যশোর প্রতিনিধি- যশোর জেলা বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের খুলনা বিভাগের একটি প্রশাসনিক ও রাজনৈতিক গুরুত্বসম্পন্ন অঞ্চল। এর অন্য একটি প্রচলিত বানান যশোহর। ব্রিটিশ আমলে খুলনা ছিল যশোর জেলার অধিভুক্ত একটি মহুকুমা।
যশোর একটি অতি প্রাচীন জনপদ। প্রায় সাড়ে তিন হাজার বছর পূর্বে মিশরীয়রা ভৈরব নদের তীরে এক সমৃদ্ধ বাণিজ্য কেন্দ্র গড়ে তোলে। আনুমানিক ১৪৫০ খ্রীস্টাব্দের দিকে পীর খান জাহান আলী সহ বারজন আউলিয়া যশোরের মুড়লীতে ইসলাম ধর্ম প্রচারের প্রধান কেন্দ্র স্থাপন করেন। ক্রমে এ স্থানে মুড়লী কসবা নামে একটি নতুন শহর গড়ে উঠে। ১৫৫৫ খ্রীস্টাব্দের দিকে যশোর রাজ্য প্রতিষ্ঠিত হয়। যশোর-খুলনা বনগাঁ এবং কুষ্টিয়া ও ফরিদপুরের অংশ বিশেষ যশোর রাজ্যের অন্তভুর্ক্ত ছিলো। ১৭৪৭ খ্রীস্টাব্দের দিকে যশোর নাটোরের রাণী ভবানীর রাজ্যের অন্তভুর্ক্ত হয়। ১৭৮১ খৃষ্টাব্দে যশোর একটি পৃথক জেলা হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে এবং এটিই হচ্ছে বাংলাদেশের প্রথম জেলা। ১৮৬৪ সালে ঘোষিত হয় যশোর পৌরসভা। ১৮৩৮ খৃষ্টাব্দে যশোর জিলা স্কুল, ১৮৫৪ খৃষ্টাব্দে যশোর পাবলিক লাইব্রেরি, বিংশ শতাব্দীর তৃতীয় ও চতুর্থ দশকে যশোর বিমান বন্দর এবং ঊনবিংশ শতাব্দীর গোড়ার দিকে কলকাতার সাথে যশোরের রেল-যোগাযোগ প্রতিষ্ঠিত হয়। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের প্রথম স্বাধীন হওয়া জেলাটি যশোর।বাংলাদেশের ৬৪ টি জেলার মধ্যে যশোর এমন একটি জেলা যেটি শুধু অর্থনীতিই নয় বরং ২টি জেলার মধ্যে একটি যে সকল দিক থেকে স্বয়ংসম্পূর্ণ।
যশোরের অর্থনীতির অন্যতম প্রধান নিয়ামক বেনাপোল স্থল বন্দর যা শার্শা উপজেলার সীমান্তবর্তী গ্রাম বেনাপোলে অবস্থিত। ভারত-বাংলাদেশ বাণিজ্যের সিংহভাগ এর মাধ্যমে সংঘটিত হয়। ওপারে আছে পেট্রাপোল। সরকারি আমদানী শুল্ক আহরণে বেনাপোল স্থল বন্দরটির ভূমিকা তাৎপর্যপূর্ণ। এখানকার মানুষের জীবিকার অন্যতম সূত্র বেনাপোল স্থল বন্দরের কাস্টমস্ ক্লিয়ারিং এজেন্টের কাজ।