অগ্রসর রিপোর্ট : আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) ৪৭০ কোটি ডলারের ঋণ কর্মসূচির আওতায় বাংলাদেশ চতুর্থ ও পঞ্চম কিস্তির মোট ২৩৯ কোটি ডলার পেতে যাচ্ছে। এ অর্থ ছাড়ের শর্ত পর্যালোচনায় আইএমএফের একটি প্রতিনিধি দল ৫ এপ্রিল ঢাকায় আসবে এবং ৬ এপ্রিল থেকে দুই সপ্তাহব্যাপী বৈঠক করবে।
অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, প্রতিনিধি দলটি অর্থ বিভাগ, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর), বিদ্যুৎ বিভাগসহ বিভিন্ন সরকারি সংস্থার সঙ্গে আলোচনা করবে। সফরের শেষ দিনে, ১৭ এপ্রিল, অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদের সঙ্গে বৈঠক শেষে প্রেস ব্রিফিং করবে আইএমএফ।
২০২৩ সালের জানুয়ারিতে বাংলাদেশ আইএমএফ ঋণ কর্মসূচি শুরু করে এবং ইতোমধ্যে তিন কিস্তিতে ২৩১ কোটি ডলার পেয়েছে। তবে চতুর্থ কিস্তির অর্থ ছাড়ের শর্ত বাস্তবায়নে কিছু জটিলতা দেখা দিয়েছে। আইএমএফের মূল শর্তগুলোর মধ্যে রয়েছে—
🔹 মুদ্রা বিনিময় হার বাজারভিত্তিক করা
🔹 জিডিপির ০.৫ শতাংশ হারে রাজস্ব আদায় বৃদ্ধি
🔹 এনবিআরের রাজস্ব নীতি থেকে রাজস্ব প্রশাসনকে পৃথক করা
বাংলাদেশ ইতোমধ্যে মুদ্রা বিনিময় হার নিয়ন্ত্রণে ক্রলিং পেগ পদ্ধতি অনুসরণ করছে, তবে রাজস্ব আদায় ও প্রশাসন সংস্কারে পর্যাপ্ত অগ্রগতি হয়নি।
এদিকে সম্প্রতি অর্থনীতিবিষয়ক সাংবাদিকদের সংগঠন ইআরএফের সঙ্গে এক প্রাক-বাজেট আলোচনায় অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, “বাজেট সহায়তার জন্যই আইএমএফের ঋণ লাগবে। এ কারণেই বাংলাদেশ সরকার ও আইএমএফ যৌথভাবে ২০২৪-২৫ অর্থবছরের জন্য নির্ধারিত দুটি কিস্তি একসঙ্গে ছাড়ের বিষয়ে সম্মত হয়েছে।”
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, আইএমএফের ঋণের দুই কিস্তির অর্থ একসঙ্গে পেতে বাংলাদেশের সামনে মোটাদাগে তিনটি বাধা রয়েছে। এগুলো হলো মুদ্রা বিনিময় হার বাজারভিত্তিক করা, মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) শূন্য দশমিক ৫ শতাংশ হারে বাড়তি রাজস্ব আদায় ও এনবিআরের রাজস্ব নীতি থেকে রাজস্ব প্রশাসনকে আলাদা করা।
বাংলাদেশের পক্ষ থেকে আইএমএফকে জানানো হয়েছে, এসব শর্ত বাস্তবায়ন করা হবে। তবে বাংলাদেশ ব্যাংক ও অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, রাজস্ব নীতি থেকে রাজস্ব প্রশাসনকে আলাদা করার পদক্ষেপ ছাড়া বাকি দুটির বিষয়ে তেমন অগ্রগতি নেই।
তবে ক্রলিং পেগ পদ্ধতিতে বিনিময় হার নির্ধারণ করা হচ্ছে। যার কারণে হঠাৎ ডলারের দাম খুব বেশি বেড়ে যাওয়ার সুযোগ নেই। এ পদ্ধতিতে ডলারের দাম ১২২ টাকায় স্থিতিশীল আছে।