসমানী হাসপাতালেরই একজন ব্রাদার।
সরকারী নিয়ম-নীতি মেনে প্রথম থেকেই মাসিক ২ লাখ টাকায় দোকানটি ভাড়া নেয়ার জন্য অনেক ব্যবসায়ীর আবেদন করে থাকেলও তাদের কাউকে ভাড়া দেয়া হয়নি। মাসিক ২ লাখ টাকায় ফার্মেসীটি অঘোষিতভাবে উল্লেখিত ব্রাদারকে ভাড়া দিয়ে হাসপাতাল কর্র্তৃপক্ষ ও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাগন সরকারের রাজস্ব আয় খাতে দোকানের ভাড়া বাবদ প্রতিমাসে মাত্র ৭০ হাজার টাকা জামা করে থাকেন।
প্রতিমাসের ভাড়ার বাকি ১ লাখ ৩০ হাজার টাকা করে তারা নিজেদের মধ্যে ভাগ-বাটোয়ারা করে নেন। গত প্রায় ১৪ বছরে অনিয়ম-দূর্নীতির মাধ্যমে ‘ন্যায্যমূল্যে ওষুধের দোকান’ ভাড়ার প্রায় ১৭ কোটি ৩০ লাখ ৪০ হাজার টাকা আত্মসাত করেছেন সিলেট এম,এ,জি ওসমানী হাসপাতালের দায়িত্বশীলরা।
অবৈধ পার্কিং বাণিজ্য : ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ডিসেম্বর মাসে অবৈধ পার্কিং নিয়ে তুলকালাম কান্ড ঘটে। অবৈধ পার্কিং সড়িয়ে ফেলতে ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সাবেক পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আব্দুস সবুর মিয়া ইতিপুর্বে পুলিশকে নির্দেশ দিয়েছিলেন। এ ঘটনার পর আব্দুস সবুর মিয়া সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ভেতরকে অ্যাম্বুলেন্স মুক্ত করেছিলেন। কিন্তু এখন অবস্থা যেই-সেই।
এখন প্রতিদিন অর্ধশতাধিক অ্যাম্বুলেন্স ওসমানী মেডিকেল হাসপাতালের ভেতরে পার্কিং করা হচ্ছে। ১০-১২টি কোম্পানির অ্যাম্বুলেন্স দখলে রেখেছে ওসমানীর পার্কিং এলাকা। এর মধ্যে রয়েছে-শাহজালাল অ্যাম্বুলেন্স, আল-আমিন অ্যাম্বুলেন্স সার্ভিস, সুমাইয়া অ্যাম্বুলেন্স, পারাপার অ্যাম্বুলেন্স, মাসুম ট্রেডার্স, সাজু অ্যাম্বুলেন্স, জনসেবা অ্যাম্বুলেন্স, সার্ভিস অ্যাম্বুলেন্স, প্রত্যয় অ্যাম্বুলেন্স, মানবসেবা অ্যাম্বুলেন্স, মিস্মিল্লাহ অ্যাম্বুলেন্স।
সিলেট নগরী ও বিভাগের সচেতন নাগরিকগণ এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নিতে উপ-পরিচালক দূর্নীতি দমন কমিশন সমন্বিত জেলা কার্যালয়, সিলেট বরাবরে গত ১৫ মে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। অভিযোগের অনুলিপি বাংলাদেশ সরকারের স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা মন্ত্রণালয় মন্ত্রী এবং সিলেটের সিভিল সার্জনসহ সরকারের বিভিন্ন দায়িত্বশীল দপ্তরে পাঠানো হয়েছে।