অগ্রসর রিপোর্ট :করোনাভাইরাসের টিকা তৈরির জন্য দেশেই ইনস্টিটিউট করার ঘোষণা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ‘আমাদের ফার্মাসিটিক্যাল তৈরি করা দরকার। তার জন্য ইনস্টিটিউট তৈরি করবো। আমরাও যাতে ভবিষ্যতে টিকা তৈরি করতে পারি, তার জন্য যা যা দরকার ব্যবস্থা নেবো। সেই ধরনের পরিকল্পনাও নিয়েছি।’
বুধবার বিকালে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় সভাপতির বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন। দলের ৭২তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত সভায় গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি যোগ দেন প্রধানমন্ত্রী।
করোনার টিকা প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘পৃথিবীর অনেক দেশই এখনো টিকা দিতে পারেনি। আমরা কিন্তু নিয়ে এসে দেয়া শুরু করেছি। ভারত টিকা রপ্তানি বন্ধ করে দেয়ায় আমরা কিছুটা সমস্যায় পড়েছিলাম। কিন্তু পরবর্তী সময়ে আমরা আবার টিকা কেনা শুরু করেছি।’
সবাই টিকা পাবে এমন আশ্বাস দিয়ে তিনি বলেন, ‘দেশের প্রত্যেকের কাছে করোনার টিকা যাতে পৌঁছে যায়, সে ব্যবস্থা আমরা পর্যায়ক্রমে নিচ্ছি। আমার খুব দুঃখ লাগে, যাদেরকে আমরা অগ্রাধিকার ভিত্তিতে আগেভাগে টিকা দিয়েছি, দুই ডোজ নেয়ার পর তারা এখন সমালোচনা করেন। অথচ তারাই সবার আগে নিয়েছেন। কিন্তু তারা যখন নিয়েছিলেন তখন তো এ কথা বলেননি। এখন আবার সমালোচনা কেন? বিশ্বের পরিস্থিতিটা বুঝতে হবে।’
টিকা নিয়ে সমালোচকদের প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘যে টিকা আমরা চার ডলারে কিনেছিলাম, এখন তা ১৫ ডলারে কিনতে হচ্ছে। সামনে হয়তো আরও বেশি দাম হবে। আমরা তো আগেই টাকা-পয়সা দিয়ে চেষ্টাটা করেছিলাম। কিন্তু এটা আন্তর্জাতিক বিষয়। যারা সমালোচনা করেন, তাদের বলব, একটু ধৈর্য ধরেন। তারপর দেখুন আমরা কতটুকু কী করতে পারি। তারপর সমালোচনা করুন।’
করোনা পরিস্থিতি তুলে ধরে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, ‘করোনাভাইরাস আমাদের যথেষ্ট কষ্ট দিচ্ছে। সারাবিশ্বে সমস্যা হচ্ছে। আমরা অর্থনৈতিক গতিটা ঠিক রাখার চেষ্টা করছি। যদিও এতে অনেক ক্ষতি হচ্ছে। দক্ষিণ এশিয়ায় বাংলাদেশেই সব চেয়ে ভালো আছে এবং থাকবে।’
দলকে তৃণমূল পর্যায়ে শক্তিশালী করার প্রতি তাগিদ দেন আওয়ামী লীগ সভাপতি। করোনা মহামারির কারণে কাউন্সিলগুলো করতে না পারলেও সাংগঠনিক তৎপরতায় যাতে থেমে না থাকে সে দিকে নজর দিতে নির্দেশ দেন তিনি।
দলের ৭২তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষ্যে নেতাকর্মীদের অভিনন্দন জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ‘৭২ বছর আওয়ামী লীগের বয়স হলো। এই সাব কন্টিনেন্টের সব থেকে প্রবীণ পার্টি। এই দলই পারবে এদেশে জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ে তুলতে। এই বাংলাদেশের মানুষের ভাগ্য নিয়ে আর যেন কখনো কেউ ছিনিমিনি খেলতে না পারে, সেজন্য অতন্দ্র প্রহরীর মতো বাংলাদেশের মানুষের পাশে থাকবে আওয়ামী লীগের প্রত্যেকটা নেতাকর্মী, সেটাই আমি চাই। এদেশের মানুষের ভাগ্য যেন আমরা পরিবর্তন করে দিয়ে যেতে পারি, সেইভাবেই সবাই কাজ করবেন।’
গণভবন থেকে আলোচনা সভা সঞ্চালনা করেন আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আবদুস সোবহান গোলাপ। বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সূচনা বক্তব্য দেন দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।
আলোচনায় অংশ নেন দলটির সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মতিয়া চৌধুরী, আব্দুর রাজ্জাক, জাহাঙ্গীর কবির নানক, কার্যনির্বাহী সদস্য মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাছান মাহমুদ, ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সভাপতি আবু আহমেদ মন্নাফী, উত্তরের সভাপতি শেখ বজলুর রহমান।