অগ্রসর রিপোর্ট: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, রোহিঙ্গা সমস্যা মিয়ানমারের সৃষ্টি, তাদেরকেই এই সমস্যার সমাধান করতে হবে।
তিনি বলেন, ‘এ সমস্যা মিয়ানমার তৈরি করেছে, তাদেরকেই এর সমাধান করতে হবে। অবশ্যই মিয়ানমারকে তাদের নাগরিকদের নিজ বাসভূমিতে ফেরত নিতে হবে।’
তিনি আজ সংসদে রোহিঙ্গা নির্যাতন বন্ধ ও বাংলাদেশ আশ্রয় নেয়া মিয়ানমারের নাগরিকদের সেদেশে ফেরত নিতে জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক মহলের চাপ প্রয়োগের প্রস্তাব সম্বলিত সংসদ কার্যপ্রণালী বিধির ১৪৭ (১) বিধির অধীনে আনীত প্রস্তাবের উপর আলোচনায় অংশ নিয়ে এসব কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, রোহিঙ্গারা যে মিয়ানমারেরই নাগরিক এটা সকলেরই জানা। তাদের এক সময় ভোটের অধিকারসহ সব কিছু ছিল। ১৯৮২ সালে তাদের এই অধিকার কেড়ে নেয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়। একটি জাতির প্রতি মিয়ানমার সরকার কেন এধরনের আচরণ করছে এটা আমাদের বোধগম্য নয়। এ ব্যাপারে আমরা বরাবরই প্রতিবাদ করে যাচ্ছি।
তিনি বলেন, রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনের ব্যাপারে বাংলাদেশ মিয়ানমারের সাথে কূটনৈতিক তৎপরতা অব্যাহত রেখেছে।
শেখ হাসিনা বলেন, সেখানে একটি সন্ত্রাসী গ্রুপ আর্মি ও সীমান্ত রক্ষী বাহিনীর উপর হামলাকে কেন্দ্র করে নারী-শিশুদের উপর অমানবিক নির্যাতন শুরু হয়।
সংসদ নেতা বলেন, এতোগুলো মানুষকে এখানে রাখা আমাদের জন্য অত্যন্ত কঠিন বিষয়। কিন্তু মানবিক কারণে আমরা তাদের আশ্রয় দিয়েছি। তারা তাদের নিজ ভূমিতে ফেরত যাবে এটাই কামনা করছি। সকলের সঙ্গে বন্ধুত্ব, কারো সাথে বৈরিতা নয়, এই নীতিতে আমরা বিশ্বাস করি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, কোনো সন্ত্রাসী গ্রুপকে এদেশের ভূমি ব্যবহার করে অন্য কোনো দেশে সন্ত্রাস চালাতে দেয়া হবে না। আমরা এ ব্যাপারে সব সময় সচেষ্ট রয়েছি। এ ব্যাপারে আমরা নিজেরাও ভুক্তভোগী। একসময় পার্বত্য এলাকার সমস্যা সমাধানে সামরিক বাহিনীকে ব্যবহার করা হয়েছে। কিন্তু আওয়ামী লীগ ১৯৯৬ সালে সরকার গঠনের পর পার্বত্য এলাকায় শান্তি প্রতিষ্ঠা করতে ‘শান্তি চুক্তি’ করা হয়। তখন ওই এলাকার যারা ভারতে শরণার্থী হিসেবে ছিল তাদের সবাইকে ফেরত আনা হয়।
তিনি বলেন, ‘ধর্মীয়ভাবে নয় রোহিঙ্গাদের মানবিক কারণে এদেশে আশ্রয় দেয়া হয়েছে। ছোট শিশু, নারী, বৃদ্ধদের প্রতি আমরা অমানবিক হতে পারি না।’
মিয়ানমারে যারা আর্মি ক্যাম্পে হামলা করছে তাদের উদ্দেশে শেখ হাসিনা বলেন, তাদের সন্ত্রাসী কর্মকান্ডের ফলে লাখ লাখ মানুষ বাস্তুহারা হচ্ছে। নারী শিশুদের নির্বিচারে হত্যা করা হচ্ছে। বাংলাদেশের মাটিতে যারা আশ্রয় নিয়েছে তাদের অবশ্যই ফেরত নিতে হবে। তাদের জন্য নিরাপদ আবাসস্থল প্রয়োজনে ‘সেইফ জোন’ প্রতিষ্ঠা করতে হবে এবং কফি আনান কমিশনের রিপোর্ট বাস্তবায়ন করতে হবে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, যারা এসেছে তাদের ছবিসহ পরিচয়পত্র দেয়া হবে। যাতে তাদের সঠিকভাবে ফেরত পাঠানো যায়।
এই সমস্যাকে নিয়ে কেউ যাতে রাজনীতি না করে এ আহ্বান জানিয়ে সংসদ নেতা বলেন, ১৬ কোটি মানুষকে খাদ্য ও বাসস্থানের ব্যবস্থা করতে পারলে ৫ লাখ মানুষেরও খাদ্য যোগাতে আমরা পারব।
প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।