অগ্রসর রিপোর্ট: ২০১৯ সালের জুলাইয়ে যখন তুরস্ক অত্যাধুনিক ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষাব্যবস্থা এস-৪০০‘র প্রথম চালান হাতে পায় তার পর থেকেই দীর্ঘ দিনের মিত্র দেশের সাথে সম্পর্কের অবনতি ঘটাতে থাকে যুক্তরাষ্ট্রের। এর জন্য তুরস্কের প্রতিরক্ষা শিল্পের ওপর অর্থনৈতিক ও প্রযুক্তিগত নিষেধাজ্ঞাও দিয়েছিলো যুক্তরাষ্ট্র। পাশাপাশি ন্যাটো সদস্য হওয়া সত্ত্বেও তুরস্ককে এফ-৩৫ যুদ্ধবিমান তৈরির যৌথ কর্মসূচি থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়।
বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, ইউক্রেনে রুশ হামলা ঠেকাতে রাশিয়ারই তৈরি অত্যাধুনিক ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষাব্যবস্থা এস-৪০০ ব্যবহার করতে চাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র!
প্রতিবেদনে বলা হয়, চলতি মাসের শুরুতে মার্কিন পররাষ্ট্র উপমন্ত্রী ওয়েন্ডি শেরম্যানের তুরস্ক সফরের সময় এ বিষয়টি সামনে আনা হয়। তুরস্কের কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনায় শেরম্যান ইউক্রেনের সমর্থনে আমেরিকা ও মিত্ররা কীভাবে কাজ করতে পারে এবং ওয়াশিংটন ও আঙ্কাকার মধ্যে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক কীভাবে উন্নত করা যায়, সেসব বিষয়ে কথা বলেছেন। তবে এস-৪০০ ব্যবস্থা ইউক্রেনে ব্যবহারের বিষয়ে তুর্কি কর্মকর্তারা তাৎক্ষণিকভাবে রয়টার্সের কাছে কোনো মন্তব্য করেননি।
গত ৫ মার্চ শেরম্যান তুর্কি সংবাদমাধ্যম হাবেরতুর্ককে বলেন, ‘এটা সবাই জানেন যে, তুরস্কের সঙ্গে এস-৪০০ নিয়ে আমেরিকার মতবিরোধ আছে। তবে এ সমস্যা সমাধানে নতুন পথ বের করা যেতে পারে।’
ফেলাডেলফিয়ার পররাষ্ট্রনীতি গবেষণা ইনস্টিটিউটের পরিচালক অ্যারন স্টেইন রয়টার্সকে বলেন, ‘তুরস্ক যেন ধারালো ছুরির ওপর দিয়ে হাঁটছে। যদি এস-৪০০ ইউক্রেনে পাঠানো হয়, তাহলে নিঃসন্দেহে তারা মস্কোর রোষানলে পড়বে। এরদোগানের কাছে রাশিয়ার ‘এস-৪০০’ তুরস্কের সার্বভৌমত্বের প্রতীক। তাই এটি হস্তান্তর আঙ্কারার জন্য সহজ হবে না।’
আমেরিকার তীব্র বিরোধিতা সত্ত্বেও ২০১৯ সালের জুলাই মাসে রাশিয়ার কাছ থেকে প্রথম দফা এস-৪০০ ব্যবস্থা গ্রহণ করে তুরস্ক। ২০১৭ সালের ডিসেম্বরে তুরস্ক ও রাশিয়ার মধ্যে এই ব্যবস্থা কেনার ব্যাপারে চুক্তি সই হয়। এস-৪০০ ব্যবস্থায় পাঁচ থেকে ৬০ কিলোমিটার দূরত্বে শত্রুর যেকোনো লক্ষ্যবস্তু শনাক্ত করে তাতে একযোগে ৭২টি ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করার ব্যবস্থা রয়েছে।
তুরস্ক যদি আমেরিকার চাপে ইউক্রেনে এস-৪০০ মোতায়েন করে তাহলে রাশিয়া থেকে ‘এস-৪০০’র দ্বিতীয় চালান নেওয়ার প্রক্রিয়াও যে সঙ্গে সঙ্গে থেমে যাবে তা বলাই বাহুল্য। এ ছাড়াও, রাশিয়ার তৈরি এমন অত্যাধুনিক প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা রাশিয়ার বিরুদ্ধে ব্যবহার করা যাবে কিনা তা নিয়েও প্রশ্ন আছে।