অগ্রসর রিপোর্ট :পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষের জেরে জাতীয় প্রেসক্লাব ও তার আশপাশের এলাকায় থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করেছে। বন্ধ রয়েছে ওই এলাকায় যান চলাচল। ফলে আশপাশের এলাকায় যানজটের সৃষ্টি হয়েছে।
রবিবার বেলা ১১টার পর বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা ও সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের রাষ্ট্রীয় খেতাব বাতিলের প্রতিবাদে ছাত্রদলের কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে পুলিশের সঙ্গে এ সংঘর্ষ হয়। পুলিশের লাঠিচার্জে বিএনপি নেতা হাবিব উন নবী খান সোহেলসহ ছাত্রদলের বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন। আর ছাত্রদল নেতাকর্মীদের ইটপাটকেলের আঘাতে কয়েকজন পুলিশও আহত হয়েছেন। উভয়পক্ষের আহতদের মধ্যে বেশ কয়েকজনের মাথা ও নাক ফেটে গেছে।
এছাড়া পেশাগত দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে এটিএন বাংলার সিনিয়র ক্যামেরাম্যান মামুনসহ বেশ কয়েকজন গণমাধ্যমকর্মী গুরুতর আহত হয়েছেন।
গত ৯ ফেব্রুয়ারি জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিলের (জামুকা) ৭২তম সভায় জিয়াউর রহমানের ‘বীর উত্তম’ খেতাব বাতিলের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। ওই বৈঠকে জিয়াউর রহমান ছাড়াও বঙ্গবন্ধুর আত্মস্বীকৃত খুনি ও মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত পলাতক আসামি শরিফুল হক ডালিম, নুর চৌধুরী, রাশেদ চৌধুরী ও মোসলেহ উদ্দিন খানের খেতাবও বাতিলের সিদ্ধান্ত হয়।
জিয়াউর রহমানের খেতাব বাতিলে জামুকার সদস্য ও সাংসদ মোশাররফ হোসেনকে প্রধান করে তিন সদস্যের কমিটি গঠন করেছে জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল (জামুকা)। কমিটির অপর দুজন হলেন জামুকার সদস্য সাবেক নৌ পরিবহন মন্ত্রী শাজাহান খান ও মো. রশিদুল আলম।
অন্যদিকে শুরু থেকেই দলীয় প্রতিষ্ঠাতার রাষ্ট্রীয় খেতাব বাতিলের সিদ্ধান্তের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে আসছে বিএনপি। দলটির শীর্ষ নেতারা বলছেন, এ ধরনের সিদ্ধান্ত মুক্তিযুদ্ধকে কলঙ্কিত করার শামিল। সরকারকে এ সিদ্ধান্ত নেয়া থেকে বিরত থাকারও আহ্বান জানাচ্ছেন বিএনপিসহ দলটির অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতারা। এই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে আলাদা আলাদা করে কর্মসূচিও পালন করা হচ্ছে।
খেতাব বাতিলের উদ্যোগের পর থেকে অনেকটা নির্বিঘ্নে প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করলেও মাঝে প্রেসক্লাব এলাকায় এক কর্মসূচির শেষ বেলায় সংঘর্ষ হয়েছিল। পুলিশের কাছ থেকে আটককৃত ছাত্রদল কর্মীকে ছাড়িয়ে নেয়ার ঘটনাও ঘটেছিল।
আজকের কর্মসূচি সফল করতে সকাল থেকেই ছাত্রদলের বিপুলসংখ্যক নেতাকর্মী প্রেসক্লাব এলাকায় জড়ো হতে শুরু করেন। এতে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকার কথা ছিল।
জানা গেছে, পুলিশের পক্ষ থেকে অনুমতি ছাড়া কোনো কর্মসূচি করতে দেয়া হবে না এমনটা জানালে প্রথমে ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা প্রেসক্লাবের ভেতরে অবস্থান নেয়। পরে বিএনপি নেতা হাবিব উন নবী খান সোহেল প্রেসক্লাবে আসলে ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা গেটের বাইরে চলে আসতে শুরু করলে পুলিশ বাধা দেয়৷ এরপরই সংঘর্ষ শুরু হয়।
এদিকে সংঘর্ষ বন্ধ হলেও পুলিশ প্রেসক্লাবের ভেতরে, পাশের বিএমএ ভবনসহ আশপাশের এলাকায় ছাত্রদলের নেতাকর্মীদের খুঁজে খুঁজে বের করার চেষ্টা করছে।