সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আয়োজিত আওয়ামী লীগের ২০তম জাতীয় সম্মেলনে দলীয় সভাপতি হিসেবে প্রধান অতিথির বক্তব্যে আজ শনিবার তিনি এসব কথা বলেন।
বক্তব্যের শুরুতে উপস্থিত কাউন্সিলর, ডেলিগেট, দেশি-বিদেশি আমন্ত্রিত অতিথিদের অভিবাদন জানিয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানসহ ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট নিহতদের স্মরণ করেন শেখ হাসিনা।
পাশাপাশি মুক্তিযুদ্ধে নিহত সব শহীদ ও জাতীয় ৪ নেতাকে স্মরণ করেন তিনি। এ ছাড়া আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠানকালীন সময় তৃণমূলের সব নেতার অবদানকে স্মরণ করেন তিনি।
শেখ হাসিনা বলেন, বারবার আঘাত এসেছে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের ওপর। শত আঘাত উপেক্ষা করে আমাদের নেতাকর্মীরা এই দল ধরে রেখেছে। কত মানুষ আঘাতে পঙ্গু হয়েছেন, মারা গেছেন। আজকের দিনে আমি তাদের সবার প্রতি শ্রদ্ধা জানাই।
তিনি বলেন, তৃণমূল নেতা-কর্মীদের আত্মত্যাগই আওয়ামী লীগকে ধরে রেখেছে।
বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর শেখ হাসিনার দেশে ফেরার প্রচেষ্টায় আওয়ামী লীগের অবদানের কথা স্বীকার করে দলের সভানেত্রী বলেছেন, আমি গণমানুষের সমর্থনে বাংলাদেশে ফিরে আসি। যার ব্যবস্থা আওয়ামী লীগ করেছিল। অবর্তমানে সভাপতি বানিয়েছিল আমাকে। আমি আওয়ামী লীগের কাছে কৃতজ্ঞ; তারাই বাংলাদেশে আসার সুযোগ করে দিয়েছিল।
তিনি বলেন, মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় আমরা দেশ চালাচ্ছি। ২০০৮ সালে দেশের মানুষ আমাদের ভোট দেয়; ২০০৯ সালে সরকার গঠন করার পরে দেশ ক্ষুধামুক্ত-দারিদ্রমুক্ত করেছি। আজকের বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে। তবে ’৯৬ সালে আমাদের নেওয়া সব কর্মসূচি বিএনপি বন্ধ করে দেয়। আবার শুরু করি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনী সৃষ্টির জন্য ১৪৫টি সামাজিক নিরাপত্তা কার্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছে। বর্তমানে ৫৫ লাখ মানুষ ভাতা পাচ্ছে। অনগ্রসর হিজড়া, বেদে, হরিজনদের ভাতা দেয়া হচ্ছে। চা শ্রমিকদের অনুদান দেওয়া হচ্ছে। সমাজের বিভিন্ন স্তরের মানুষকে নিরাপত্তা দেয়া হচ্ছে।
শেখ হাসিনা বলেন, কৃষক যাতে ১০ টাকায় ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খুলতে পারে, সেই ব্যবস্থা করা হয়েছে। একটি মানুষও যাতে না খেয়ে কষ্ট পায়, সে ব্যবস্থা করা হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, দারিদ্র্যমুক্ত করতে হলে শুধু ভাতা দিলেই চলবে না। ক্ষুদ্রঋণের পরিবর্তে ক্ষুদ্র সঞ্চয় চালু করা হয়েছে। স্বল্প সুদে ঋণ দেওয়া হচ্ছে। পরিবারভিত্তিক কার্যক্রম চালানো হচ্ছে।
শেখ হাসিনা বলেন, ডিজিটাল বাংলাদেশ স্বপ্ন নয়, মোবাইল ফোন অথবা অনলাইনে তথ্য পেতে ৪৯৯টি কৃষি তথ্য যোগাযোগকেন্দ্র স্থাপন করা হয়েছে। পাঁচ হাজার ২৭৫টি ডিজিটাল সেন্টার করা হয়েছে।
তিনি বলেন, বেকার যুবকদের জন্য কর্মসংস্থান ব্যাংক করা হয়েছে। তারা বিনা জামানতে দুই লাখ টাকা যেন ঋণ নিতে পারে, সে ব্যবস্থা করা হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, সরকারের লক্ষ্য অর্থনীতিকে গতিশীল করা। ১০০টি অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তোলা হচ্ছে। এতে বিপুল মানুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে। কৃষিকে যান্ত্রিকীকরণ করা হচ্ছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে উন্নত দেশ হিসেবে গড়ে তুলতে চাই। বাংলাদেশ হবে দক্ষিণ এশিয়ার একটি শান্তিপূর্ণ দেশ।
তিনি বলেন, টেররিজমকে কখনোই আমরা প্রশ্রয় দিব না। বাংলাদেশের মাটি, এ দেশের ভূখণ্ড সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের জন্য ব্যবহার করতে পারবে না।
[youtube https://www.youtube.com/watch?v=9y6RUrLCtiA]