সিরিয়ার বিভিন্ন জায়গা থেকে তথাকথিত ইসলামিক স্টেটের জঙ্গিরা যতোই পিছু হটছে ততোই তাদের শাসন ব্যবস্থার নমুনা বেরিয়ে আসছে।
দেশটির উত্তরাঞ্চল থেকে জঙ্গিরা পালিয়ে যাওয়ার পর সেখানকার একটি পরিত্যক্ত স্কুলের ভেতরে ঘুরে দেখতে সক্ষম হয়েছেন বিবিসির একজন সংবাদদাতা জিয়ার গল।
কুর্দি যোদ্ধাদের সাথে তিনি ওই স্কুলের ভেতরে ঘুরে দেখেছেন।
তাদের আক্রমণে মানবজ প্রদেশ থেকে আই এস জঙ্গিরা সেখান থেকে পালিয়ে গেছে।
কিছুদিন আগেও এই স্কুলটি চালাতো ইসলামিক স্টেট।
স্কুলের ভেতরে ঢুকে তিনি প্রথমে যে ক্লাসে গেলেন সেটি ছিলো শিল্পকলা বা আর্টস এন্ড ক্রাফটসের।
সেখানে তিনি দেখতে পান মেঝেতে পড়ে আছে কাগজ দিয়ে তৈরি কিছু মানব দেহ।
এগুলোর আকারও মানুষের সমান।
ধারণা করা হচ্ছে, এর উদ্দেশ্য আইএসের ওপর বিমান হামলার সময় চালকদের বিভ্রান্ত করা। যাতে এসবের ওপর বোমা ফেলা হয়।
স্কুলের রান্নাঘরের দরজায় রুশ ভাষা লেখা- কিচেন।
তিনি বলছেন, এই স্কুলে রুশ ভাষায় তিনি আরো অনেক লেখা দেখেছেন যা থেকে ধারণা করা যেতে পারে যে জঙ্গিদের অনেকে হয়তো চেচেন।
ফরাসী ভাষাতেও কিছু নাম লেখা। আছে ইংরেজিতে লেখা নামও। হয়তো তারা ইংরেজি ও ফরাসী ভাষী দেশ থেকে সিরিয়ায় গিয়ে ইসলামিক স্টেটে যোগ দিয়েছে।
এক জায়গায় আরবিতে স্প্যানিশ ফুটবল ক্লাব রেয়াল মাদ্রিদের নাম লেখা।
আরেকটি শ্রেণী কক্ষে দেখা গেছে সেখানে পদার্থবিদ্যা পড়ানো হতো।
শাদা বোর্ডে লেখা ছিলো গণিতের কিছু সূত্র ও সমীকরণ।
স্কুলে ফেলে যাওয়া যেসব বই পাওয়া গেছে সেগুলোর বেশিরভাগই আরবিতে লেখা, কোরান সংক্রান্ত ধর্মীয় বই।
পাওয়া গেছে সামরিক শিক্ষার পুস্তকও। বোমা হামলার সময় কোথায় কিভাবে আশ্রয় নিতে হবে তার বর্ণনা রয়েছে সেখানে।
একটি বড় আকারের পোস্টার পাওয়া গেছে স্কুলে যেখানে কি ধরনের অপরাধের জন্যে কি শাস্তি তার বিধান লেখা রয়েছে।
বলা হয়েছে, কেউ যদি সমকামী হয় তাহলে তাকে ভবনের উপর থেকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেওয়া হবে।
চুরি করলে হাত কেটে ফেলা হবে। অ্যালকোহল পান করলে শাস্তি।
আর যদি কেউ ইসলামিক স্টেটের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে তাহলে তার শাস্তি এবং – গলা কেটে তার মৃতদেহ প্রকাশ্যে ঝুলিয়ে রাখা।