স্টাফ রিপোর্টার: চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে ভারতীয় তীর্থযাত্রীদের উপর হামলা ও লুটপাটের অভিযোগে স্থানীয় এক আওয়ামী লীগ নেতাসহ পাঁচজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। বুধবার দিনভর সীতাকুণ্ড সদর ও টেরিয়াল এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করা হয়।
সীতাকুণ্ড থানার সাব ইন্সপেক্টর ও মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মো. কামাল উদ্দিন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। গ্রেফতারেরা হলেন- সৈয়দপুর ইউনিয়নের ৮নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মীর নূরুদ্দিন মোহাম্মদ নূরু (৩২), টেরিয়াল এলাকার ইলিয়াছের ছেলে আকতারুজ্জামান বাবলু (১৯), জাফর ইকবালের ছেলে ইমরুল ইসলাম সাজু এবং মাহবুবের ছেলে মোশারফ হোসেন সাজু। তবে একজনের নাম জানাতে পারেননি তিনি।
সীতাকুণ্ড থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইফতেখার হাসান দ্য রিপোর্ট টুয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, ভারতীয় নাগরিকদের উপর হামলার ঘটনায় পাঁচজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ঘটনার তদন্ত চলছে। বাকি আসামিদের গ্রেফতার করা হবে।
সীতাকুণ্ড উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও সৈয়দপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এইচ এম তাজুল ইসলাম নিজামী জানান, ভারতীয় তীর্থযাত্রীদের মালামাল লুট এবং তাদের উপর হামলার চালিয়ে আহত করার ঘটনায় বিকালে আমাদের দলের এক নেতাকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে। তার নাম নূরুদ্দিন মোহাম্মদ নূরু। তিনি ওই ঘটনার সঙ্গে জড়িত কি না— তা আমার জানা নেই।
মিরসরাই থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মকিবুল হোসেন জানান, সোমবার রাত সাড়ে ১২টার চট্টগ্রাম থেকে ঢাকায় ফেরার পথে মহাসড়কের সীতাকুণ্ড পন্থিছিলা নামক স্থানে ভারতীয় তীর্থযাত্রীদের মাইক্রোবাস থামিয়ে হামলা চালানো হয়। তাদের টাকা, মোবাইল,
ভারতীয় রুপি ও অন্যান্য মালামাল লুট করে নিয়ে যায় ডাকাতরা। এ সময় ছুরিকাঘাত করে আহত করা হয় অমর জিৎ সিং (৬৫) ও মহেন্দ্র সিংকে (৩৫)। পরে তাদের ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
প্রসঙ্গত, ভারতীয় আট নাগরিক চট্টগ্রামের বিভিন্ন মন্দির দর্শন করার জন্য এসেছিলেন। পরে তারা চার মাইক্রোবাসে করে ঢাকায় ফিরছিলেন। সীতাকুণ্ডের নুনাছড়া এলাকায় তাদের বহরে থাকা একটি মাইক্রোবাস নষ্ট হয়ে যায়। চালক গাড়িটি রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে মেরামত করার সময় ১০/১২ জনের দুর্বৃত্ত তাদের ওপর হামলা চালায়। এ সময় ভারতীয় নাগরিকরা বাধা দিলে তাদের কুপিয়ে জখম এবং তাদের সঙ্গে থাকা ৮৮ হাজার ৮০০ টাকা, মোবাইল ফোন ও অন্যান্য মালামাল লুট করে নিয়ে যায়। খবর পেয়ে মিরসরাই ও সীতাকুণ্ড থানার পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে গিয়ে তাদের উদ্ধার করে মিরসরাইয়ের একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করেন।
বহরে থাকা আট ভারতীয় হলেন- জগিন্দর সিং (৭৫), অমর জিৎ সিং (৬৩), গৌমিত সিং (৬০), গৌনম সিং (৩১), তারশেম সিং (৩৯), মুল চান্দ (৬৫), ভুপেন্দর সিং (৬৮) ও কাশ্মীর সিং (৪৪)।
ওই ঘটনায় গাড়ীচালক অসীম কুমার মালাকার বাদী হয়ে অজ্ঞাত ১২ জনকে আসামি করে একটি মামলা দায়ের করেন। এতে তিনি বিদেশী দুই নাগরিককে আহত এবং তাদের কাছ থেকে ভারতীয় রুপিসহ টাকা ও মোবাইল সেট ডাকাতি করে নিয়ে যাওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ করেন।