অগ্রসর রিপোর্ট : ব্রিকস-বিমস্টেক আউটরিচ সামিট উপলক্ষে ২ দিনের সফর শেষে ভারত থেকে দেশে ফিরেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আজ সোমবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে তিনি ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছান।
এর আগে ভারতের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের সবচেয়ে ছোট রাজ্য গোয়া থেকে সোমবার স্থানীয় সময় সকাল ৭টা ১০ মিনিটে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একটি বিশেষ ফ্লাইটে তিনি ঢাকার উদ্দেশে রওনা হন।
গোয়ায় ভারতীয় নৌ-বাহিনীর বিমান ঘাঁটিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে বিদায় জানান ভারতের কেন্দ্রীয় পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী এম জে আকবর এবং গোয়া রাজ্য সরকারের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়কমন্ত্রী এলিনা সালদানহা।
ঢাকায় ভারতের হাইকমিশনার হর্ষবর্ধন শ্রিংলা এবং দিল্লিতে বাংলাদেশের হাইকমিশনার সৈয়দ মোজাম্মেল আলীও সেখানে উপস্থিত ছিলেন।
শেখ হাসিনা বিমানঘাঁটিতে পৌঁছানোর পর স্থানীয় শিল্পীদের পরিবেশনায় অনুষ্ঠিত হয় কালচারাল ডিসপ্লে। ভারতীয় সশস্ত্র বাহিনীর একটি চৌকস দল বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীকে সশস্ত্র সালাম জানায়। লাল গালিচায় হেঁটে বিমানে ওঠেন শেখ হাসিনা।
গতকাল রবিবার সকালে তিনি গোয়ায় পৌঁছানোর পর বাংলায় টুইট করে তাকে ধন্যবাদ জানিয়েছিলেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ।
সেখানে তিনি লেখেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমার আতিথেয়তা গ্রহণ করায় আমি সম্মানিত। ভারত এবং বাংলাদেশের সম্পর্ককে মজবুত করার জন্য আপনার ভূমিকাকে ধন্যবাদ জানাই।’
গোয়ায় পৌঁছেই দুপুরে বিসমটেক নেতাদের সম্মানে রজ্যের মুখ্যমন্ত্রী লক্ষ্মীকান্ত পারসেকরের দেয়া মধ্যাহ্নভোজে যোগ দেন শেখ হাসিনা। আউটরিচ সামিটের আগে বিকালে তিনি অংশ নেন বিমসটেক নেতাদের রিট্রিটে। সেখানে তিনি এ জোটভুক্ত দেশগুলোর মধ্যে বাণিজ্য বাড়াতে মুক্ত বাণিজ্য অঞ্চল গঠনের পরিকল্পনার ওপর জোর দেন।
রাতে ব্রিকস এবং বিসমটেক আউটরিচ সামিট পরবর্তী নৈশভোজে যোগ দেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী। এরপর তিনি ব্রিকস-বিমসটেক আউটরিচ সামিটে অংশ নেন। এই বৈঠকে শেখ হাসিনা বিমসটেক দেশগুলোতে মানসম্পন্ন ও টেকসই অবকাঠামো নির্মাণে ব্রিকসের তহবিল চান এবং বিজ্ঞান-প্রযুক্তি ও উদ্ভাবনে ব্রিকস দেশগুলোর প্রাতিষ্ঠানিক সহযোগিতা এবং টেকসই অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য দুই জোটের মধ্যে সংলাপ আয়োজনের ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন।
দুই বৈঠকেই উন্নয়নের স্বার্থে সন্ত্রাস ও সহিংস চরমপন্থার বিরুদ্ধে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান শেখ হাসিনা।
রাতে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে শেখ হাসিনার দ্বিপক্ষীয় বৈঠক হয়। সেখানে উন্নয়নের প্রশ্নে একে অন্যের পাশেথাকার অঙ্গীকারের কথা পুনর্ব্যক্ত করেন দুই প্রতিবেশী দেশের দুই নেতা।
বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী রাতে আউটরিচ সামিট পরবর্তী নৈশভোজেও অংশ নেন ।
গোয়ায় পাঁচ জাতির জোট ব্রিকসের অষ্টম সম্মেলন শুরু হয় শনিবার। রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন, চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং, ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট মিশেল টেমের, দক্ষিণ আফ্রিকার প্রেসিডেন্ট জ্যাকব জুমা ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এই সম্মেলনে অংশ নেন।
সম্মেলনের দ্বিতীয় দিন আউটরিচ সম্মেলনের মাধ্যমে ব্রিকসের সঙ্গে বিমসটেকভুক্ত দেশগুলোর নেতাদের বসার সুযোগ করে দেয় নয়া দিল্লি।
বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ছাড়াও ভুটানের প্রধানমন্ত্রী শেরিং তোবগে, নেপালের প্রধানমন্ত্রী পুষ্প কমল দহল, শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট মাইথ্রিপালা সিরিসেনা, থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী প্রায়ুথ চান-ওচা, আফগানিস্তানের প্রেসিডেন্ট আশরাফ গানি, মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট আবদুল্লাহ ইয়ামিন ও মিয়ানমারের পররাষ্ট্র মন্ত্রী অং সান সু চি আউটরিচ সামিটে অংশ নেন।