অগ্রসর রিপোর্ট :
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশ থেকে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের তাদের নিজ দেশে ফিরিয়ে নিতে মায়ানমারকে চাপ দেয়ার জন্য ইউএনএইচসিআরসহ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
গতকাল সন্ধ্যায় শেখ হাসিনার সঙ্গে তাঁর জাতীয় সংসদ ভবনস্থ কার্যালয়ে সফররত জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক হাইকমিশনার ফিলিপ্পো গ্র্যান্ডির সাক্ষাৎকালে প্রধানমন্ত্রী বলেন, শুধুমাত্র মিয়ানমারের শরণার্থীদের তাদের মাতৃভূমিতে ‘টেকসই প্রত্যাবর্তন’-এর মাধ্যমে দীর্ঘদিনের শরণার্থী সমস্যার সমাধান করা সম্ভব।
বৈঠক শেষে প্রধানমন্ত্রীকে উদ্ধৃত করে প্রেস সচিব ইহসানুল করিম সাংবাদিকদের বলেন, ‘বাংলাদেশ থেকে মায়ানমারের শরণার্থীদের প্রত্যাবাসনের জন্য মায়ানমারের উচিত একটি উপযুক্ত পরিবেশ সৃষ্টি করা।’
তিনি বলেন, মায়ানমারের শরণার্থী সমস্যা অধিক জনসংখ্যার বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক পরিস্থিতির উপর চাপ সৃষ্টি করেছে।
শেখ হাসিনা বলেন, তাঁর সরকার মায়ানমারের শরণার্থীদের পুনর্বাসনের জন্য কয়েকটি দ্বীপ এলাকা চিহ্নিত করে তাদের জন্য সেখানে প্রয়োজনীয় অবকাঠামো, আশ্রয়, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও হাসপাতাল নির্মাণের পরিকল্পনা করেছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চলে বিদ্রোহের সমস্যা ছিল, কিন্তু দ্বিপাক্ষিক আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে সে সমস্যার সমাধান করা হয়েছে।
তিনি বলেন, ‘ভারতে শরণার্থী হিসাবে যাওয়া আমাদের নাগরিকদের আমরা ফেরত এনেছি।’
প্রধানমন্ত্রী দৃঢ়তার সঙ্গে পুনরুল্লেখ করেন যে, প্রতিবেশী দেশগুলোতে কোন ধরনের বিচ্ছিন্নতাবাদী বা সন্ত্রাসী কর্মকান্ড চালানোর জন্য কাউকে বাংলাদেশের মাটি ব্যবহার করতে দেয়া হবে না।
তিনি বলেন, মায়ানমারসহ প্রতিবেশী দেশগুলোর সাথে বাংলাদেশের সুসম্পর্ক রয়েছে।
মায়ানমারের নিরাপত্তা উপদেষ্টার বাংলাদেশ সফরের কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, উভয় দেশ অর্থনৈতিক উন্নয়নের ব্যাপারে আলাপ-আলোচনা অব্যাহত রেখেছে।
জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক হাইকমিশনার শরণার্থী সমস্যা সমাধানে বাংলাদেশকে সম্ভাব্য সহায়তার আশ্বাস দেন।
মায়ানমারের বিপুল সংখ্যক শরণার্থীকে আশ্রয়দানের মাধ্যমে ত্যাগ স্বীকারের জন্য ফিলিপ্পো গ্র্যান্ডি বাংলাদেশের প্রতি গভীর কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
তিনি বলেন, ‘রোহিঙ্গা শরণার্থীদের জন্য বাংলাদেশ যে ত্যাগ স্বীকার করছে তার পূর্ণ স্বীকৃতির প্রয়োজন রয়েছে।’
এ সময় অন্যান্যের মধ্যে প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব ড. কামাল আবদুল নাসের চৌধুরী এবং বাংলাদেশে ইউএনএইচসিআর-এর কান্ট্রি রিপ্রেজেনটেটিভ শিনজি কুবো উপস্থিত ছিলেন।