নিজের ভেরিফাইড ফেসবুক পেজে প্রধানমন্ত্রীর তথ্য-প্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা জয় লিখেছেন, ‘এই মিথ্যা তৈরি করেছে বিশ্ব ব্যাংক। পুরো উপাখ্যান চলাকালে আমি তাদের এই সব প্রমাণাদি দেখেছি। এতে সুনির্দিষ্ট-বিস্তারিত কিছু নেই, যা সুস্পষ্টভাবেই বানানো। রয়েছে কেবল একটি বেনামী সূত্র, যা এমনকি কানাডার আদালতের কাছেও প্রকাশ করা হয়নি। সুতরাং তারা অভিযোগ দায়ের করেছে, কিন্তু দাবির পক্ষে প্রমাণ দিতে অস্বীকার করেছে।’
ফেসবুকে দেওয়া ওই স্ট্যাটাসে জয় লিখেছেন, ‘আমার মা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকারের সুনামহানি করতে বিশ্ব ব্যাংক এই ষড়যন্ত্র করেছে।’
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলে আসছেন, পদ্মা সেতু প্রকল্প নিয়ে বিশ্ব ব্যাংকের অভিযোগ তোলা বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের অংশ এবং এতে বাংলাদেশিরাও জড়িত ছিলেন। সম্প্রতি তিনি সংসদে বলেন, হিলারি ক্লিনটনকে দিয়ে পদ্মা সেতুতে বিশ্ব ব্যাংকের অর্থায়ন আটকেছিলেন নোবেলজয়ী বাংলাদেশি মুহাম্মদ ইউনূস এবং এতে বাংলাদেশের এক সম্পাদকেরও ভূমিকা ছিল।
বিশ্ব ব্যাংক বলার পর পদ্মা প্রকল্পে দুর্নীতির অভিযোগ নিয়ে শোরগোল ওঠে বাংলাদেশেও; তখন সরকারের ভূমিকার কড়া সমালোচনা করেন অনেকে।
সেসব সমালোচকদের উদ্দেশে জয় তার স্ট্যাটাসে লিখেছেন, ‘এটা লজ্জাজনক যে, আমাদের সুশীল সমাজের একটা অংশ দ্রুত আমাদের সরকারের বিরুদ্ধে ও বিশ্ব ব্যাংকের পক্ষে অবস্থান নেন। তারা বেশ কয়েকজন পরিশ্রমী, সম্মানিত যোগ্য মানুষের গায়ে কালিমা লেপন করেছেন…যারা বাংলাদেশের বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়, তারা দেশপ্রেমিক নয়।’
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, আওয়ামী লীগ সরকার এবং ‘সম্মান ক্ষুণ্ন হওয়া’ ব্যক্তিদের কাছে ওই সমালোচকদের ‘ক্ষমা প্রার্থনা’ এখন পাওনা বলে মন্তব্য করেছেন জয়। বাংলাদেশের কাছেও তাদের ক্ষমা চাওয়া উচিৎ বলে স্ট্যাটাসে উল্লেখ করেন তিনি।
মায়ের মতো জয়ও অভিযোগ করেন, দেশের সবচেয়ে বড় সেতু প্রকল্পে বিশ্বব্যাংক দুর্নীতি চেষ্টার অভিযোগ তোলার পেছনে গ্রামীণ ব্যাংকের চেয়ারম্যান ড. মুহম্মদ ইউনুসের হাত ছিল। এ বিষয়ে তিনি লেখেন, এই অভিযোগ উঠার পর তাকেও যুক্তরাষ্ট্রে প্রশ্নের মুখে পড়তে হয়েছে। ইউনুসের অনুরোধে যুক্তরাষ্ট্রের তৎকালীন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিলারি ক্লিনটন বাংলাদেশ সরকারকে শায়েস্তা করতে পদ্মা সেতুর অর্থায়ন বাতিল করতে বিশ্ব ব্যাংককে নির্দেশনা দিয়েছিলেন।
ইউনূসের বিরুদ্ধে দুর্নীতি ও কর ফাঁকির অভিযোগও এনে জয় বলেন, ‘আপনারা কি জানেন, ইউনুস, তার পরিবার, বন্ধুরা বাংলাদেশের সর্ববৃহৎ এবং সবচেয়ে লাভজনক টেলিযোগাযোগ কোম্পানির ৩০ শতাংশ শেয়ারের মালিক। একটি বেসরকারি ট্রাস্ট্রের মাধ্যমে তারা এটার মালিক হয়েছে, কেবল তারাই এর সুবিধাভোগী। গ্রামীণ ব্যাংকের একটি মাল্টি মিলিয়ন ডলারের লোন থেকে এই শেয়ারের টাকা দেওয়া হয়েছে, যা অবৈধ। দাতাদের অর্থে দরিদ্রদের ক্ষুদ্র ঋণ দিতে খরচ করে গ্রামীণ ব্যাংক। এখান থেকে ব্যক্তিগত ব্যবসার জন্য ঋণ করা যায় না।’