অগ্রসর রিপোর্ট: বাংলাদেশে সংখ্যালঘু নির্যাতনের অভিযোগে ভারতীয় গণমাধ্যমে প্রচারিত নানা অভিযোগ-অপপ্রচার ও গুজব উড়িয়ে দিয়েছেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
গুজব প্রচার বন্ধ ও সত্যতা যাচাইয়ে ভারতীয় সাংবাদিকদের বাংলাদেশে এসে সরেজমিনে প্রতক্ষ্য করার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
শুক্রবার (১৬ আগস্ট) ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে ফোন করলে তিনি এ আহ্বান জানান।
এসময় ভারতের প্রধানমন্ত্রী অন্তর্বর্তী সরকারের নেতৃত্ব গ্রহণ করায় অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসকে অভিনন্দন জানান।
ফোনালাপে ড. মুহাম্মদ ইউনূস বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের সুরক্ষা ও নিরাপত্তার বিষয়ে নয়াদিল্লিকে আশ্বস্ত করেছেন। ভারতের প্রধানমন্ত্রী সংখ্যালঘুদের সুরক্ষার বিষয় উত্থাপন করলে প্রধান উপদেষ্টা জানান, তার সরকার সংখ্যালঘুসহ দেশের প্রতিটি নাগরিককে সুরক্ষা দিতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘ভারতীয় গণমাধ্যমে সংখ্যালঘুদের ওপর হামলার প্রতিবেদনগুলো অতিরঞ্জিত করা হয়েছে।’ তিনি ভারতীয় সাংবাদিকদের বাংলাদেশে এসে সরজমিনে সংখ্যালঘু সুরক্ষার বিষয়ে প্রতিবেদন করার জন্য আমন্ত্রণ জানান।
ফোনকলের জন্য প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে ধন্যবাদ জানিয়ে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘আমি বাংলাদেশ সরকারের প্রধান হিসেবে শপথ নেওয়ার পরপরই আপনি টুইট করেছিলেন, এজন্য ধন্যবাদ জানাচ্ছি।’ ভারতের স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে ভারতের নেতৃবৃন্দ এবং আপনার দেশের জনগণকে অভিনন্দন জানাচ্ছি।’
ফোনালাপে ভারতের প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশের নতুন সরকারের প্রতি শুভকামনা ব্যক্ত করেন এবং ঘনিষ্ঠ বন্ধু হিসেবে বাংলাদেশের জনগণের স্বার্থে কাজ করার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন। তিনি অধ্যাপক ইউনূসের নেতৃত্বাধীন সরকারের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ২০০৬ সালে শান্তিতে নোবেল বিজয়ী অধ্যাপক ইউনূসের নেতৃত্বের প্রশংংসা করে বলেন, ‘তিনি তাকে দীর্ঘদিন ধরে চেনেন। তিনি বলেন, ড. ইউনূসের দীর্ঘ অভিজ্ঞতা রয়েছে এবং তার নেতৃত্ব বাংলাদেশের মানুষের জন্য কল্যাণ বয়ে আনবে।’
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘বাংলাদেশের সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে চলে এসেছে এবং সারাদেশে জনজীবন স্বাভাবিক হয়ে আসছে।’
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি অধ্যাপক ইউনূসকে আগামীকাল (শনিবার) নয়াদিল্লিতে ভার্চুয়াল মাধ্যমে অনুষ্ঠিতব্য তৃতীয় ভয়েস অব গ্লোবাল সাউথ সামিটে যোগ দেওয়ার আমন্ত্রণ জানান। প্রধান উপদেষ্টা ঢাকা থেকে ভার্চুয়ালি সম্মেলনে যোগ দিতে সম্মত হয়েছেন।
অধ্যাপক ইউনূস বলেন, তিনি ছাত্র আন্দোলনের ফলস্বরুপ অন্তর্বর্তী সরকার ক্ষমতা গ্রহণ করেছেন। এটি বাংলাদেশের দ্বিতীয় বিপ্লব এবং তার সরকার ছাত্র ও জনগণের গণতান্ত্রিক আকাঙ্ক্ষা পূরণ করবে। এছাড়াও তার সরকার সমস্ত রাষ্ট্রযন্ত্রকে সম্পূর্ণরূপে কার্যকর করতে এবং দেশের প্রতিটি নাগরিকের মানবাধিকার নিশ্চিত করার বিষয়ে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ— যোগ করেন নোবেল বিজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূস।