মৃত্যুদণ্ড বহাল রেখে হাইকোর্টের দেয়া রায়ের বিরুদ্ধে ওই ২ জঙ্গির আপিল শুনানি করে আজ মঙ্গলবার প্রধান বিচারপতি এসকে সিনহার নেতৃত্বাধীন ৪ বিচারকের আপিল বিভাগ রায়ের এই দিন ঠিক করে দেয়। বেঞ্চের অপর তিন সদস্য হলেন- বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন, বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী এবং বিচারপতি মির্জা হোসেইন হায়দার।
এর আগে গত ৩০ নভেম্বর প্রথম দিনের শুনানি শেষে ৬ ডিসেম্বর পরবর্তী তারিখ রেখেছিল আপিল বিভাগ।
আদালতে আসামিদের পক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ আলী। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল মুরাদ রেজা।
সিলেটে হযরত শাহজালালের মাজার প্রাঙ্গণে ২০০৪ সালের ২১ মে ব্রিটিশ হাইকমিশনার আনোয়ার চৌধুরী গ্রেনেড হামলার মুখে পড়েন। এতে ঘটনাস্থলেই পুলিশের এএসআই কামাল উদ্দিন নিহত হন। এ ছাড়া পুলিশ কনস্টেবল রুবেল আহমেদ ও হাবিল মিয়া নামের আরেক ব্যক্তি মারা যান হাসপাতালে।
আনোয়ার চৌধুরী ও সিলেটের জেলা প্রশাসকসহ অন্তত ৪০ জন ওই ঘটনায় আহত হন। পুলিশ ওইদিনই সিলেট কোতোয়ালি থানায় অজ্ঞাতপরিচয় আসামিদের বিরুদ্ধে মামলা করে। তদন্ত শেষে ২০০৭ সালের ৭ জুন হরকাতুল জিহাদ নেতা মুফতি আবদুল হান্নান, তার ভাই মহিবুল্লাহ ওরফে মফিজুর রহমান ওরফে মফিজ ওরফে অভি, শরীফ শাহেদুল আলম ওরফে বিপুল ও দেলোয়ার ওরফে রিপনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেয়া হয়।
যথাযথ ঠিকানা না থাকায় মুফতি মঈন উদ্দিন ওরফে আবু জান্দাল ওরফে মাসুম বিল্লাহ ওরফে খাজার নাম প্রথমে বাদ দেয়া হলেও পরে তাকে যুক্ত করে সম্পূরক অভিযোগপত্র দেয় পুলিশ। ওই বছর নভেম্বরে হয় অভিযোগ গঠন।
৫৬ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে ২০০৮ সালের ২৩ ডিসেম্বর সিলেটের দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক সামীম মো. আফজাল রায় ঘোষণা করেন। আসামিদের মধ্যে মুফতি হান্নান, বিপুল ও রিপনকে মৃত্যুদণ্ড এবং মহিবুল্লাহ ও আবু জান্দালকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
ওই রায়ের বিরুদ্ধে আসামিপক্ষের আপিল ও ডেথ রেফারেন্সের (মুত্যুদণ্ড অনুমোদনের আবেদন) শুনানি শেষে চলতি বছর ১১ ফেব্রুয়ারি রায় দেয় বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি আমির হোসেনের হাইকোর্ট বেঞ্চ।
তাতে আসামিদের আপিল খারিজ হয়ে যায়, মুফতি হান্নানসহ ৩ আসামির মৃত্যুদণ্ড এবং দু’জনের যাবজ্জীবন দণ্ড বহাল থাকে।
কারাগারে থাকা ৫ আসামির মধ্যে মুফতি হান্নান ও বিপুল হাইকোর্টের রায়ের প্রত্যায়িত অনুলিপি হাতে পাওয়ার পর গত ১৪ জুলাই আপিল করেন।