গত ২৭ নভেম্বর হাঙ্গেরি যাওয়ার পথে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে বহনকারী বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের একটি বোয়িং ৭৭৭ বিমানে যান্ত্রিক ত্রুটি দেখা দেয়। যার কারণে তুর্কমেনিস্তানের রাজধানী আশখাবাদে জরুরি অবতরণ করে। অপর একটি বিমান পাঠিয়ে প্রধানমন্ত্রী ও তাঁর সফরসঙ্গীদের বুদাপেস্টে পৌঁছানো হয়। পরে ত্রুটি সারিয়ে ওই উড়োজাহাজও হাঙ্গেরি পাঠানো হয়।
প্রধানমন্ত্রীকে বহনকারী ফ্লাইটের ইঞ্জিনে ত্রুটির ঘটনা তদন্তে দুটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের প্রধান কারিগরি কর্মকর্তা ক্যাপ্টেন ফজল মাহমুদ চৌধুরীর নেতৃত্বে চার সদস্যবিশিষ্ট একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। এই কমিটিতে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের প্রতিনিধি, বিমানের প্রতিনিধি রয়েছেন।
অপর কমিটি করা হয়েছে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব স্বপন কুমার সরকারের নেতৃত্বে। বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের তদন্ত কমিটিতে সদস্য হিসেবে আছেন ক্যাপ্টেন শোয়েব চৌধুরী, ইঞ্জিনিয়ার মো. হানিফ ও ইঞ্জিনিয়ার নিরঞ্জন রায়। স্বপন কুমার সরকারের নেতৃত্বাধীন কমিটি আজ বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটনমন্ত্রী রাশেদ খান মেননের কাছে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেন।
রাশেদ খান মেনন বলেন, আজই প্রতিবেদন পেয়েছি। প্রতিবেদনে অনেক কিছুই আছে। প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে এ ব্যপারে কথা বলা হবে। প্রধানমন্ত্রীর সাক্ষাতের জন্য সময় চাওয়া হয়েছে। বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের প্রতিবেদনে বিমান ও মন্ত্রণালয় নিয়ে ২৫টি সুপারিশ তুলে ধরা হয়েছে।
এদিতে এ ঘটনায় এ নিয়ে দুই দফায় বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের নয়জনকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে। এরা হলেন প্রধান প্রকৌশলী (প্রডাকশন) দেবেশ চৌধুরী, প্রধান প্রকৌশলী (কোয়ালিটি অ্যাসুরেন্স) এস এ সিদ্দিক ও প্রিন্সিপাল ইঞ্জিনিয়ার (মেইনটেন্যান্স অ্যান্ড সিস্টেম কন্ট্রোল) বিল্লাল হোসেন, প্রকৌশল কর্মকর্তা এস এম রোকনুজ্জামান, সামিউল হক, লুৎফুর রহমান, মিলন চন্দ্র বিশ্বাস ও জাকির হোসাইন এবং টেকনিশিয়ান সিদ্দিকুর রহমান।
বিমান সূত্র জানায়, প্রধানমন্ত্রীকে বহনকারী উড়োজাহাজে ইঞ্জিনের একটি নাট (ইঞ্জিন অয়েল) ঢিলা থাকার কারণে যান্ত্রিক ত্রুটি হয়েছিল বলে তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে। যার কারণে বাম দিকের ইঞ্জিন প্রয়োজনীয় লুব্রিকেন্ট পাচ্ছিল না। এ জন্য প্রকৌশল বিভাগের সংশ্লিষ্ট দায়িত্বশীল ব্যক্তিদের গাফিলতিকে দায়ী করেছে বিমানের তদন্ত কমিটি।