স্টাফ রিপোর্টার : জ্যাকেট কেনার টাকার জন্য বন্ধুর হাতে খুন হয়েছে স্কুলছাত্র আলিফ আহম্মেদ স্বপ্ন (১৪)। নিখোঁজ হওয়ার চার দিন পর বন্ধু ও তার মায়ের স্বীকারোক্তিতে সেপটিক ট্যাংক থেকে লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় বন্ধু রিফাত ও তার মা মোর্শেদা বেগমকে পুলিশ আটক করেছে।
শহরের ভেলাকোপার হানাগরপাড়ার নার্স মোর্শেদা বেগমের বাড়ি থেকে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় লাশটি উদ্ধার করা হয়।
নিহত আলিফ আহম্মেদ স্বপ্ন (১৪) শহরের ব্যবসায়ী সুলতান আহম্মেদের একমাত্র ছেলে।
সদর থানার অফিসার ইনচার্জ মুর্শেদুল করিম মোহাম্মদ এতেশাম জানান, সোমবার সকালে আলিফ আহম্মেদ স্বপ্ন মা ফরিদা ইয়াসমিনকে নাশতা দিতে বলে তিনতলা থেকে নিচে নামে। এ সময় মাকে বলে বন্ধু রিফাতের সঙ্গে কথা বলে আসছি। এরপর থেকে সে নিখোঁজ। তার ব্যবহৃত মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া যায়। অনেক খোঁজাখুঁজির পর তাকে না পেয়ে একটি সাধারণ ডায়েরি করা হয়। পুলিশের সন্দেহ হলে মা মোর্শেদা ও ছেলে রিফাতকে বুধবার রাতে থানায় এনে জিজ্ঞাসাবাদ করে ছেড়ে দেয়।
তিনি আরও জানান, বৃহস্পতিবার সকালে রিফাত আত্মগোপন করে। মোর্শেদা বেগম ফোন বন্ধ রাখে। বিকেলে পুলিশ মোর্শেদা বেগম ও রিফাতকে আটক করে। জিজ্ঞাসাবাদের এক পর্যায়ে স্বপ্নকে খুনের ঘটনা স্বীকার করে তারা। তাদের দেওয়া স্বীকারোক্তিতে বাসার সেপটিক ট্যাংক ভেঙে স্বপ্নের গলিত লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। পুলিশ সুপার মোহাম্মদ তবারক উল্লাহ, সহকারী পুলিশ সুপার মাসুদ আলম ও ইউএনও আমিনুল ইসলাম উপস্থিত থেকে লাশ উদ্ধার ও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করেন।
সহকারী পুলিশ সুপার (সার্কেল-এ) মাসুদ আলম জানান, অভিযুক্ত মোশের্দা ও রিফাত ধুরন্ধর প্রকৃতির। রিফাত তার নাগেশ^রীর বন্ধু আকাশের সহায়তায় এ হত্যার ঘটনা ঘটায়।
জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, আকাশ নাগেশ^রী থেকে কুড়িগ্রামে আসে একটি জ্যাকেট কিনতে। কিন্তু টাকা নেই। তখন রিফাতসহ বুদ্ধি করে স্বপ্নকে শিকার বানাতে। রিফাত প্রথমে মোবাইলে স্বপ্নকে ডেকে আনে। ফাঁকা বাড়িতে দুবন্ধু স্বপ্নকে হাত-পা বেঁধে ফেলে। তাদের মূল তাগের্ট ছিল মুক্তিপণ আদায় করা। কিন্তু পাঁচ ফুট ১০ ইঞ্চি লম্বা স্বপ্নকে বাগে আতে পারছি না। চিৎকার-চেঁচামেছি শুরু করলে তারা ভয় পেয়ে যায়। এক পর্যায়ে মাপলার দিয়ে গলা পেঁচিয়ে ধরলে স্বপ্নের মৃত্যু হয়। পরে অন্যদের সহায়তায় লাশ গুম করতে সেপটিক ট্যাংকে ঢুকিয়ে দেয়।
আলিফ আহম্মেদ স্বপ্ন কুড়িগ্রাম কাল্টেরেট স্কুল এন্ড কলেজের অষ্টম শ্রেণীর মেধাবী ছাত্র ছিল। আর রিফাত ছিল কুড়িগ্রাম রিভার ভিউ উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্র। দুজনে ছিল ঘনিষ্ঠ বন্ধু।