অগ্রসর রিপোর্ট : আন্দোলনকারীদের দাবি প্রত্যাখ্যান করে থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী প্রাউত চান-ওচা পদত্যাগ করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন। এদিকে বিক্ষোভকারীরা বলছেন, জরুরি অবস্থা উপেক্ষা করে তারা আন্দোলন চালিয়ে যাবেন। খবর আল-জাজিরা, বিবিসি, রয়টার্সের।
বিক্ষোভের মুখে শুক্রবার (১৬ অক্টোবর) মন্ত্রীদের নিয়ে বৈঠকে বসেন প্রধানমন্ত্রী প্রাউত। বৈঠকে তিনি জানান, প্রয়োজনে সরকার তার শক্তি প্রয়োগে দ্বিধা করবে না। তিনি বলেন, ‘আমি পদত্যাগ করছি না। সরকার অবশ্যই জরুরি অবস্থায় ক্ষমতা ব্যবহার করবে। বর্তমান অবস্থা সহিংস হয়ে পড়ায় আমাদের সিদ্ধান্ত নিতে হবে।’
থাইল্যান্ডে জুলাই মাস থেকে ছাত্রদের নেতৃত্বে বর্তমান আন্দোলন চলছে। প্রধানমন্ত্রী প্রাউত চান-ওচার পদত্যাগ, সংবিধান সংশোধন ও রাজা মহা ভাজিরালংকর্নের ক্ষমতা সীমিত করার দাবি বিক্ষোভকারীদের।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে বৃহস্পতিবার (১৫ অক্টোবর) জরুরি অবস্থা ঘোষণা করে থাই সরকার। চারজনের বেশি আন্দোলনকারীকে একসঙ্গে জড়ো না হতে নির্দেশনা দেয়া হয়।
এদিকে বিক্ষোভকালে গ্রেপ্তার হয়েছেন আন্দোলনের তিন নেতা আইনজীবী অ্যানন নাম্পা, ছাত্র অধিকারকর্মী পারিত চিওয়ার্ক ও পানুসুয়াসহ অন্তত ২০ জন। তবে জরুরি অবস্থা উপেক্ষা করে হাজার হাজার বিক্ষোভকারী ব্যাংককের রাজপথ, শপিংমল ও হোটেলগুলোতে জমায়েত হন।
এর আগে বুধবার সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা যায় রানি সুতিদা ও রাজপুত্র দীপাংকর রাসমিজোতসি বিক্ষোভের মধ্য দিয়ে একটি গাড়িতে করে যাচ্ছেন। তাদের ঘিরে রেখেছে পুলিশ। আন্দোলনকারীরা এ সময় তাদের দাবি জানাতে থাকেন ও থ্রি ফিঙ্গার স্যালুট প্রদর্শন করেন।
এ ঘটনায় রানির প্রতি সহিংসতা চেষ্টার অভিযোগে দুজনের বিরুদ্ধে মামলা হতে পারে বলে জানিয়েছে পুলিশ। থাই ক্রিমিনাল কোডের ১১০ ধারা মোতাবেক এ ধরনের অন্যায়ের শাস্তি ১৬ বছর থেকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড। রাজপরিবারের কোনো সদস্যের জীবন হুমকির মুখে পড়লে মৃত্যুদণ্ডও হতে পারে অভিযুক্তের।
২০১৪ সালে সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতায় আসেন সাবেক সেনাপ্রধান প্রাউত চান-ওচা। তার বিরুদ্ধে রয়েছে বিরোধীদের দমনের অভিযোগ। চলতি বছরের শুরুতে দ্য ফিউচার ফরোয়ার্ড পার্টিকে (এফএফপি) নিষিদ্ধ করার পর আন্দোলন শুরু হয়। তরুণদের মধ্যে ব্যাপক জনপ্রিয় এই দল ২০১৯ সালের নির্বাচনে থাই পার্লামেন্টে তৃতীয় সর্বোচ্চ আসন পেয়েছে।
এ ছাড়া, জুনে গুম হন কম্বোডিয়ায় নির্বাসিত গণতন্ত্রপন্থী আন্দোলনকর্মী ওয়ানচেলার্ম সাতাসিত। থাইল্যান্ডের সরকার এই ঘটনায়ও জড়িত বলে বিক্ষোভকারীদের ধারণা। জুলাই থেকে ছাত্ররা আন্দোলনকে সমর্থন জানিয়ে রাজপথে নামেন।