ফরিদপুর প্রতিনিধি- জীবনের হুমকির জন্য স্থানীয় সরকার মন্ত্রী মোশাররফ হোসেনকে দায়ী করে ফেসবুকে স্টেটাস দেওয়ার গটনায় আটকের ২ দিন পর মুক্তি পাওয়া সাংবাদিক প্রবীর শিকদার বলেছেন, তিনি কোনও ভুল করেননি। জামিনে মুক্তি পেয়ে ফরিদপুর জেলা কারাগারের প্রধান ফটকের সামনে দাড়িয়ে তিনিেএ কথা বলেন। সুনির্দিষ্ট প্রমাণ ছাড়াই ফেসবুকে কাউকে মানহানি করা নিয়ে তার কোনও অনুশোচনা হচ্ছে কিনা? এমন প্রশ্নের উত্তরে প্রবীর শিকদার বলেন, “প্রশ্নই আসেনা…একজনের মানহানির চেয়ে আমার জীবনের মূল্য অনেক বেশী।
জীবনের শঙ্কার জন্য আইনের কাছে যাবো, থানা পুলিশের কাছে যাবো, পুলিশ অভিযোগ গ্রহণ করেনা তখন এই শঙ্কার কথা মানুষকে জানাতে হবে, নিরুপায় হয়েই আমি ফেসবুকের আশ্রয় নিয়েছি। গোয়েন্দা পুলিশের হেফাজতে প্রবীর শিকদার তার ফেসবুক স্টেটাসের জন্য দু:খ প্রকাশ করেছিলেন। কিন্তু জামিনে মুক্ত হবার পর তিনি দাবি করেন, তাকে দু:খ প্রকাশ করতে বাধ্য করা হয়েছিল। আমি সে কথা আদালতে বলেছি। আমি এ ঘটনায় মোটেই অনুতপ্ত নই। তার ফেসবুক পাতায় প্রবীর শিকদার লিখেছিলেন তাকে মেরে ফেলার হুমকি দেওয়া হচ্ছে এবং তার কিছু হলে এলজিআরডি মন্ত্রী খন্দকার মোশাররফ হোসেন, মুসা বিন শমশের ও বাচ্চু রাজাকার এই ৩ ব্যক্তি দায়ী থাকবেন।
এরই প্রেক্ষাপটে, সোমবার গোয়েন্দা পুলিশ তাকে তার ঢাকার বাসা থেকে আটক করে নিয়ে যায়। পরে ফরিদপুরের আইনজীবী স্বপন পা্লের দায়ের করা তথ্য প্রযুক্তি আইনে মানহানির মামলায় তাকে ফরিদপুরে জেল হাজতে নেয়া হয়। গতকাল (মঙ্গলবার) ফরিদপুরের আদালত তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পুলিশের আবেদনের প্রেক্ষিতে ৩ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করে। কিন্তু পরদিনই জিজ্ঞাসাবাদ না করেই পুলিশ তাকে আবারো আদালতে নিলে, বিচারক তার রিমান্ড বাতিলপূর্বক জামিনের আবেদন মঞ্জুর করেন। তার হঠাৎ এই মুক্তিতে প্রবীর শিকদারের কণ্ঠেও কিছুটা বিস্ময়ের ইঙ্গিত ছিল।
তিনি বলেন, যে প্রক্রিয়ায় তার মুক্তি হয়েছে সরকারের শীর্ষ পর্যায়ের নির্দেশনা ছাড়া তা সম্ভব নয়। প্রবীর শিকদারের পরিবার বলেছেন, হিন্দু সম্পত্তি দখল নিয়ে এবং যুদ্ধাপরাধের বিচার নিয়ে ফেসবুকে লেখার কারণে তিনি নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছিলেন। এদিকে মন্ত্রীকে দায়ী করে ফেসবুকে স্টেটাস দেওয়ায় তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেন মন্ত্রী খন্দকার মোশাররফ হোসেন। প্রবীর শিকদারের বিরুদ্ধে হওয়া মামলার সাথে তার সংশ্লিষ্টতার কথা মন্ত্রী অস্বীকার করেন। তবে প্রবীর শিকদার বলেন, মন্ত্রীর পৃষ্ঠপোষকতাতেই ফরিদপুরের ঐ আইনজীবী মামলাটি করেছেন।