তওবার সহজ পদ্ধতি হচ্ছে, আপনি যে অপরাধ করেছেন, তার জন্য আল্লাহতায়ালার কাছে অনুতপ্ত হওয়া। নিজের অপরাধবোধ যদি সত্যিকার অর্থে জাগ্রত হয়, তাহলে তা স্বীকার করা।
এটা নবী করিম (সা.)-এর একটি হাদিসের শিক্ষা। হাদিসটি সনদের দিক থেকে গ্রহণযোগ্য।
ওই হাদিসে বলা হয়েছে, ‘তওবা হচ্ছে মূলত প্রকৃত অনুতপ্ত হওয়া। সত্যিকার অপরাধবোধ যদি আপনার মধ্যে জাগ্রত না হয়, তাহলে তো আসলে এখান থেকে আপনি প্রত্যাবর্তন করতে পারবেন না। শুধু মৌখিক তওবার কোনো ফজিলত নেই। তাই আপনার অন্তরের মধ্যে প্রথমে সত্যিকার অপরাধবোধ জাগ্রত হতে হবে।
দ্বিতীয়ত হচ্ছে, ওই সব অপরাধ বা গোনাহ থেকে নিজেকে পরিপূর্ণরূপে বিরত রাখতে হবে। নির্দিষ্ট এই অপরাধ থেকে নিজেকে বিরত রাখাই হচ্ছে প্রকৃত তওবা।
তৃতীয়ত হচ্ছে, অপরাধের স্বীকৃতি দিয়ে আপনি মৌখিকভাবে আল্লাহতায়ালার কাছে ইস্তেগফার ও ক্ষমা প্রার্থনা করবেন।
চতুর্থত হচ্ছে, ওই অপরাধের জন্য আপনার যে ত্রুটি হয়েছে, তা পূরণের জন্য আপনি বেশি বেশি ভালো কাজ করবেন।
পঞ্চমত সব ওলামায়ে কেরামের ঐকমত্যে এটি সাব্যস্ত হয়েছে যে, যদি আপনার গোনাহের জন্য কারও হক বা অধিকার নষ্ট হয়, তাহলে সেই হকটুকু তার কাছে পৌঁছে দেবেন বা দেওয়ার চেষ্টা করবেন।
এটাই হচ্ছে মূল ও প্রকৃত তওবা। বর্ণিত কাজগুলো যদি কেউ পালন করেন, তাহলে বুঝা যাবে- তিনি তওবা করেছেন।
কিন্তু কেউ যদি এ কাজগুলো না করে, মুখে তওবা তওবা জপ করেন, তাহলে তার এ কাজ তওবা বলে গণ্য হবে না। এটি হবে মৌখিক তওবা, মৌখিক বা লৌকিক তওবা ইসলামে গ্রহণযোগ্য নয়।
তওবা ও ইস্তেগফার আল্লাহতায়ালার অতি পছন্দের একটি ইবাদত। এ কারণে প্রিয় নবী হজরত মুহাম্মদ (সা.) নিষ্পাপ হওয়া সত্ত্বেও প্রতিদিন ৭০ থেকে ১০০ বার তওবা ও ইস্তেগফার করতেন।
অনুরূপভাবে ইমানের পর নামাজ প্রধান ও সর্বশ্রেষ্ঠ ইবাদত হওয়া সত্ত্বেও নামাজ আদায়ের পর তিনবার ইস্তেগফার পড়া সুন্নত। অর্থাৎ ইস্তেগফার শুধু পাপের পরে নয়, ইবাদতের পরেও করা হয়।
যেমন হজের পর ইস্তেগফার করা বিষয়ে কোরআনে কারিমে উল্লেখ আছে, ‘(হজ শেষে) তারপর তোমরা বেরিয়ে পড়ো, যেভাবে মানুষ চলে যাচ্ছে এবং আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাও। নিশ্চয়ই আল্লাহতায়ালা ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু। ’ -সূরা বাকারা ১৯৯