অগ্রসর রিপোর্ট: ঘূর্ণিঝড় মোখায় ক্ষতিগ্রস্তদের ঘরবাড়ি দ্রুত মেরামত করা হবে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
সোমবার বিকালে সদ্য সমাপ্ত জাপান, যুক্তরাষ্ট্র এবং যুক্তরাজ্য সফর নিয়ে সংবাদ সম্মেলনের শুরুতেই একথা বলেন প্রধানমন্ত্রী।
সোমবার বিকাল ৪টায় তার সরকারি বাসভবন গণভবনে এই সংবাদ সম্মেলন চলছিল। প্রধানমন্ত্রী তিন দেশ সফল নিয়ে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন।
রাষ্ট্রীয় সম্প্রচারমাধ্যম ও বেসরকারি টেলিভিশনগুলোতে এই সংবাদ সম্মেলন সরাসরি সম্প্রচার করা হচ্ছে। সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সরকারের মন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের জ্যেষ্ঠ নেতারাও উপস্থিত আছেন। জ্যেষ্ঠ সাংবাদিকরাও উপস্থিত আছেন।
গত শনিবার দিবাগত রাত থেকে রবিবার রাত পর্যন্ত বাংলাদেশের কক্সবাজার উপকূল ছুয়ে যায় অতিপ্রবল ঘূর্ণিঝড় মোখা। এতে টেকনাফ ও সেন্টমার্টিনে ২ হাজারের মতো ঘর সম্পূর্ণ বিধ্বস্ত হয়েছে। ১০ হাজারের বেশি বাড়ি আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
মোখার ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি থেকে দেশ রক্ষা পেয়েছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ক্ষতিগ্রস্তদের ঘরবাড়ি দ্রুত মেরামত করা হবে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ত্রিদেশীয় সফরের অংশ হিসেবে প্রথম ধাপে গত ২৫ এপ্রিল টোকিওর উদ্দেশে ঢাকা ত্যাগ করেন। তিনি তার জাপানি সমকক্ষ ফুমিও কিসিদার আমন্ত্রণে জাপান সফরে গিয়েছিলেন।
টোকিওতে অবস্থানকালীন শেখ হাসিনা এবং তার জাপানি সমকক্ষ কৃষি, মেট্রো-রেল, শিল্প-উন্নয়ন, জাহাজ-রিসাইক্লিং, কাস্টমস বিষয়, মেধা সম্পদ, প্রতিরক্ষা, আইসিটি এবং সাইবার নিরাপত্তা ইত্যাদি খাতে সহযোগিতা বাড়াতে ঢাকা ও টোকিওর মধ্যে স্বাক্ষরিত আটটি চুক্তি বিনিময় প্রত্যক্ষ করেন, যার বেশিরভাগই সমঝোতা স্মারক।
শেখ হাসিনা জাপানের সম্রাট নারুহিতোর সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ এবং তার জাপানি সমকক্ষ ফুমিও কিশিদার সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করেন।
প্রধানমন্ত্রী ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধে অবদানের জন্য গত ২৭ এপ্রিল চার জাপানি নাগরিকের কাছে ‘ফ্রেন্ডস অফ লিবারেশন ওয়ার অনার’ হস্তান্তরের পাশাপাশি একটি বিনিয়োগ শীর্ষ সম্মেলন এবং কমিউনিটি সংবর্ধনায়ও যোগ দেন।
তিনি একইসঙ্গে, জাপানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইয়োশিমাসা হায়াশির পাশাপাশি জাইকা, জেইটিআরও, জেইবিআইসি, জেবিপিএফএল এবং জেবিসিসিসিইসি-এর নেতাদের সাথে বেশ কয়েকটি দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে অংশ নেন।
সফরের দ্বিতীয় ধাপে ওয়াশিংটন ডিসিতে, প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশ-বিশ্বব্যাংক অংশীদারিত্বের ৫০ বছর উপলক্ষে একটি অনুষ্ঠানে অংশ নেন। পাশাপাশি, তিনি মার্কিন ব্যবসায়ী নেতাদের সাথে একটি গোলটেবিল বৈঠক এবং বিশ্বব্যাংকের নতুন প্রেসিডেন্ট অজয় বঙ্গ ও আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ক্রিস্টালিনা জর্জিভারের সাথে পৃথক বৈঠকে অংশ নেন। এছাড়া তিনি একটি নাগরিক সংবর্ধনায়ও যোগ দেন।
লন্ডনে তার সফরের তৃতীয় ধাপে, প্রধানমন্ত্রী ওয়াশিংটন ডিসি থেকে যুক্তরাজ্য এবং অন্যান্য কমনওয়েলথ রাজ্যের রাজা ও রানী হিসেবে চার্লস তৃতীয় এবং তার পত্নী ক্যামিলার রাজ্যাভিষেক অনুষ্ঠানে যোগদান করেন।
লন্ডনে শেখ হাসিনা রাজা তৃতীয় চার্লসের সঙ্গে মতবিনিময় করেন এবং ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাকের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করেন।
ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী জেমস ক্লিভারলি এবং তার স্ত্রী সুসানা স্পার্কস ও লন্ডনের ক্লারিজ হোটেলে তাঁর অবস্থানস্থলে সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন।
তিনি সেখানে ভুটানের রাজা জিগমে খেসার নামগেল ওয়াংচুক এবং রানী জেসুন পেমার সাথে বৈঠক করেন।
সাবেক ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী টনি ব্লেয়ার এবং কমনওয়েলথ মহাসচিব ব্যারনেস প্যাট্রিসিয়া স্কটল্যান্ডও বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে তার অবস্থানস্থলে সাক্ষাৎ করেন।
দিন দেশ সফর শেষে গত ৯ মে দেশে ফিরেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।