অগ্রসর রিপোর্ট : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, সংবাদপত্রের স্বাধীনতার চেয়ে সাংবাদিকদের স্বাধীনতা বেশি জরুরি। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে দেখা যায়, যিনি মালিক হন তিনিই হয়ে যান সম্পাদক। এ কারণে চাইলেই সাংবাদিকেরা সবকিছু করতে পারছেন, তা তো নয়। তাই সাংবাদিকদের স্বাধীনতাই বেশি প্রয়োজন।
আজ বৃহস্পতিবার জাতীয় প্রেসক্লাবের ৬২তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী ও প্রেসক্লাবের ৩১তলা ভবনের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন।
শেখ হাসিনা বলেন, ট্রাস্ট গঠনে গণমাধ্যম মালিকদের পক্ষ থেকে তেমন কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি। শুধু একজন আমাকে ফোন করে ট্রাস্টে সহযোগিতার আশ্বাস দেন। আমি আশা করবো, ট্রাস্ট গঠনে মালিকপক্ষের সবাই এগিয়ে আসবেন।
বক্তব্যে মজা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাকে দিয়ে আজকে ৩১ তলা বঙ্গবন্ধু মিডিয়া কমপ্লেক্সের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করিয়েছেন, এখন আবার বলছেন টাকা দিতে। এখানে তো অনেকেই উপস্থিত আছেন যারা একাই এমন একটি কমপ্লেক্স করে দিতে পারেন।
তিনি বলেন, সংবাদপত্রকে এবং সাংবাদিকদের যত রকম সুবিধা দেয়া যায়, সব ব্যবস্থা আমরা করেছি। এতগুলো মিডিয়াতে কর্মসংস্থান হচ্ছে। উন্নয়নে অনেকগুলো পদক্ষেপ নিয়েছি। সেই ’৯৬ সাল থেকেই সাংবাদিকদের সহযোগিতার চিন্তা-ভাবনা আমরা করেছি। কল্যাণ ট্রাস্ট করেছি, আইন হয়েছে, ওয়েজ বোর্ড চলছে অষ্টমে আরো নানা কিছু।
তিনি আরো বলেন, টিভিতে রাতে যেসব টকশো হয় তা শুনলে মনে হয় না দেশে সাংবাদিকদের স্বাধীনতা নেই। আওয়ামী ক্ষমতায় আসলেই সাধারণ মানুষ কিছু না কিছু পায়। আপনারা সাংবাদিকরাও এর বাইরে নন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বর্তমানে নতুন প্রজন্ম সকালবেলা একটি ল্যাপটপ নিয়ে বসলেই বিশ্বের সব খবর পেয়ে যায়। কিন্ত আমরা পুরোনো যুগের মানুষ পত্রিকা ছাড়া চলে না। সকাল বেলা ঘুম থেকে উঠেই পত্রিকা এবং এককাপ চা ছাড়া আমাদের চলে না।’
প্রেসক্লাবের জায়গা নিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, এই জায়গাটা যাতে প্রেসক্লাব পায় এই ব্যবস্থা বঙ্গবন্ধু করেছেন। লিখিতভাবে প্রেসক্লাবের জমি লিজ দিয়েছিলেন তিনি। তাকে হত্যা করা হলো, এরপর থেকে আর উন্নতি সেভাবে হয়নি।
২০০১ সালের নির্বাচনের প্রেক্ষাপট তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, ওই সময় আমাদের জোর করে নির্বাচনে পরাজিত করা হয়েছিল। দেশের সম্পদ বিক্রি করতে চাইনি বলে আমাদের নির্বাচনে হারিয়ে দেওয়া হয়। একটি দেশ আমাদের সম্পদ তুলবে এবং আরেকটি দেশের কাছে তারা তা বিক্রি করবে, এটা কী করে হয়?
প্রেসক্লাবের সভাপতি শফিকুর রহমানের সভাপতিত্বে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু, প্রধানমন্ত্রীর তথ্য উপদেষ্টা ইকবাল সোবহান চৌধুরী, দৈনিক সমকালের সম্পাদক গোলাম সারওয়ার, প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক কামরুল ইসলাম চৌধুরী প্রমুখ।
অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন প্রেসক্লাবের সিনিয়র সহ-সভাপতি এবং বিএফইউজের সভাপতি মঞ্জুরুল আহসান বুলবুল।