অব্যাহত দর পতনের পর গত সপ্তাহের শেষ দুই কার্যদিবসে অধিকাংশ শেয়ারের দর বেড়েছে। তালিকাভুক্ত ৭৪ শতাংশ কোম্পানির শেয়ারদর কমবেশি বেড়েছে। এর মধ্যে অর্ধশত কোম্পানির শেয়ারদর বেড়েছে ৫ থেকে ১৭ শতাংশ। বাজার সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন, লাগাতার দর পতনের পর এটা ঘুরে দাঁড়ানোর লক্ষণ।
এর কারণ ব্যাখ্যায় বিভিন্ন ব্রোকারেজ হাউসের কর্মকর্তারা জানান, দুই মাসেরও কম সময়ের দর পতনে অনেকে ২০ থেকে ৫০ শতাংশ পুঁজি হারিয়েছেন। তবে এমন দর পতনেও কোনো শেয়ারই ক্রেতাশূন্য হয়নি। অর্থাৎ, প্রতিদিনই কিছু বিনিয়োগকারীর মধ্যে এ আশা আছে– বাজার ঘুরে দাঁড়াবে। এটাই আশার ব্যাপার।
পর্যালোচনায় দেখা গেছে, গত দুই কার্যদিবসে যেসব শেয়ারের দর তুলনামূলক বেশি বেড়েছে, সেগুলোর অধিকাংশই দুর্বল মৌল ভিত্তির। আবার শেয়ারদর বৃদ্ধির সঙ্গে সূচক বাড়লেও টাকার অঙ্কে লেনদেনে উন্নতি নেই। গত ১২ ফেব্রুয়ারি এ দফার দর পতনের আগের দিনও ১ হাজার ৮৫২ কোটি টাকার শেয়ার কেনাবেচা হয়। বৃহস্পতিবার ওই লেনদেনই ৪৩৬ কোটি টাকায় নেমে এসেছিল।
এর ব্যাখ্যায় বিভিন্ন ব্রোকারেজ হাউসের কর্মকর্তা জানান, টানা দর পতনের মধ্যে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে আস্থার সংকট থাকাই স্বাভাবিক। দর বৃদ্ধির এ ধারা টিকবে কিনা, তা পর্যবেক্ষণ করছেন অনেকে। সামান্য মুনাফা পেলেই নিয়েছেন কেউ কেউ। বিনিয়োগকারীদের মধ্যে যখন এ ভাবনা ক্রমশ বাড়বে, এখন বিনিয়োগ করে লোকসান হবে না, বরং কমবেশি মুনাফা হবে, তখনই টাকার অঙ্কে বিনিয়োগ বাড়বে।
লোকসানে থাকা শেয়ারগুলোর দর না বাড়লে অনেকের পক্ষে নতুন করে শেয়ার কেনাবেচা করা সম্ভব হবে না বলে মনে করছেন শীর্ষ এক মার্চেন্ট ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক। তিনি বলেন, এর মধ্যেও কেউ কেউ নতুন করে শেয়ার কিনে লোকসান পুষিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করবেন। এতে লেনদেন বাড়বে। আর যারা স্মার্ট বিনিয়োগকারী, তারা এ সুযোগে নতুন করে কিছু বেশি মুনাফা করে নেবেন।
গত মঙ্গলবারের সমাপনী মূল্যের সঙ্গে বৃহস্পতিবারের সমাপনী মূল্যের তুলনায় দেখা গেছে, ৪৯ শেয়ারের দর ৫ শতাংশের ওপর বেড়েছে। তবে মঙ্গলবারের সর্বনিম্ন দরের সঙ্গে বৃহস্পতিবারের সর্বোচ্চ দরের তুলনায় দেখা গেছে, এ সংখ্যা ২০৫টি। এ হিসাবে উত্তরা ফাইন্যান্স এবং এক্মি প্রেসটিসাইডস ছাড়া লেনদেন হওয়া সব শেয়ারের দর বেড়েছে।
সমাপনী মূল্যের হিসাবে এ সময়ে সর্বাধিক প্রায় ২০ শতাংশ দর বেড়েছে মেট্রো স্পিনিংয়ের। গত ৮ ফেব্রুয়ারি ২৪ টাকা ৯০ পয়সায় ওঠার পর ক্রমাগত ২ এপ্রিল পর্যন্ত টানা দর হারিয়ে ১৭ টাকায় নেমেছিল। গত দু’দিনে দর বেড়ে ফের ২১ টাকা ২০ পয়সায় উঠেছে।
এভাবে ১০ থেকে ১৪ শতাংশ পর্যন্ত দর বেড়েছে মালেক স্পিনিং, সিএনএটেপ, ড্রাগন সোয়েটার, কাট্টলী টেক্সটাইল, আলিফ ম্যানুফ্যাকচারিং, আলিফ ইন্ডাস্ট্রিজ, জুট স্পিনার্স, ভিএফএস থ্রেড, ইয়াকিন পলিমার, কুইন সাউথ টেক্সটাইল, কেডিএস লিমিটেড এবং বিকন ফার্মা।