অগ্রসর রিপোর্ট: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নিতে মিয়ানমারের ওপর চাপ অব্যাহত রাখার জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি পুনরায় আহবান জানিয়েছেন। বুধবার বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (হু-এসইএআরও) আঞ্চলিক প্রধান তাঁর সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে গেলে তিনি এ আহবান জানান।
প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম পরে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন। তিনি জানান, প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, ‘মানবতার দিক বিবেচনা করে বাংলাদেশ ১০ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দিয়েছে। কিন্তু তাদের প্রত্যাবাসনের ব্যাপারে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের চাপ অবশ্যই রাখতে হবে।’
তিনি বলেন, এই সংকট নিরসনে বাংলাদেশ বিশেষ করে মিয়ানমারের সীমান্ত সংলগ্ন প্রতিবেশী পাঁচটি দেশের সঙ্গে সম্পর্ক রেখে চলেছে।
তিনি জানান, শেখ হাসিনা হু-এসইএআরও-এর আঞ্চলিক পরিচালক পুনম ক্ষেত্রপাল সিংকে বলেছেন, রোহিঙ্গা ইস্যুতে অন্যান্য সম্পদ ছাড়াও আশ্রিত রোহিঙ্গাদের ব্যবস্থাপনা ও সেবার কাজে বাংলাদেশের ২৮ হাজারের মতো লোকবল দিন-রাত কাজ করে যাচ্ছে।
প্রধানমন্ত্রী পুনম ক্ষেত্রপালকে বলেন, তাঁর সরকার জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত মিয়ানমারের নাগরিক, যারা বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে, তাদের বায়োমেট্রিক রেজিস্ট্রেশন ও পরিচয়পত্র প্রদান করেছে, যাতে তাদের প্রত্যাবাসন কাজ সহজ হয়।
ক্ষেত্রপাল সিং রোহিঙ্গা সংকটে বাংলাদেশের ভূমিকার উচ্ছ্বসিত প্রশংসা করে বলেন, ‘বাংলাদেশ সরকার এ ক্ষেত্রে বিশাল এক কাজ করেছে।’ তিনি টিকাদান ও অন্যান্য চিকিৎসা সেবায় বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সহযোগিতারও আশ্বাস দেন।
তিনি বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের সংখ্যাকে ভুটানের মোট জনসংখ্যারও বেশি বলে উল্লেখ করে বলেন, তাদের ব্যবস্থাপনার কাজটি একটি ‘বিশালকায় কাজ’। কিন্তু সঙ্গে সঙ্গে হু’র কর্মকর্তাদের ভয়ও হচ্ছে যে, রোহিঙ্গারা আসন্ন বর্ষায় পানিবাহিত রোগ ও স্যানিটেশন সমস্যাসহ মারাত্মক স্বাস্থ্য সংকটে পড়বে। তিনি স্বাস্থ্য সমস্যার সমাধানের চলমান স্বাস্থ্য সংক্রান্ত কর্মসূচি অব্যাহত রাখার জন্য সকারের প্রতি অনুরোধ জানান।
প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব বলেন, বৈঠকে অটিজম প্রসঙ্গও আলোচনায় আসে এবং বিশ্ব জুড়ে অটিজমের ওপর সচেতনতা সৃষ্টিতে প্রধানমন্ত্রীর কন্যা এবং বাংলাদেশ ন্যাশনাল অ্যাডভাইজরি কমিটি ফর অটিজম অ্যান্ড নিউরোডেভেলপমেন্ট ডিজঅর্ডারস-এর চেয়ারপার্সন সায়মা ওয়াজেদ হোসেনের ভূমিকার প্রশংসা করেন।
তিনি বাংলাদেশের উন্নয়ন বিশেষ করে বন্যা নিয়ন্ত্রণে প্রধানমন্ত্রীর গতিশীল নেতৃত্বের উচ্ছ্বসিত প্রশংসা করে বলেন, এ ক্ষেত্রে বাংলাদেশ বিশ্বে একটি দৃষ্টান্ত। ক্ষেত্রপাল সিং স্বাস্থ্য ও স্যানিটেশনের ক্ষেত্রে বাংলাদেশের অর্জনেরও প্রশংসা করেন এবং বলেন, এই অর্জনের ফলে শিশুমৃত্যু ও মাতৃমৃত্যুর হার হ্রাস পেয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, জনগণের দোরগোড়ায় স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছে দেয়ার জন্য সরকার সারাদেশে কমিউনিটি ক্লিনিক স্থাপন করেছে। তিনি এ প্রসঙ্গে উল্লেখ করেন যে, এ জাতীয় উদ্যোগেরও স্বপ্নদ্রষ্টা ছিলেন বঙ্গবন্ধু।
সায়মা ওয়াজেদ হোসেন, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব নজিবুর রহমান ও স্বাস্থ্য সচিব সিরাজুল হক খান এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।