অগ্রসর রিপোর্ট : পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম বলেছেন, বাংলাদেশ শান্তিরক্ষার বিধি প্রণয়নে জাতিসংঘে নিবিড়ভাবে কাজ করে যাচ্ছে।
জাতিসংঘ সদরদপ্তরে শান্তিরক্ষা কার্যক্রম সংক্রান্ত মন্ত্রী পর্যায়ের সভায় তিনি এ কথা বলেন।
জাতিসংঘে বাংলাদেশ স্থায়ী মিশনের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আজ জানানো হয়, গতকাল শুক্রবার অনুষ্ঠিত এ সভায় প্রতিমন্ত্রী জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে বাংলাদেশের ২৬টি প্রতিশ্রুতির কথা তুলে ধরেন।
শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে দ্রুত সাড়াদান প্রস্তুতি’র ক্ষেত্রে বাংলাদেশের পূর্ণ সামর্থ্যরে কথা তুলে ধরে শাহরিয়ার আলম বলেন, ‘শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে দ্রুত সাড়াদান প্রস্তুতি ব্যবস্থার অংশ হিসেবে বাংলাদেশ ২৬টি ক্ষেত্রে অর্থাৎ বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ৯টি, নৌবাহিনীর ৬টি, বিমান বাহিনীর ৩টি এবং বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনীর ৮টি ক্ষেত্রে জাতিসংঘকে প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। এছাড়া যুক্তরাষ্ট্রের সাথে অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে বাংলাদেশ মানুষবিহীন আকাশ নজরদারি ব্যবস্থার বিষয়েও একটি প্রতিশ্রুতির ঘোষণা দিয়েছে।
পিসকিপিং ইনিশিয়েটিভ, ২০১৪ সালে নিউইয়র্কস্থ পিসকিপিং মিনিস্ট্রিয়াল, ২০১৫ সালে নিউইয়র্কে, ২০১৬ তে প্যারিসে এবং ২০১৭তে ভ্যাঙ্কুভারে অনুষ্ঠিত দ্যা লিডার সামিট অন পিসকিপিং অনুযায়ী জাতিসংঘ এই মন্ত্রী পর্যায়ের সভার আহ্বান করে। জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস এতে উদ্বোধনী ভাষণ দেন।
মহান মুক্তিযুদ্ধে বাংলাদেশের জনগণের উপর ভয়াবহ সহিংসতার উদাহরণ টেনে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী বলেন, অসামরিক জনগণের সুরক্ষায় বাংলাদেশ কিগালী নীতি অনুসরণ করছে। শান্তিরক্ষীদের প্রশিক্ষণেও ‘অসামরিক নাগরিকদের সুরক্ষা’ বিষয়টি বিস্তারিতভাবে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
প্রতিমন্ত্রী শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে যৌন নিগ্রহ ও এর অপব্যবহার রোধে বাংলাদেশের ‘জিরো টলারেন্স’ নীতির কথা উল্লেখ করেন। জাতিসংঘের চাহিদা অনুযায়ী নারী শান্তিরক্ষী বৃদ্ধিতে বাংলাদেশের প্রতিশ্রুতির কথাও তিনি উল্লেখ করেন ।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, জাতিসংঘের নারী, শান্তি ও নিরাপত্তা এজেন্ডাসমূহ এগিয়ে নিতে বাংলাদেশ সর্বদাই সহায়ক ভূমিকা পালন করে চলেছে। প্রকৃতিগতভাবে শান্তি বিনির্মাণকারী হিসেবে নারীর ভূমিকা বৃদ্ধিতে সম্প্রতি জাতীয়ভাবে একটি কর্মপরিকল্পনার বাস্তবায়ন করেছে।
প্রতিমন্ত্রী শান্তিরক্ষীদের দায়িত্ব পালন এবং নিরাপত্তা ও সুরক্ষা নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে সম্পদের পর্যাপ্ততা ও অন্যান্য নিয়ামকের প্রয়োজনীয়তার উপর জোর দেন। এছাড়া তিনি বিভিন্ন শান্তিরক্ষা মিশনে সরবরাহকৃত বাংলাদেশের আধুনিক সামরিক সরঞ্জামাদির কথাও উল্লেখ করেন।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান অনুসৃত পররাষ্ট্র নীতি অনুযায়ী জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে বাংলাদেশের অংশগ্রহণের ক্ষেত্রে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রদত্ত প্রতিশ্রুতির কথাও এ সভায় তিনি তুলে ধরেন।
পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর নেতৃত্বে বাংলাদেশের শসস্ত্র বাহিনী বিভাগ, পুলিশ ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের সমন্বয়ে গঠিত একটি প্রতিনিধিদল এ সভায় যোগ দেয়।