অগ্রসর রিপোর্ট : আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, জীবনের দ্বিতীয় ইনিংসে বড় চ্যালেঞ্জ হলো যানজট নিরসন ও পরিবহনে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনা।
তিনি বলেন, ‘জীবনের প্রথম ইনিংস শেষ করেছি। ইনশাল্লাহ, এবার দ্বিতীয় ইনিংস খেলবো। দ্বিতীয় ইনিংসের বড় চ্যালেঞ্জ হচ্ছে, যানজট নিরসন ও পরিবহনে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনা। আশা করি, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে তা আনতে পারবো।’
ওবায়দুল কাদের দুই মাস ১৬ দিন পর আজ সকালে সচিবালয়ে নিজ মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে কথা বলেন।
ওবায়দুল কাদের বলেন, এখন থেকে ২ মাস ১৬ দিন আগে আপনাদের (সাংবাদিক) সঙ্গে কথা বলেছিলাম। তারপর দীর্ঘদিন অনুপস্থিত ছিলাম। হয়তো সারাজীবনের জন্যই অনুপস্থিত থাকতে পারতাম। কিন্তু মহান আল্লাহর অশেষ দয়া, সকলের অশেষ দোয়া ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অশেষ আন্তরিকতা ও বিশেষ প্রয়াসে আমি ফিরে এসেছি।
নিজ মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে তিনি বলেন, আমার অনুপস্থিতিতেও আপনারা কাজে কোনো ঘাটতি তৈরি করেননি। এটা আমি সিঙ্গাপুরে থাকা অবস্থায়ই প্রধানমন্ত্রীর কাছে শুনেছি। তিনি আমায় বলেছেন, তোমার মন্ত্রণালয় ঠিকঠাক মতো চলেছে।
মহাসড়কের অবস্থার কথা তুলে কাদের বলেন, আমাদের প্রধান সমস্যা ঢাকা-টাঙ্গাইল ও ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক। তবে এবার ঈদে মানুষ ভোগান্তি পড়বে না এটা বলতে পারি।
সেতুমন্ত্রী বলেন, ঢাকা-টাঙ্গাইল সড়কে ৪টি আন্ডার পাসের কাজ শেষ হবে ঈদের আগেই। এতে ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে ঈদে ঘরমুখো মানুষের কষ্ট অনেকটা কমে যাবে।
তিনি বলেন, আগামী ২৫ মে মেঘনা-গোমতি সেতুর উদ্বোধন হবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গণভবন থেকে টেলি কনফারেন্সের মাধ্যমে মেঘনা এবং গোমতি সেতুর উদ্বোধন করবেন। এ সেতু দু’টি চালু হলে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে মানুষের দুর্ভোগ অনেকাংশে কমে যাবে।
পরিবহন খাতের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, বিআরটিসির বাস ও ট্রাক চলে আসছে। এতে গণপরিবহনের ঘাটতি পূরণ হবে।
আগামীকাল থেকে বিআরটিসির ঈদ-উল-ফিতরের অগ্রিম টিকিট বিক্রি শুরু হবে বলে উল্লেখ করে সড়ক পরিবহন মন্ত্রী কাদের বলেন, এখন আর বাসের সংকট থাকবে না। গণপরিবহনের শূন্যতা পূরণ করতে পারব।
নিজের চিকিৎসার বিষয়ে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী বলেন, আগামী ১৬ জুলাই চেকআপ করাতে সিঙ্গাপুরে যাবো। ভারি কাজ করতে চিকিৎসকেরা নিষেধ করেছেন। দুইমাস পরপর চেকআপ করাতে হবে।
তিনি বলেন, ‘আগের মতো রাস্তায়-রাস্তায় রোদ-বৃষ্টি একাকার করে কাজ করতে পারবো না। তবে ধীরে-ধীরে দুই-তিন মাস পর আগের মতো সুস্থ হয়ে উঠবো, ইনশাল্লাহ।’
তিনি বলেন, আগামীকাল আমি পার্টি অফিসে যাবো। দুর্বলতা আছে, তবে মানসিকভাবে আমি পুরোপুরি প্রস্তুত। শারীরিকভাবেও সুস্থ আছি। এক দেড় মাস পর আগের মতো সমস্ত কাজ করতে পারব।
আওয়ামী লীগের জাতীয় সম্মেলনের বিষয়ে কাদের বলেন, আওয়ামী লীগের কাউন্সিল যথাসময়ে অনুষ্ঠিত হবে। এই লক্ষ্য নিয়ে টিম ওয়ার্কের মাধ্যমে আমরা এগিয়ে যাচ্ছি।
এ বিষয়ে তিনি বলেন, আমার অনুপস্থিতিতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই টিম ওয়ার্কে প্রয়োজনীয় নির্দেশ প্রদান করেছেন। সম্মেলন অনুষ্ঠানের কার্যক্রমে কোন সমস্যা হয় নি।
এর আগে সকাল সোয়া ১০টায় সচিবালয়ে নিজ মন্ত্রণালয়ে যান ওবায়দুল কাদের। কার্যালয়ে গিয়ে প্রথমেই রুটিন কাজ করেন সেতুমন্ত্রী।
পরে পৌনে ১১টায় নিজ কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন চলমান উন্নয়ন প্রকল্প বিষয়ক সভায় যোগ দেন ওবায়দুল কাদের।
সিঙ্গাপুরে দীর্ঘদিন চিকিৎসা শেষে গত বুধবার বিকেলে দেশে ফেরেন তিনি।