দায়িত্বশীল একটি সূত্র বলছে, ডিসেম্বরের শেষ দিকে দেশে জঙ্গিদের কোনো একটি গ্রুপ তৎপর হওয়ার চেষ্টা করতে পারে- এমন গোয়েন্দা তথ্য রয়েছে। মাস দেড়েক আগে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী এমন তথ্য পাওয়ার পর তা সংশ্লিষ্ট সব ইউনিটকে অবহিত করে সতর্ক থাকতে নির্দেশনা দেওয়া হয়। নাশকতা তৈরির চেষ্টা করতে পারে- সন্দেহভাজন এমন কয়েকজনকে হন্যে হয়ে খুঁজছেন গোয়েন্দারা।
ছদ্মনামে তৎপর মামুন ও মামু নামে দুই উগ্রপন্থির তৎপরতার বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখছেন গোয়েন্দারা। বিদেশ থেকে যারা বিভিন্ন সময় দেশি জঙ্গিদের উস্কে দিয়েছিল, তাদের ব্যাপারে খোঁজ নেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া সম্প্রতি গ্রেফতার কয়েকজন উগ্রপন্থিকে জিজ্ঞাসাবাদে দেশে উগ্রপন্থিদের তৎপরতার ব্যাপারে একটি ধারণা পেয়েছেন গোয়েন্দারা। ওই ধারণার আলোকে এবার ডিসেম্বরের শেষ দিকে সব ধরনের প্রস্তুতি নিয়েছে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। জানা গেছে, সাইফুল্লাহ ওজাকি, তাহমিদ শফিউর, এটিএম তাজউদ্দিন, ডা. সানইয়াত, ডা. রোকন, জুনায়েদ খান, ইব্রাহিম খান, ডা. তুষারসহ অন্তত ১৫ জন উগ্রপন্থি দেশের বাইরে অবস্থান করছে। তারা গোপনে দেশে ঢোকার সঙ্গে সঙ্গে আইনের আওতায় নিতে এরই মধ্যে শাহজালাল বিমানবন্দরসহ দেশের সব ইমিগ্রেশন চেক পয়েন্টে তাদের ছবিসহ তালিকা দেওয়া হয়েছে।
এবার ২৫ ডিসেম্বর বড়দিনের আগে জার্মানি, তুরস্ক ও সুইজারল্যান্ডে জঙ্গি হামলা হয়। গত সোমবার রাতে বার্লিনে বড়দিন সামনে রেখে বসা একটি বাজারে ভিড়ের ওপর ইস্পাত বহনকারী একটি লরি উঠিয়ে দেওয়া হয়। ভিড় মাড়িয়েই লরি নিয়ে চালক প্রায় ৫০ থেকে ৮০ মিটার এগিয়ে যায়। এ ঘটনায় ১২ জন নিহত এবং ৪৯ জন আহত হন। এটি জঙ্গি হামলার একটি নতুন কৌশল। জার্মানি ও অস্ট্রেলিয়া বড়দিন ঘিরে হামলা পরিকল্পনা নস্যাৎ করার কথা জানিয়েছে।
বাংলাদেশের আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীও বৈশ্বিক প্রেক্ষাপট বিবেচনা করে বড়দিন ঘিরে সব ধরনের নিরাপত্তা প্রস্তুতিতে এসব বিষয় মাথায় রাখছে। সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলছেন, যখন জঙ্গিদের কাছে অস্ত্র গোলাবারুদের জোগান কম থাকে ও দলে ভেড়ানোর জন্য সদস্য তেমন পাওয়া যায় না, তখন তারা এককভাবে এমন হামলার জন্য এ ধরনের কৌশল ব্যবহার করে। বাংলাদেশি গোয়েন্দারা তাদের নিরাপত্তা কৌশলে এমন নজির ও অভিজ্ঞতা বিচার-বিশ্লেষণ করছেন। দায়িত্বশীল একজন কর্মকর্তা জানান, অন্যান্য দেশের উগ্রপন্থিদের অনুকরণে বাংলাদেশে যাতে কোনো ধরনের নাশকতা ঘটতে না পারে সে ব্যাপারে মাঠ পর্যায়ের পুলিশ সদস্যদের প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। সব গির্জার সামনে আর্চওয়ে বসানো হবে। মেটাল ডিটেক্টর দিয়ে তল্লাশি করে সবাইকে প্রবেশ করানো হবে। গির্জা ও আশপাশের এলাকায় বসানো হবে সিসিটিভি ক্যামেরা।