ঝিকরগাছা (যশোর) প্রতিনিধি : ঝিকরগাছা উপজেলার ৬নং ঝিকরগাছা ইউনিয়নের আওতায় পায়রাডাঙ্গা গ্রামের ট্রাক ড্রাইভার তাহের ওরফে বেড়ে তাহের (৭৫) নামের এক বৃদ্ধ নিজ স্ত্রী ও মেয়ের হাতে খুন হয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, তাহের প্রথমে একটা বিবাহ করেন বিবাহের পরে ৪টি কন্যা সন্তান হওয়ার পরে তার স্ত্রী রোগান্তে হয়ে মারা যায়। পরবর্তীতে স্ত্রীর বাড়ির লোকজন মেয়েদের মানুষ করার উপর নজর দিয়ে তাহের কে আবারও বিবাহ করতে বাধ্য করানো হয় যশোরের মনিরামপুর উপজেলার খেদাপাড়া ইউনিয়নের গোয়ালদাহ গ্রামের মৃত, নুর আলী বিশ্বাসের মেয়ে সাজেদা (৪৫)-এর সাথে।
এই বিবাহ হওয়ার পরে তাদের আবারও দুইটি মেয়ে সন্তান জন্ম নেন। ১ম স্ত্রীর ৪ মেয়ে ও ২য় স্ত্রীর ১ মেয়ে বিবাহ হয়ে গেছে তারা বর্তমানে স্বামীর বাড়িতে রয়েছে। বেশ কিছুদিন পূর্বে ১ম স্ত্রীর বড় ৩ মেয়ে তার পিতাকে বলেন যে, আব্বা আপনার যে, ১৬ শতক জমি রয়েছে। আমাদের তিন বোনের অবস্থা আল্লাহর রহমতে অনেক ভালো তাই আমাদেরকে কোন জমি দেওয়ার দরকার নেই আমাদের ছোট বোনটা অবস্থা তো বালো না যেহেতু, সেহেতু আমাদের ছোট বোনটাকে আপনি ৪ শকত জমি লিখে দেন। আর বাদবাকি জমি আপনার থাক।
সময়ের পরিপেক্ষিতে ১৫-২০ দিন পূর্বে তাহের তার ১৬ শতক জমির থেকে ৪ শকত জমি প্রথম স্ত্রীর ছোট মেয়েকে লিখে দেন। এটা থেকেই ২য় স্ত্রী সাজেদা ও তার ছোট মেয়ে টুম্পা (১৭) এই মা-মেয়ের মধ্যে ক্ষোভ সৃষ্টি হয়। যার কারণে সোমবার রাতে সাজেদা তার চোট ভাই মুজিবার কে ফোন করে ডেকে নিয়ে মা, মেয়ে ও শালা মুজিবর এক হয়ে ঘরের খাটের উপর তাহেরের গলায় রশি আকৃতি কোন বস্তু পেচিয়ে শ্বাসরুদ্ধ করে হত্যা করেছে বলে এলাকাবাসী ধারণা করেছেন। যার কারণে খাটের বিছানার উপর তাহেরের রক্ত দেখতে পাওয়া যায়।
স্ত্রী ও মেয়ের বক্তব্যে হল, সে ভোরে ঘুম থেকে উঠে হাটাহাটি করছিল এবং উঠানে থাকা জামরুল তলায় চেয়ারের উপর বসতে গিয়ে মাটিতে পড়ে মারা গেছে। এলাকায় এই কথা প্রচার করে তাহেরের মৃত দেহ গোসলের জন্য জন্য নিয়ে গেলে এলাকার লাশ ধোয়ানো ব্যক্তিরা হঠাৎ তার গলার দিকে তাকিয়ে দেখে যে, গলাতে কালো দাগ তারা বুঝতে পারে যে, তাহের সৃষ্টিকর্তার ডাকে সাড়া দেয়নি বরং তাহেরর উপর অত্যাচার করে গলায় রশি আকৃতি কোন বস্তু পেচিয়ে শ্বাসরুদ্ধ করে হত্যা করা হয়েছে। তারা এটা বুঝে লাশটিকে গোসল না করিয়ে পুলিশকে খবর দেন। পুলিশ ঘটনা স্থলে গিয়ে ঘটনা শুনে লাশটিকে ময়না তদন্তের জন্য নিয়ে যায়। ঘটনার বিষয়ে এলাকাবাসীর মধ্যে আতংক বিরাজ করছে। ঘটনার সাথে জড়িত কাউকে পুলিশ গ্রেফতার করেনি।
ঘটনার উপর ভিত্তি করে থানায় অপমৃত্যুর মামলা হয়েছে। এলাকাবাসীর মনের মধ্যে একটি কথাই উকি দিচ্ছে, আসামিরা কি এই হত্যা ঘটনা থেকে পার পেরে যাবে? না তাদের উপর হত্যা কান্ডের সঠিক বিচার পাওয়া যাবে?
ঘটনা সর্ম্পকে থানার ওসি শেখ আবু সালেহ মাসুদ করিমের নিকট যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, ঘটনার বিষয়ে আমি শুনেছি। যদি মৃত ব্যক্তির পক্ষে কেউ অভিযোগ করেন, তাহলে এই ঘটনার বিষয়ে পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে। আর যদি ময়না তদন্তে হত্যা করেছে বলে জানা যায় তাহলে ময়না তদন্তের উপর ভিত্তি করে আমরা পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।