অগ্রসর রিপোর্ট :প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের নথি জালিয়াতির মামলার আসামি গণভবনের কর্মকর্তা নাজিম উদ্দিনকে জামিন দেননি হাইকোর্ট। একই সঙ্গে আলোচিত মামলাটির তদন্ত করতে দুর্নীতি দমন কমিশনকে (দুদক) নির্দেশ দিয়েছেন।
সোমবার (১৮ জানুয়ারি) বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেনের নেতৃত্বাধীন হাইকোর্টের দ্বৈত বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
জালিয়াতির ওই ঘটনায় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের পরিচালক-৭ মোহাম্মদ রফিকুল আলম গত বছরের ০৫ মে ছাত্রলীগের বহিষ্কৃত কেন্দ্রীয় সহ সভাপতি তরিকুল ইসলাম মমিন, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের অফিস সহকারী ফাতেমা খাতুন ও নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ফরহাদ হোসেন ফরহাদের বিরুদ্ধে মামলাটি করেন। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা পুলিশের পরিদর্শক মোহাম্মদ কামাল উদ্দিন তদন্ত শেষে গণভবনের কর্মকর্তা নাজিম উদ্দিনসহ আরও তিনজনকে আসামি করে মোট ছয়জনের বিরুদ্ধে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে অভিযোগপত্র (চার্জশিটে) দাখিল করেন। অন্য দুই আসামি হলেন, রুবেল ও বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালসের সাবেক কোষাধ্যক্ষ এয়ার কমোডর (অব.) এম আব্দুস সালাম আজাদ।
তাদের মধ্যে পাঁচজন গ্রেপ্তার হলেও এয়ার কমোডর (অব.) এম আব্দুস সালাম আজাদ পলাতক।
পুলিশের অভিযোগপত্রে বলা হয়েছে, নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ে কোষাধ্যক্ষ পদে ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. এম এনামুল হক, বুয়েটের প্রকৌশল বিভাগের অধ্যাপক মো. আব্দুর রউফ এবং বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালসের সাবেক কোষাধ্যক্ষ এয়ার কমোডর (অব.) এম আবদুস সালাম আজাদের নাম প্রস্তাব করে শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে সারসংক্ষেপ প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে পাঠানো হয়। এই নথি প্রধানমন্ত্রীর সামনে উপস্থাপনের পর তিনি অধ্যাপক ড. এম এনামুল হকের নামের পাশে টিক চিহ্ন দেন।
পরে চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য নথিটি রাষ্ট্রপতির কাছে পাঠানোর প্রস্তুতি পর্বে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের অফিস সহকারী ফাতেমার কাছে ফাইল এলে তিনি এম আবদুস সালাম আজাদ অনুমোদন পাননি, গোপনীয় এ তথ্য ফোনে ছাত্রলীগ নেতা তরিকুলকে জানিয়ে দেন। এরপর তরিকুলের পরিকল্পনা অনুসারে গত বছরের ০১ মার্চ নথিটি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে কৌশলে বের করে ৪ নম্বর গেটের সামনে আসামি ফরহাদের হাতে তুলে দেন ফাতেমা। এজন্য ফাতেমাকে আসামিরা ১০ হাজার টাকা করে বিকাশে মোট ২০ হাজার টাকা দেন।
অভিযোগপত্রে আরও বলা হয়, এরপরেই সেই নথিতে আসামিরা পরস্পরের যোগসাজশে ড. এম এনামুল হকের নামের পাশে প্রধানমন্ত্রীর দেয়া টিক চিহ্নটি ‘টেম্পারিং’ করে সেখানে ক্রস চিহ্ন দেন। একইভাবে অধ্যাপক মো. আব্দুর রউফের নামের পাশেও ক্রস চিহ্ন দিয়ে এয়ার কমোডর (অব.) এম আবদুস সালাম আজাদের নামের পাশে টিক চিহ্ন দেন।
পরে আসামিরা গত বছরের ০৩ মার্চ নথিটি রাষ্ট্রপতির কার্যালয়ে চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য পাঠান। এসব ঘটনা নিয়ে ভাটারা এলাকার সানফ্লাওয়ার রেস্টুরেন্টে আসামি নাজিমের সঙ্গে তরিকুল ও ফরহাদ পরামর্শ করেন। তবে তাদের জালিয়াতিটি ধরা পড়ে যায়।