অগ্রসর রিপোর্ট: কুমিল্লা, ফেনীসহ দেশের পূর্বাঞ্চলে সাম্প্রতিক ভয়াবহ বন্যায় ১৪ হাজার ৪২১ কোটি টাকার ক্ষতি যার মধ্যে কৃষি ও বন খাতে সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে। এ খাতে ক্ষতির পরিমাণ পাঁচ হাজার ১৬৯ কোটি টাকা।
রবিবার রাজধানী ধানমন্ডিতে সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) কার্যালয়ে ‘পূর্বাঞ্চলে সাম্প্রতিক বন্যার ক্ষয়ক্ষতি ও পুনর্বাসন প্রক্রিয়া: সিপিডির বিশ্লেষণ’ শীর্ষক মিডিয়া ব্রিফিংয়ে এ তথ্য তুলে ধরেন সিপিডির নির্বাহী পরিচালক ফাহমিদা খাতুন। বেলা ১১টায় এ ব্রিফিং শুরু হয়।
বন্যায় ত্রাণ বিতরণে সমন্বয়হীনতার বিষয়টিও তুলে ধরেছে সিপিডি।
সংবাদ সম্মেলনে ফাহমিদা খাতুন বলেন, “দেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে সম্প্রতি ভয়াবহ বন্যায় ১৪ হাজার ৪২১ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে, যা জিডিপির দশমিক ২৬ শতাংশ। এর মধ্যে কৃষি ও বন খাতে সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে, যার পরিমাণ পাঁচ হাজার ১৬৯ কোটি টাকা।”
বন্যায় অবকাঠামো খাতে চার হাজার ৬৫৩ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে বলেও জানান সিপিডির নির্বাহী পরিচালক। তিনি বলেন, “শুধু ঘরবাড়িতেই ক্ষতি হয়েছে দুই হাজার ৪০৭ কোটি টাকা।”
এবারের বন্যায় নোয়াখালীকে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত জেলা হিসেবে তুলে ধরেন ফাহমিদা খাতুন।
“ক্ষতির (নোয়াখালী) পরিমাণ ৪ হাজার ১৯১ কোটি টাকা। এরপর আছে কুমিল্লা জেলা। সেখানে ক্ষতির পরিমাণ তিন হাজার ৩৯০ কোটি টাকা।” বলেন তিনি।
সংবাদ সম্মেলনে ত্রাণ বিতরণে সমন্বয়হীনতার বিষয়টি তুলে ধরে সিপিডির নির্বাহী পরিচালক বলেন, “নোয়াখালীতে ১৬ লাখ ৪৩ হাজার মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ক্ষতির পরিমাণ চার হাজার ১৯২ কোটি টাকা। বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ১৪ কোটি ৯০ লাখ টাকা। সেই হিসাবে প্রতিজন মানুষ পেয়েছেন গড়ে ৯৩ টাকা।”
সিলেটে সাড়ে নয় হাজার মানুষ বন্যা আক্রান্ত হয়েছে জানিয়ে তিনি আরও বলেন, “সিলেটে ক্ষতির পরিমাণ ২০ কোটি ৫০ লাখ টাকা। সেখানে ত্রাণ বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ১৪ কোটি ৬০ লাখ টাকা। প্রতিজনে গড়ে ত্রাণ পেয়েছে ১৫ হাজার ৩২০ টাকা। আর কুমিল্লায় জনপ্রতি ১৩৬ টাকা ও লক্ষ্মীপুরে জনপ্রতি ত্রাণ পেয়েছে গড়ে ৬২ টাকা।”
উল্লেখ্য, দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের বন্যার রেশ কাটতে না কাটতেই শুক্রবার রাত থেকে টানা ভারী বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে শেরপুরে ভয়াবহ বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। এতে জেলার শ্রীবরদী, ঝিনাইগাতী ও নালিতাবাড়ীর ৬০টি ইউনিয়নের কয়েক লাখ মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। সেখানে এ পর্যন্ত সাতজনের প্রাণহানির খবর পাওয়া গেছে।