স্টাফ রিপোর্টার : পুলিশ নারায়ণগঞ্জ থেকে এক অপহৃত শিশুকে মুন্সীগঞ্জ থেকে উদ্ধার করেছে। অপহরণের ৪০ ঘন্টা পর শুক্রবার রাতে অপহৃত জিসানকে (৩) উদ্ধার হয়।
তবে অপহরণকারী রাসেল (২৭) গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে। শিশুটিকে নারায়ণগঞ্জ জেলার সোনারগাঁও উপজেলা থেকে অপরহরণ করা হয়। পুলিশ মুন্সীগঞ্জ জেলার শ্রীনগর উপজেলার বাঘরা গ্রাম থেকে শিশুটিকে উদ্ধার করে।
পুলিশ ও জিসানের পরিবার জানায়, সোনারগাঁওয়ের পিরোজপুরের প্রতাপনগর গ্রামের মো. মল্লিক মিয়ার শিশু পুত্র জিসানকে বৃহস্পতিবার সকাল ৯টায় বাড়ির সামনে খেলা করছিল। এসময় রাসেল তাকে কৌশলে অপহরণ করে।
পরে অপহরণকারী রাসেল অপহৃত জিসানের চাচা সাদ্দামের মোবাইল ফোনে তার মুক্তিপণ হিসাবে ৫ লাখ টাকা দাবি করে। টাকা পাঠানোর জন্য একটি বিকাশ নাম্বারও দেয়। এ ঘটনায় জিসানের বাবা মুল্লুক মিয়া বাদী হয়ে রাসেলকে আসামী করে বৃহস্পতিবার বিকেলে সোনারগাঁও থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন।
ঘটনার পর রাসেল জিসানকে নিয়ে প্রথমে তার নিজ বাড়ি ফরিদপুর জেলার সদরপুর উপজেলায় যায় এবং পরে মুন্সীগঞ্জের বাঘরা গ্রামে তার আত্মীয় বাড়িতে যায়।
আত্মীয়-স্বজনরা বিষয়টি স্থানীয় ইউপি সদস্য ফজলুল হককে জানান। পরে বাঘরা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নুরুল ইসলামের বাড়িতে তাদের নিয়ে আসা হয়। সেখানে সকলের অগোচরে রাত পৌনে ৮টার দিকে রাসেল গলায় ফাঁস দেয়। তাৎক্ষণিকভাবে পার্শ্ববর্তী দোহার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে, কর্তব্যরত চিকিৎসক রাসেলকে মৃত ঘোষণা করেন।
খবর পেয়ে শ্রীনগর থানার পুলিশ লাশ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে। একই সাথে অপহৃত জিসানকে তার ফুপু নুরুজা বেগমের কাছে রাত পৌনে ৯টার দিকে হস্তান্তর করা হয়।
ঘটনাস্থলে পৌঁছে সোনারগাঁও থানার এসআই নূর হোসেন জানান, শিশু জিসানকে উদ্ধার করা হয়েছে।
শ্রীনগর থানার ওসি মো. সাহিদুর রহমান রাত পৌনে ১১টায় জানান, এই আত্মহত্যার ঘটনায় রাসেলের বাবা মো. আলমগীর হোসেন শ্রীনগর থানায় অপমৃত্যু মামলা করেছে। তিনি জানান, জিসানের পিতার সাথে রাসেল রং মিস্ত্রীর কাজ করতো। রংয়ের ঠিকাদারী কাজ করতে গিয়ে রাসেল মল্লিক মিয়ার কাছে ১৬ হাজার টাকা পাওনা হয়। এই নিয়ে বিরোধকে কেন্দ্র করে রাসেলকে অপহরণ করা হয়।
তবে রাসেলের পিতা আলমগীর বিষয়টি জানতে পেরে শিশুটিকে ফেরত দেয়ার উদ্যোগ নেয়। শিশুটির পরিবারকে খবর দিয়ে পদ্মা নদী পার হয়ে বাঘরা আসেন।
রাসেলের পিতা আলমগীর হোসেন বলেন, ‘শিশুটিকে ফেরত দেয়া হলেও আমার রাসেলকে আর ফেরত নিতে পারলাম না।’
জিসানের গ্রামের বাড়ি জামালপুর জেলার দেওয়ানগঞ্জ উপজেলার পশ্চিম কাজলাপাড়া গ্রামে।
প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।