অগ্রসর রিপোর্ট : মাছে কোন ধরনের ক্ষতিকর পদার্থ ব্যবহার করে বাজারজাতকরনের শাস্তির মেয়াদ এবং জরিমানার পরিমান বৃদ্ধি করে ‘মৎস ও মৎসপণ্য (পরিদর্শন ও মাননিয়ন্ত্রণ) আইন, ২০২০’ এর খসড়ার চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে আজ সকালে তাঁর সরকারী বাসভবন গণভবনে অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভার নিয়মিত বৈঠকে এই অনুমোদন দেওয়া হয়। পরে বিকেলে সচিবালয়ে সাংবাদিকদের বৈঠকের বিষয়ে অবহিতকরণকালে মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, ‘প্রস্তাবিত আইনে কারাদন্ডের মেয়াদ এবং জরিমানার পরিমান যৌক্তিকভাবে বৃদ্ধি করা হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘কোন ব্যক্তি রপ্তানি বা অভ্যন্তরীন বাজারে ক্ষতিকর রাসায়নিক পদার্থ ব্যবহার করে মৎস বা মৎস্যপণ্য বাজারজাত করলে এর শাস্তি অনধিক সাত বছর,কিন্তু পাঁচ বছরের নিচে নয়, কারাদন্ড বা পাঁচ লাখ টাকা অর্থদন্ড বা উভয়দন্ড নির্ধারণ করা হয়েছে ।’
তিনি বলেন, ‘বিদ্যমান অধ্যাদেশে বর্ণিত অপরাধের শাস্তি হিসেবে ৬ মাস পর্যন্ত কারাদন্ড বা ৫ হাজার টাকা জরিমানা বা উভয় দন্ডের বিধান রয়েছে,’।
সচিব বলেন, ‘এছাড়া আইনের ৩১, ৩২ ও ৩৪ ধারায় অপরাধ ও দন্ডের বিধান রয়েছে। একইসঙ্গে দূষিত মাছ বিক্রয় করলে অনধিক ৫০ হাজার টাকা প্রশাসনিক জরিমানার বিধান রাখা হয়েছে।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ‘প্রস্তাবিত আইনটি কার্যকর হলে রপ্তানি বাজার ধরে রাখা এবং নতুন বাজারে অনুপ্রবেশের সুযোগ বৃদ্ধি পাবে এবং একইসঙ্গে মানসম্পন্ন মৎস ও মৎসপণ্য আমদানি ও অভ্যন্তরীণ বাজারে রাজারজাতকরণ নিশ্চিত করা যাবে।’
তিনি বলেন, প্রস্তাবিত আইনের ৯টি অধ্যায়ে মোট ২৫টি ধারা রয়েছে এবং মৎস ও মৎসপণ্যের মান নির্ধারণের এখতিয়ার উপযুক্ত কতৃর্পক্ষকে দেওয়া হয়েছে এবং আইনের উদ্দেশ্যপূরণ কল্পে তিনটি স্তরে উপযুক্ত কতৃর্পক্ষ যথা- কেন্দ্রিয় উপযুক্ত কতৃর্পক্ষ, আঞ্চলিক উপযুক্ত কতৃর্পক্ষ এবং স্থানীয় উপযুক্ত কতৃর্পক্ষ রাখা হয়েছে।
সচিব বলেন, প্রস্তাবিত আইন অনুযায়ী লাইসেন্স গ্রহণ ব্যতিরেকে কোন ব্যক্তি মৎস ও মৎসপণ্য রপ্তানি, কারখানা বা স্থাপনা প্রতিষ্ঠা ও পরিচালনা করতে পারবে না। একইসঙ্গে পরিদর্শন কর্মকর্তা কতৃর্ক পরিদর্শনকালে কারখানা বা স্থাপনার স্বাস্থ্যকর পরিবেশ বজায় না রাখা এবং প্রক্রিয়াজাতকরণে মানের ব্যত্যয় হলে অপরাধীর বিরুদ্ধে অনধিক পাঁচ লাখ টাকা প্রশাসনিক জরিমানা করারও বিধান রাখা হয়েছে, বলেন তিনি।
খন্দকার আনোয়ার বলেন, প্রস্তাবিত আইনে রপ্তানির ক্ষেত্রে উপযুক্ত কতৃর্পক্ষের নিকট থেকে অনাপত্তিপত্র গ্রহণের বিধানও সন্নিবেশিত করা হয়েছে।
তিনি বলেন, এই আইনের অধীন সংঘটিত অপরাধের বিচার প্রথম শ্রেণীর জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট বা স্পেশাল ম্যাজিষ্ট্রেট ছাড়াও মোবাইল কোর্ট আইন, ২০০৯ এর তপসিলভুক্ত করে মোবাইল কোর্ট কতৃর্ক বিচারের বিধান করা হয়েছে।
তবে, অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের আদেশের বিরুদ্ধে সংক্ষুব্ধ ব্যক্তি উর্ধতন কতৃর্পক্ষ বা সরকারের নিকট প্রশাসনিক আপিল করতে পারবে এবং এই আইন কার্যকরণে সরকার প্রয়োজনে বিধি প্রণয়ন করতে পারবে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।
এছাড়া ‘বাংলাদেশ রেফারেন্স ইনষ্টিটিউট ফর কেমিক্যাল মেজারমেন্টস আইন, ২০২০’ এর খসড়ারও চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, বাংলাদেশে রাসায়নিক পরিমাপ বিজ্ঞানের অবকাঠামো সৃষ্টির মাধ্যমে দেশের পরীক্ষাগারসমূহের রাসায়নিক পরীক্ষণ সেবার আন্তর্জাতিক গ্রহণযোগ্যতা অর্জনে বাংলাদেশ বিজ্ঞান ও শিল্প গবেষণা পরিষদের আওতায় প্রতিষ্ঠিত ডেজিগনেটেড রেফারেন্স ইনষ্টিটিউট ফর কেমিক্যাল মেজারমেন্টস (ডিআরআইসিএম) পরিচালনাই এই আইন প্রণয়নের উদ্দেশ্য।