অর্থ লোপাটের খবর গোপন করায় কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নরসহ তিন শীর্ষ পদে পরিবর্তন আনার পর বুধবার সচিবালয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ কথাগুলো বলেন মুহিত। কিন্তু কিভাবে বাংলাদেশ ব্যাংকের কাঠামোকে ঢেলে সাজাবেন তা বিস্তারিত বলেননি অর্থমন্ত্রী। তবে এ ক্ষেত্রে নতুন গভর্নরকে সেই দায়িত্ব দেয়ার ইঙ্গিত দেন তিনি।
মন্ত্রী বলেন, ‘নতুন গভর্নর সম্ভবত ১৯ অথবা ২০ মার্চ দায়িত্ব নেবেন। তিনি এখন নিউ ইয়র্কে আছেন, ১৮ মার্চ দেশে ফিরবেন। নতুন গভর্নর আসার পরে তিনি নিজেকে সেটেল করতে কিছু সময় নেবেন। তখন উনি আরও (সংস্কারের বিষয়গুলো) দেখবেন।’
এ ছাড়া সাবেক গভর্নর ফরাসউদ্দিনের নেতৃত্বে গঠিত কমিটিও কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কোথায় কোথায় সংস্কার প্রয়োজন তা খতিয়ে দেখবে বলেও জানান মুহিত।
ফেব্রুয়ারির শুরুতে যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক অব নিউ ইয়র্কে রাখা বাংলাদেশ ব্যাংকের ৮১ মিলিয়ন ডলার সুইফট ‘মেসেজিং সিস্টেমে হ্যাকিংয়ের মাধ্যমে’ ফিলিপিন্সে সরিয়ে ফেলা হলেও বাংলাদেশের মানুষ বিষয়টি জানতে পারে মার্চের শুরুতে বিদেশি পত্রিকার খবরে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংক প্রায় এক মাস বিষয়টি চেপে রাখায় ক্ষুব্ধ মুহিত ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বললে মঙ্গলবার চাপের মুখে সরে যেতে হয় সাত বছর ধরে গভর্নরের দায়িত্ব পালন করে আসা আতিউর রহমানকে। সেই দায়িত্ব পান সোনালী ব্যাংকের চেয়ারম্যান ফজলে কবির, যিনি এক সময় সরকারের অর্থ সচিব ছিলেন।
আতিউর সরে যাওযার পর কেন্দ্রীয় ব্যাংকের দুই ডেপুটি গভর্নর নাজনীন সুলতানা ও আবুল কাশেমকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব এম আসলাম আলমকেও সরিয়ে দেওয়ার কথা জানান অর্থমন্ত্রী মুহিত। এরপর জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় বুধবার আসলামকে ওএসডি করে প্রাইভেটাইজেশন কমিশনের সদস্য মো. ইউনুসুর রহমানকে ব্যাংক সচিব করার আদেশ জারি করে।
ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব পদাধিকার বলে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের সদস্য। তবে অর্থ লোপাটের ঘটনায় সচিব জড়িত ছিলেন না বলেই মুহিতের বিশ্বাস।
তারপরও তাকে সরিয়ে দেওয়ার কারণ ব্যাখ্যা করে মন্ত্রী বলেন, ‘এখানে প্রিন্সিপালটা হলো- সচিব হবেন ভিজিলেন্ট। সো ইউ শুড নো অ্যাবাইট ইট, দুর্ভাগ্যবশত নোবডি নিউ।’
নতুন দুজন ডেপুটি গভর্নর নিয়োগের প্রক্রিয়াও শুরু হয়েছে জানিয়ে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘এটা লম্বা প্রোসেস। কারণ এটাতে সার্চ কমিট হয়। সার্চ কমিটি নোমিনেশন দেয়, তারপরে নিযুক্তি হয়, সো এটা সময় লাগবে।’
এই নিয়োগ প্রক্রিয়া শেষ করতে এক মাসের মতো লাগতে পারে বলে ধারণা দেন তিনি।