তুরস্কের প্রেসিডেন্ট এরদোয়ান যখন দেশটিতে অভ্যুত্থান চেষ্টার পর আবারো মৃত্যুদণ্ড ফিরিয়ে আনার কথা বলছেন, তখন ইউরোপের নেতারা বলছেন মৃত্যুদণ্ড ফিরিয়ে আনলে তুরস্কের ইইউতে যোগ দেয়ার উচ্চাকাঙ্ক্ষা সেখানেই শেষ হয়ে যাবে।
তুরস্কের ব্যর্থ অভ্যুত্থান চেষ্টার পর দেশটির প্রেসিডেন্ট রেসেপ তায়েপ এরদোয়ান তার প্রতিপক্ষের প্রতি কঠোর ব্যবস্থা নিচ্ছেন বলে যে কথা উঠছে তাকে কুৎসা বলে উল্লেখ করেছেন মি. এরদোয়ান।
সিএনএন কে দেয়া এক সাক্ষাতকারে তিনি দেশটিতে মৃত্যুদণ্ড পুনরায় চালু করার ব্যাপারে তার ইচ্ছা প্রকাশ করেন।
এদিকে ইউরোপের নেতারা সর্তক করে বলেছেন তুরস্ক যদি মৃত্যুদণ্ড ফিরিয়ে আনে তাহলে ইইউ-তে যোগ দেয়ার আশা তাদের জন্য শেষ হয়ে যাবে।
মার্কিন টেলিভিশন সিএনএন কে দেয়া সাক্ষাতকারে মৃত্যুদণ্ড প্রসঙ্গে প্রেসিডেন্ট এরদোয়ান বলেছেন “মানুষজন বলে কেন তাদেরকে আমি বছরের পর বছর জেলখানায় রেখে খাওয়াবে”?
তিনি বলেন “মানুষ এই অবস্থার দ্রুত অবসান চায় কারণ তারা আত্মীয়, পরিবার এবং শিশুদের হারিয়েছে। মানুষ খুব সংবেদনশীল হয়ে আছে তাই আমাদেরকেও বাস্তবসম্মত ও সংবেদনশীল আচরণ করতে হবে”।
এসব কারণেই তুরস্কের পশ্চিমা মিত্ররা উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেছেন প্রেসিডেন্ট এরদোয়ানের এই ঘটনায় পর পরিমিত প্রতিক্রিয়া দেখানো উচিত। জার্মান চ্যান্সেলর এঙ্গেলা মেরকেল সহ ইউরোপের নেতারা বলছেন যদি
তুরস্ক আবার মৃত্যুদণ্ড চালু করে তাহলে ইউরোপিয় ইউনিয়নে যোগ দেয়ার তাদের যে উচ্চাকাঙ্ক্ষা রয়েছে সেটা ওখানেই শেষ হয়ে যাবে।
এদিকে এই ক্যু প্রচেষ্টার পিছনে ফেতুল্লাহ গুলেনের মদদ আছে কি নেই সে প্রসঙ্গে তুরস্কের প্রধানমন্ত্রী বিনালি ইলদিরিম বলেছেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র যদি প্রমাণ চাইতে থাকে তাহলে তাদের সাথে তুরস্কের সম্পর্ক পূর্নমূল্যায়ন করতে হবে।
তিনি বলছিলেন “এই গুপ্তঘাতকরা একটি নির্বাচিত সরকারকে সরাতে চেয়েছিল”।
তিনি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে এসময় ইঙ্গিত করে বলেন “যদি আমাদের বন্ধুর এ ব্যাপারে প্রমাণের দরকার হয় তাহলে আমাদের বন্ধুর সাথে সম্পর্কের বিষয়টি আমাদের আবারো ভাবতে হবে”।
এদিকে মি. এরদোয়ান সিএনএন এর সাক্ষাতকারে এসব মন্তব্য এমন এক সময়ে করলেন যখন তার বিরুদ্ধে প্রতিপক্ষদের দমনে অভিযোগ উঠছে।
কারণ অভ্যুত্থান চেষ্টা ব্যর্থ হওয়ার পর স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয় প্রায় ৯ হাজার পুলিশ কর্মকর্তাকে বরখাস্ত করেছে, ছয় হাজার সেনা সদস্যকে আটক করেছে এবং ৩ হাজারের মত বিচারককে চাকরীচ্যুত করা হয়েছে।