অগ্রসর রিপোর্ট: আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে ফাঁকি দিয়ে প্রথমবারের মতো আগ্রাসী ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুর ব্যক্তিগত বাসভবনে ড্রোন হামলা চালিয়েছে লেবাননের যোদ্ধারা। বিষয়টি নিশ্চিত করেছে নেতানিয়াহুর কার্যালয়। হামলায় কী ধরনের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে তা এখনো স্পষ্ট নয়।
শনিবার টাইমস অব ইসরায়েল এক প্রতিবেদনে জানায়, এদিন ভোরে লেবানন থেকে উত্তর-মধ্য ইসরায়েলের সমৃদ্ধ প্রাচীন শহর সিজারিয়ায় (কেইসারিয়া বা কায়সারিয়া নামেও পরিচিত) ড্রোন হামলা চালানো হয়। একটি ড্রোন শহরে অবস্থিত প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত বাসভবনে আঘাত হানে।
ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় বিষয়টি নিশ্চিত করে জানায়, হামলার সময় প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু এবং তার স্ত্রী বাড়িতে ছিলেন না। এই ঘটনায় কেউ আহত হয়নি।
ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী আইডিএফ জানায়, আজ সকালে লেবানন থেকে তিনটি ড্রোন উড়ে আসে। দুটি ড্রোন বিমান প্রতিরক্ষা দ্বারা ভূপাতিত করা হয়। আরেকটি নেতানিয়াহুর বাসভবনে আঘাত হানে। এটি ঠেকানো যায়নি। বিষয়টি নিয়ে তদন্ত হচ্ছে।
গাজায় হামাসের প্রধান ইয়াহিয়া সিনওয়ার শহীদ হওয়ার পর লেবাননের সশস্ত্র গোষ্ঠী হিজবুল্লাহ হামলার তীব্রতা বাড়ানোর ঘোষণার মধ্যেই নেতানিয়াহুর বাসভবনে হামলা হলো। হিজবুল্লাহর বিবৃতিতে বলা হয়েছিল, ইসরায়েলের বিরুদ্ধে চলমান যুদ্ধকে নতুন ও গতিশীল ধাপে নিয়ে যাওয়া হবে। বাহিনীটি সুনির্দিষ্ট লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানতে সক্ষম ক্ষেপণাস্ত্রগুলো প্রথমবারের মতো মোতায়েন করেছে।
গত বুধবার ফিলিস্তিনের রাফায় ইসরায়েলি বাহিনীর সঙ্গে সম্মুখযুদ্ধে প্রাণ হারান ইয়াহিয়া সিনওয়ার। ইসমাইল হানিয়া শহীদ হওয়ার পর তিনি হামাসের প্রধান নিযুক্ত হয়েছিলেন।
এর আগে গত ১৩ অক্টোবর ইসরায়েলের হাইফা শহরের দক্ষিণে বেনইয়ামিনা এলাকায় গোলানি ব্রিগেড ক্যাম্পে ড্রোন হামলা চালায় হিজবুল্লাহ। এতে ৪ সেনা মারা যায়। আহত হয় ৬০ জনের বেশি। এমন ভয়াবহ হামলায় প্রশ্নবিদ্ধ হয় ইসরায়েলের আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা।
এদিকে ইসরায়েলের সেনা অবস্থান লক্ষ্য করে দফায় দফায় ক্ষেপণাস্ত্র ও রকেট হামলা চালিয়ে যাচ্ছে হিজবুল্লাহ। এতে ইসরায়েলিদের জনজীবনে বিপর্যয় নেমে এসেছে।
অন্যদিকে লেবাননে স্থলপথে আগ্রাসন চালাতে গিয়ে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির শিকার হচ্ছে ইসরায়েল। হিজবুল্লাহর মিডিয়া অফিস বলছে, লেবাননে স্থল অভিযান শুরুর পর ইসরায়েলি বাহিনীর ২০টি বিশ্বখ্যাত মেরকাভা ট্যাংক, চারটি সামরিক বুলডোজার, একটি সাঁজোয়া যান ধ্বংস করা হয়েছে। হিজবুল্লাহ যোদ্ধাদের হামলায় অফিসারসহ ৫৫ ইসরায়েলি সেনা মারা গেছে। আহত হয়েছে পাঁচ শতাধিক। যোদ্ধারা ইসরায়েলের দুটি হারমেস ৪৫০ ড্রোনও ধ্বংস করেছে।