অগ্রসর ডেস্ক : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মুসলমানদের নিজেদের মধ্যকার জাতিগত দ্বন্দ্ব-সংঘাত বন্ধের ওপর গুরুত্বারোপ করে বলেছেন, এর ফলে লাভবান হচ্ছে কেবল অস্ত্র ব্যবসায়ীরা। তিনি বলেন, ‘আমরা (মুসলিমরা) নিজেরাই বিশ্বের মধ্যে বিভিন্ন প্রান্তে যুদ্ধরত রয়েছি আর তার মুনাফা লুটছে অস্ত্র অব্যবসায়ীরা। এই যুদ্ধ বন্ধ হওয়া প্রয়োজন এবং আলাপ-আলোচনার মাধ্যমেই সমস্যার সমাধান করতে হবে।’ খবর : সংবাদ সংস্থা বাসসের।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বৃহস্পতবার অপরাহ্নে সৌদি আরবের সফররত মজলিসে শুরার স্পিকার ড. আব্দুল্লাহ বিন মোহাম্মদ বিন ইবরাহিম আলীর সঙ্গে তাঁর কার্যালয়ে সৌজন্য সাক্ষাতে একথা বলেন।
বৈঠক শেষে প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন।
বিশ্বে মুসলমানদের মধ্যে বিদ্যমান দ্বন্দ্ব-সংঘাতের বিষয়ে আক্ষেপ প্রকাশ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এর ফলে শত শত মানুষের প্রাণহানি ঘটছে এবং মুসলমানেরা ভিটেমাটি ছাড়া হয়ে অন্যদেশে শরণার্থী হিসেবে আশ্রয় গ্রহণে বাধ্য হচ্ছেন। এটা অত্যন্ত লজ্জাজনক এবং এগুলো বন্ধে আমাদের বিপথগামী মুসলমানদের বোঝাতে হবে।
শেখ হাসিনা বলেন, আল্লাহ রাব্বুল আল-আমিনই শেষ বিচারের মালিক। সুতরাং মুসলমানদের মধ্যে শিয়া-সুন্নীর মতো নানামতের এই বিভাজন কেন? এগুলো বন্ধ হওয়া প্রয়োজন। বিপথগামী মুসলিমদের অনেকেই নানারকম বিভ্রান্তির মধ্যে রয়েছেন, কেউ কেউ মনে করছেন জীবন্ত বোমা হয়ে আত্মাহুতি দেয়ার মাধ্যমে তারা বেহেশতে যাবেন, আসলে তারা যাবেন দোজখে।
সৌদি স্পিকার বলেন, টাকার বিনিময়েও অনেককে বিভ্রান্ত করা হচ্ছে, পৃথিবীর প্রায় সব দেশেই বিশেষ করে তরুণ সম্প্রদায়ের মধ্যে এই সমস্যাটি রয়েছে। টাকা ছড়িয়ে কৃত্রিম বিভাজন সৃষ্টি করা হচ্ছে। এই প্রসংগে ড. আব্দুল্লাহ বলেন, এইসব বিপথগামীদের সত্যিকারের ইসলামের পথে পরিচালিত করতে আলেম ওলামার অবশ্য করণীয় রয়েছে।
সৌদি স্পিকার বলেন, আগামী ২১ মে রিয়াদে অনুষ্ঠিতব্য ইসলামিক আমেরিকান হিস্টোরিকাল সম্মেলনে এসব বিষয় আলোচনায় স্থান পেতে পারে।
সৌদি মজলিসে শুরার স্পিকার বৈঠকে সৌদি বাদশাহ এবং মুসলামানদের পবিত্র দুটি মসজিদের খাদেম সালমান বিন আব্দুল আজিজ আল সৌদের শুভেচ্ছাও প্রধানমন্ত্রীকে পৌঁছে দেন।
তিনি বলেন, সৌদি বাদশাহ আশা প্রকাশ করেছেন আসন্ন সম্মেলনে যোগদানের মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং সৌদি আরবের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক আরো সুদৃঢ় হবে। সৌদি আরব সবসময়ই সকল বাংলাদেশীর হৃদয়ে একটি বিশেষ স্থান দখল করে রয়েছে এবং উভয়ের আবেগের বন্ধন খুব দৃঢ় যেহেতু মুসলিমদের দুটি পবিত্র মসজিদ সেখানে রয়েছে।
বৈঠকে সৌদি মজলিসে শুরার স্পিকার শেখ হাসনাকে তাঁদের সুরার অবকাঠামো সম্পর্কে অবহিত করে জানান, তাঁদের সংসদে ৩০ জন মহিলা সদস্য রয়েছেন। যাদের সকলেই উচ্চশিক্ষিত এবং ডক্টরেট ডিগ্রীধারী।
এ সময় অন্যান্যের মধ্যে বজলুল হক হারুন এমপি, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সিনিয়র সচিব সুরাইয়া বেগম এবং বাংলাদেশে সৌদি আরবের রাষ্ট্রদূত আব্দুল্লাহ এইচ এম মুতায়ইরি উপস্থিত ছিলেন।