অগ্রসর রিপোর্ট :
ভারতের রাষ্ট্রপতিনির্বাচনে ভোট গ্রহণ শুরু হয়েছে। সোমবার (১৭ জুলাই) স্থানীয় সময় সকাল ১০টায় এ ভোট গ্রহণ শুরু হয়।রাজধানী দিল্লির সংসদ ভবন ও দেশের রাজ্য বিধানসভাগুলোতে লোকসভা, রাজ্যসভা ও বিধানসভার সদস্যরা ভোট দিয়ে নির্বাচিত করবেন ভারতের চতুর্দশ রাষ্ট্রপতিকে।
এবারের লড়াই দ্বিমুখী। তবে নতুন রাষ্ট্রপতি হওয়ার দৌড়ে এগিয়ে আছেন এনডিএ প্রার্থী রামনাথ কোবিন্দ। তার প্রতিদ্বন্দ্বী বিরোধী প্রার্থী হলেন মীরা কুমার।
রাজ্যের মোট ২৯৪ জন বিধায়ক। তার মধ্যে ২৮৮ জনই এক দিকে। অন্য দিকে ৬ জন। রাজ্য বিধানসভার এই সমীকরণ সামনে রেখেই সোমবার রাষ্ট্রপতি নির্বাচন।
রাষ্ট্রপতি পদে এনডিএ-র প্রার্থী রামনাথ কোবিন্দের বাক্সে এ রাজ্য থেকে পড়ার কথা ২৩২২টি ভোট। বাংলার এক জন বিধায়কের ভোটমূল্য ১৫১। সাংসদদের ক্ষেত্রে সারা দেশেই যা ৭০৮। বিজেপি-র তিন বিধায়ক, লোকসভার দুই সাংসদ এবং সঙ্গে গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার তিন জন বিধায়ককে ধরলে কোবিন্দের ভোট এ রাজ্য থেকে গোনাগুনতি।
আর বিরোধী জোটের প্রার্থী মীরা কুমারের পক্ষে রয়েছে কংগ্রেস, তৃণমূল ও বামফ্রন্ট। সহজ অঙ্কে কোবিন্দের তুলনায় দৌড়ে মীরা পিছিয়ে থাকলেও এ রাজ্যে অন্তত তার পাল্লাই ভারী।যদিও বিরোধীপক্ষ শেষ মুহুর্তে এসে চিত্র পাল্টে যাবার ব্যাপারে আশাবাদী।
ভোট গণনা ২০ জুলাই। দেশের প্রথম বাঙালি রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখার্জির মেয়াদ শেষ হচ্ছে ২৪ জুলাই। নতুন রাষ্ট্রপতি শপথ নেবেন ২৫ জুলাই।
তবে প্রণব মুখার্জির পর রাইসিনার হিলসের পরবর্তী বাসিন্দাকে হবে তা নির্ধারণ হবে মঙ্গলবার।
বিজেপি নেতৃত্বাধীন এনডিএ-র প্রার্থী বিহারের প্রাক্তন রাজ্যপাল কোবিন্দ এবং বিরোধীপক্ষ সমর্থিত সংসদের প্রাক্তন স্পিকার মীরা কুমার দুজনেই ইতিমধ্যে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ছুটে গিয়ে সংশ্লিষ্ট রাজনৈতিক দলগুলির সমর্থন আদায় করার প্রচেষ্টা করেছেন।
গত মাসের শেষের দিকে মীরা কুমারকে কংগ্রেসসহ ১৭ বিরোধী দল প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা করে। পাঁচবারের পার্লামেন্ট সদস্য মীরা কুমার ২০০৯ থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত লোকসভার স্পিকার ছিলেন। আইনজীবী ও সাবেক কূটনীতিক মীরা কুমার ওই সময় বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় স্পিকার নির্বাচন হয়েছিলেন। তাঁর পক্ষে কংগ্রেসের পাশাপাশি অবশ্য রয়েছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের তৃণমূল, লালুপ্রসাদ যাদবের আরজেডি, সিপিএম, মায়াবতীর বহুজন সমাজ পার্টি, আসাদুদ্দিন ওয়াইসির মজলিস ই ইত্তেহাদুল মুসলিমিনের সমর্থন। সমাজবাদী পার্টি প্রথমে সমর্থনের প্রতিশ্রুতি দিলেও ভোটের আগের দিন তাদের সমর্থন নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে বিরোধী শিবিরে। তবে, ইতিমধ্যেই জেডিইউ, বিজেডি, টিআরএস, ওয়াইএসআর কংগ্রেস, এডিএমকে-র একাধিক গোষ্ঠী কোবিন্দকেই সমর্থন করার আশ্বাস দিয়েছে। এনডিএ-র আশা, কোবিন্দ সহজেই জিতে আসতে পারবেন।
তবে, শেষমুহুর্ত পর্যন্ত চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে বিরোদীপক্ষ। সোমবার রাষ্ট্রপতি ও উপ-রাষ্ট্রপতি নির্বাচনকে ‘সংকীর্ণ, বিভাজন-সৃষ্টিকারী ও সাম্প্রদায়িক মনোভাবের’ বিরুদ্ধে লড়াই হিসেবে উল্লেখ করে দলীয় সদস্যদের উদ্বুদ্ধ করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন কংগ্রেস সভানেত্রী সোনিয়া গান্ধী।
সংসদের উভয় কক্ষের সদস্য ও বিধায়করা রাষ্ট্রপতি ভোটে অংশগ্রহণ করেন। তাঁদের ভোটের ওপরই ভিত্তি করেই দেশের রাষ্ট্রপতি নির্বাচন হয়। রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের ইলেক্টোরাল কলেজের মোট মূল্য ১০,৯৮,৯০৩। কলেজের মোট ভোটার সংখ্যা ৪,৮৯৬। এর মধ্যে ৪,১২০ জন বিধায়ক ও ৭৭৬ জন সাংসদ। আবার সাংসদের মধ্যে ৫৪৩ জন লোকসভার এবং ২৩৩ জন রাজ্যসভার।
তবে, অ্যাঙ্গলো-ইন্ডিয়ান সম্প্রদায় থেকে মনোনীত লোকসভার দুই সদস্য এবং রাজ্যসভার ১২ মনোনীত সদস্য এই নির্বাচনে ভোট দিতে পারবেন না।
সূত্র- আনন্দবাজার পত্রিকা, এবিপি আনন্দ নিউজ