অগ্রসর রিপোর্ট: রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ বঙ্গবন্ধুর নীতি ও আদর্শকে সকল প্রেরণার উৎস হিসেবে উল্লেখ করে জাতির পিতা এবং মুক্তিযুদ্ধের প্রকৃত ইতিহাস জানার জন্য ছাত্র-ছাত্রীদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর স্বাধীনতা বিরোধীআমাদের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃত এবং বিভিন্নভাবে নতুন প্রজন্মকে বিভ্রান্ত করার অপচেষ্টা চালায়। তাই তোমাদেরকে বাংলাদেশের প্রকৃত ইতিহাস জানতে হবে।’
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪২তম শাহাদাৎ বার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে আজ রোববার রাজধানীতে ইডেন মহিলা কলেজ আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রদত্ত ভাষণে রাষ্ট্রপতি একথা বলেন।
তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু তাঁর সারা জীবন গণমানুষের কল্যাণে কাজ করে গেছেন। লোভ ও ব্যক্তিগত স্বার্থের ঊর্ধ্বে উঠে বাঙালী জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠায় লড়াই করে গেছেন। বঙ্গবন্ধু কখনো কোন অন্যায়ের সাথে আপোষ করেননি। সব সময় অন্যায়- অবিচারের বিরুদ্ধে সোচ্চার ছিলেন।
রাষ্ট্রপতি হামিদ বলেন, ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা পর্যন্ত দেশের সকল আন্দোলনে বঙ্গবন্ধু ছিলেন একমাত্র নেতা। নয় মাসের মুক্তিযুদ্ধে যুক্ত হতে তিনি জনগণকে প্রেরণা দিয়েছেন।
নবগঠিত যুদ্ধবিধ্বস্ত বাংলাদেশ পুনর্গঠনে বঙ্গবন্ধুর গৃহীত বিভিন্ন বাস্তবমুখী পদক্ষেপের কথা উল্লেখ করে রাষ্ট্রপতি বলেন, জাতির পিতা বিশ্বে একটি মর্যাদাশীল দেশ প্রতিষ্ঠা এবং জনগণের অর্থনৈতিক মুক্তি নিশ্চিতকরণে নিরলস কাজ করে গেছেন।
তিনি বলেন, স্বাধীনতা অর্জন এবং জনগণের অধিকারের নিশ্চয়তা বিধানে অবদানের কারণে বঙ্গবন্ধু এমন এক উচ্চতায় পৌঁছে গেছেন যেখানে বাংলাদেশ ও বঙ্গবন্ধু একটি অভিন্ন বিষয়।
রাষ্ট্রপতি বলেন, দেশ যখন উন্নয়ন ও সমৃদ্ধির দিকে এগিয়ে যাচ্ছিল তখন স্বাধীনতা বিরোধী শক্তি তাদের বিদেশী দোসরদের সাথে নিয়ে দেশের স্বাধীনতার বিরুদ্ধে চক্রান্তে লিপ্ত হয়। তারা হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালী বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করে।
রাষ্ট্রপতি বলেন, কতিপয় স্বার্থান্বেষী মহল রাজাকার ও আলবদরসহ পরাজিত শক্তিকে ক্ষমতায় বসাতে বাংলাদেশের পবিত্র মাটি থেকে বঙ্গবন্ধুর আদর্শ চিরতরে মুছে ফেলতে চেয়েছিল।
তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু খুনীদের বিচার সম্পন্ন হয়েছে। ইতোমধ্যে কিছু খুনীর মৃত্যুদন্ড কার্যকর করা হয়েছে। বাকী খুনীদের মৃত্যুদন্ড কার্যকরের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে সরকার।
বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা জনকের বর্বরোচিত হত্যাকান্ডের কথা স্মরণ করে রাষ্ট্রপতি হামিদ বঙ্গবন্ধু ও ১৫ আগস্ট শাহাদাৎবরণকারী তাঁর পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের এবং ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে মুক্তিযুদ্ধ পর্যন্ত বিভিন্ন গণআন্দোলনের শহীদদের বিদেহী আত্মার শান্তি কামনা করেন।
আবদুল হামিদ বঙ্গবন্ধুর ক্ষুধামুক্ত সোনার বাংলা গড়ে তুলতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তাঁর সরকারের হাতকে শক্তিশালী করতে শিক্ষার্থীদের প্রতি আহ্বান জানান।
আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন ইডেন মহিলা কলেজের অধ্যাপিকা ড. শামসুর নাহার। এতে অন্যান্যের মধ্যে শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ, ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র মোহাম্মদ সাঈদ খোকন, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সচিব সোহরাব হোসেন এবং মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ড. ওয়াহিদুজ্জামানও বক্তৃতা করেন।
প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।